কিরেন রিজিজু মদিনা এবং মসজিদে কুবা ও মসজিদে কিবলাতায়েন পরিদর্শন করেন
মদিনা: সউদি আরবের সঙ্গে ২০২৫ হজ চুক্তি সম্পাদনের জন্য ভারতের সংংখ্যালঘু দফতরের মন্ত্রী কিরেন রিজিজু পাঁচ দিনের সফরে শনিবার জেদ্দা পৌঁছেছেন। হজযাত্রী নিয়ে প্রতিবছর দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সোমবার সউদি আরবের হজ ও উমরাহ দফতরের মন্ত্রী তওফিক বিন ফয়জান আল রাবিয়ার সঙ্গে বৈঠকে কিরেন রিজিজু দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত করেছেন। তবে ভারতের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ১০ হাজার হজযাত্রী কোটার দাবি নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু সেই দাবি পূরণ হয়নি। গত বছরের সেই ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটা বহাল রইল এ বছরও। এ বছরেও সরকারি ও বেসরকারি হজযাত্রী কোটা ৭০:৩০ থাকছে অর্থাৎ ১,৭৫,০২৫ জনের মধ্যে ৩০ শতাংশ অর্থাৎ ৫২ হাজার ৫০৭ জন প্রাইভেট ট্যুর অপারেটরদের মাধ্যমে হজে যেতে পারবেন।
সোমবার এই চুক্তি স্বাক্ষরের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ভারত সরকারও হজযাত্রীদের সফর আরও আরামদায়ক ও সুরক্ষিত করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিরেন রিজিজুও বলেছেন, হজযাত্রীদের সর্বোত্তম সেবা করার জন্য আমরা প্রস্তুত থাকব। দুই মহান দেশের নাগরিকদের মধ্যে সম্পর্ক আরও মধুর হবে এই চুক্তি সম্পাদনের মধ্যে দিয়ে। তিনি বলেন, সউদি আরবে হজযাত্রীদের সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বিমানবন্দরে ভারতীয়দের জন্য টার্মিনালও দেখেছেন তিনি। ভারতীয়দের জন্য অফিসে পরিষেবা আরও বাড়ানোর কথা বলেছেন। সউদি আরবের পরিবহণমন্ত্রী সালেহ আল জাসসারের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। জেদ্দা বিমানবন্দর থেকে ভারতীয় হজযাত্রীরা হাইস্পিড রেল পরিষেবা যাতে বেশি পায় সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রী হাইস্পিড ট্রেনে মদিনা সফর করেন। এ ছাড়াও ইসলামের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত দুই বিখ্যাত মসজিদ মসজিদে কুবা এবং মসজিদে কিবলাতায়েন পরিদর্শন করেন। কিরেন রিজিজু নিজের এক্স হ্যান্ডেলে সউদি সফরের কিছু ছবিও পোস্ট করেছেন। সেই ছবিতে রয়েছে মদিনা শরীফের সামনে রাস্তায় দাঁড়ানো অবস্থায় কিরেন রিজিজু আর পিছনে দেখা যাচ্ছে মদিনার দু’টি উঁচু মিনার। এ ছাড়া তিনি সউদি সরকার আয়োজিত হজ কনফারেন্সে যোগ দিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, ইন্দোনেশিয়ার ২ লক্ষ ২১ হাজার কোটার পরই ভারত দ্বিতীয় স্থানে হজযাত্রীর সংখ্যায়। সউদি সরকারের পক্ষ থেকে মদিনার আশপাশে বিদেশি মেহমানদের ঘুরিয়ে দেখানোর ব্যবস্থা হয়েছিল। এ ছাড়াও মসজিদে কুবা দেখানো হয়। এই মসজিদে আল্লাহ্র নবী হযরত মুহাম্মদ সা.-এর হাতে তৈরি প্রথম মসজিদ। আল্লাহ্র নবী সা. নিজের কাঁধে করে পাথর বহন করেছিলেন এটির নির্মাণের সময়। হাদিসে আছে, এই মসজিদে দুই রাকাত নামায পড়লে একটি ওমরাহ পালনের সমান সওয়াব (পুণ্য অর্জন) হবে। পবিত্র কুরআনেও এই মসজিদের উল্লেখ রয়েছে। জীবন্ত সেই ইতিহাস স্বচক্ষে দেখলেন মোদি সরকারের মন্ত্রী। এরপর মসজিদে কিবলাতায়েন অর্থাৎ, দুই কেবলার মসজিদ নামে বিখ্যাত মসজিদটিও দেখানো হয়। নামায চলাকালীন আল্লাহ্র পক্ষ থেকে ঐশী নির্দেশ আসে নবী সা.-এর কাছে। সেইমতো কিবলা বা নামায পড়ার দিক পরিবর্তন হলে ইমাম সাহেব জেরুসালেমের দিক থেকে কাবা শরীফের দিকে ঘুরে নামায শেষ করেন। সেজন্য এই মসজিদকে দুই কেবলার মসজিদ বলা হয়। এই ঐতিহাসিক মসজিদটি পরিদর্শন করার কথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজুর।