কলকাতাFriday, 17 September 2021
  1. আজকের শিরোনাম
  2. ইতিহাস-ঐতিহ্য
  3. ক্রাইম
  4. খেলা
  5. জেলা
  6. দেশ
  7. ধর্ম ও দর্শন
  8. পর্যটন
  9. ফোটো গ্যালারি
  10. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  11. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
  12. বিনোদন
  13. বিশ্ব-জাহান
  14. ব্লগ
  15. ভ্রমণ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

হিন্দুস্থান কখনোই পাকিস্তান হবে না, আমি আপনাদের রক্ষা করবঃ মমতা

mtik
September 17, 2021 2:03 pm
Link Copied!

পুবের কলম প্রতিবেদক;­ হিন্দুস্থান কখনোই পাকিস্তান হবে না। ওরা (পড়ুন বিজেপি) নন্দীগ্রামকেও পাকিস্তান বলেছিল। ওনারা এখন বলছে ভবানীপুর পাকিস্তান হয়ে যাবে। বৃহস্পতিবার ভবানীপুরে নির্বাচনী জনসংযোগে বেরিয়ে ঠিক এই ভাষায় বিজেপিকে এক হাত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষকে অভয় দিলেন–  আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন–  আমি আপনাদের রক্ষা করব।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেডিস পার্কে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেখানে সাধারণ মানুষদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন– বিজেপি আমাদের রাজ্যে বিভেদের রাজনীতি করছে। কিন্তু বাংলা সব ধর্ম বর্ণ সমস্ত সম্প্রদায়ের। এই কথা বলতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন– ওরা নন্দীগ্রামকে পাকিস্তান বলেছিল। এখন বলছে ভবানীপুর পাকিস্তান হবে। আমি আপনাদের রক্ষা করব। মমতার বক্তব্য– আমি মন্দিরে যাই। মসজিদে যাই গুরদোয়ারাতেও যাই। আমি সব ধর্মকে সম্মান করি। আমি চাই এখানে সব ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের ধর্মীয় আচার আচরণ পালন করুক। বিজেপি এই নিয়েই রাজনীতি করছে। আমি চাই মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের ধর্মীয় আচরণ করতে পারুক।

এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন– ভারতকে কখনও তালিবান মানসিকতার মানুষদের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না। আগামী দিনে বাংলাই দেশকে রক্ষা করবে। উল্লেখ্য– ক’দিন আগে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ভবানীপুরে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন– তৃণমূল কংগ্রেস ভবানীপুরকে খিদিরপুরের মতো করে তৈরি করতে চায়। মনে করা হচ্ছে এ দিন নাম না করে তারই সমালোচনা করলেন মমতা। স্পষ্টভাষায় মমতা জানিয়ে দেন– যে কায়দায় বিজেপি রাজনীতি করছে তা আমার পছন্দ নয়। এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন– বাংলায় বিভাজনের কোনও জায়গা নেই। এখানে আমরা সবাইকে নিয়েই চলি– সব ধর্মকে সম্মান করি। হিন্দুস্তান আরও ভালো হিন্দুস্তান হবে। হিন্দুস্তান কখনোই পাকিস্তান হবে না। আগামীতে দেশকে দিশা দেখাবে বাংলা। এ দিন কেন্দ্রের মোদি সরকারের কড়া সমালোচনা করেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভানেত্রী। তিনি বলেন– মোদি সরকার দেশটাকে বিক্রি করে দিচ্ছে। রাষ্ট্রায়াত্ত সংস্থাগুলি তারা বেসরকারিকরণ করে দিচ্ছে। এমনকী করোনার সময় অতিমারি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে গঙ্গার মৃতদেহ ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মৃতদেহকেও সঠিকভাবে সম্মান জানায়নি।

তিনি বলেন– আমি মসজিদে গেলে ওরা কটাক্ষ করেন। তবে আমি শুধু মসজিদে যাই না– মন্দির– মসজিদ– গির্জায় যাই। ধর্ম যার যার একার। তবে উৎসব কিন্তু সবার। তিনি বলেন– আমাদের বাংলা রবীন্দ্রনাথ নজরুলের বাংলা– রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দের বাংলা। তারা যত মত তত পথের কথা বলেছেন। ফলে আমাদের সেই সমস্ত বিষয় মাথায় রাখতে হবে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এ দিন অভিযোগ করেছেন– মোদি সরকারের হাতে দেশের অর্থনীতি বিপন্ন। রাষ্ট্রায়াত্ত সংস্থাগুলিকে নির্বিচারে বেচে দেওয়া হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের দুর্দশা বাড়ছে। পেট্রোল ডিজেল রান্নার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি হচ্ছে। কোনও কিছুতেই যেন আর নিয়ন্ত্রণ নেই। এখানে এ দিন প্রায় আধঘণ্টা ধরে বক্তব্য রাখেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্ত বক্তব্যের মধ্যে সম্প্রীতি সর্বাধিক গুরুত্ব পেয়েছে। একইসঙ্গে তিনি বৈচিত্র্যময় দেশে সকলকে নিয়ে চলার কথা বলেন। পাশাপাশি– বিজেপি যে সমাজে ধর্মীয় ভেদাভেদের রাজনীতি করতে চাইছে তার বিরুদ্ধে সরব হন তিনি।

উল্লেখ্য– লেডিস পার্কের এই সভার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভবানীপুরের লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দিরে যান। এরপর সেখান থেকে তিনি যান দোল মন্দিরে। সেখানেও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। নামে নির্বাচনী প্রচার হলেও অধিকাংশ সময়টাই তিনি এ দিন জনসংযোগের কাজ করেছেন।

এ দিন লেডিস পার্কে ‘ঘরের মেয়ে’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বার্তা বিনিময়ের পর যথেষ্টই উচ্ছ্বাস দেখতে পাওয়া যায় হিন্দিভাষী মানুষদের মধ্যে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেরিয়ে যাওয়ার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তাঁরা বলেন– কোনও বাইরের শক্তি ভবানীপুরে জিততে পারবে না। ভবানীপুরের মানুষকে ধর্ম– বর্ণের বিভাজনে বিভক্ত করা যাবে না। তাঁদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে আস্থা আছে। তিনি রাজ্যের জন্য যেভাবে কাজ করছেন তাতে তাঁরা খুশি। ভবানীপুরের মানুষের তাঁর কাছ থেকে আর কিছুই চাই না। তাঁদের বিশ্বাস–  মুখ্যমন্ত্রী অবশ্যই জিতবেন। বিরোধীরা কিছুই করতে পারবে না।