পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: বিরোধীদের দাবি মেনে এবার স্বাস্থ্য বিমা ও জীবন বিমার প্রিমিয়াম থেকে উঠতে চলেছে জিএসটি। সম্প্রতি মূল্যবৃদ্ধির জেরে গর্জে উঠে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বিমায় জিএসটি প্রত্যাহারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি’কে চিঠি দিয়েছিলেন। চিঠি প্রেরণের কয়েক মাসের মধ্যেই তা কার্যকর করার পথে কেন্দ্র সরকার।
তবে পুরো টা না। নির্দিষ্ট সময়সীমার জন্য অর্থাৎ টার্ম ভিত্তিক জীবন বিমার প্রিমিয়ামের উপর জিএসটি সম্পূর্ণ মকুব হতে চলেছে। প্রবীণ বা সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য স্বাস্থ্যবিমার ক্ষেত্রেও তা আর লাগবে না। তবে এছাড়া যে কোনও স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়ামের ক্ষেত্রে একাংশে মকুব হবে ধার্য জিএসটি। শনিবার দিল্লিতে জিএসটি সংক্রান্ত মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠকে এব্যাপারে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিমার কভারেজে আর জিএসটি দিতে হবে না।
ততোধিক হলে পূর্বনির্ধারিত চড়া হারই বজায় থাকবে। অর্থাৎ, ১৮ শতাংশ জিএসটি। তবে প্রবীণ বা সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়ামে এই কর সম্পূর্ণ মকুব হবে। এই প্রস্তাবগুলিই আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে জিএসটি কাউন্সিলের কাছে সুপারিশের আকারে জমা দেবে মন্ত্রিগোষ্ঠী। তারপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে কাউন্সিল।
এদিন জিএসটি কাউন্সিল গঠিত মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে একাধিক পণ্যে জিএসটির হার বদলের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানা গেছে।
জীবন বিমার উপর জিএসটি প্রত্যাহার হলেও একাধিক বিলাসবহুল পণ্যের উপর বাড়ানো হচ্ছে জিএসটির হার । সূত্রের খবর, সেখানে ২৫ হাজারের বেশি মূল্যের হাতঘড়ির করের পরিমাণ বাড়িয়ে ২৮ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আপাতত ২৫ হাজারের বেশি মূল্যের ঘড়িতে ১৮ শতাংশ কর নেওয়া হয়।
READ MORE: Breaking: রাজ্যে ৬ বিধাসভা উপ-নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করল তৃণমূল
অন্যদিকে ১৫ হাজার টাকার বেশি দামি জুতোতেও একই হারে জিএসটি বাড়ানো হবে। অর্থাৎ ওই পণ্যের জিএসটিও ১৮ থেকে বেড়ে ২৮ শতাংশ হতে চলেছে। ২০ লিটার জলের জারের জিএসটি ১৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব রয়েছে। আবার ১০ হাজার টাকার কমদামি বাই সাইকেলের জিএসটিও ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হবে। আসলে সরকার পরিবেশবান্ধব এই বাহনের বিক্রিতে উৎসাহ বাড়াতে চাইছে।
প্রসঙ্গত, জীবন বিমায় জিএসটির প্রতিবাদে এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী চিঠি দিয়েছিলেন কেন্দ্রকে।
এমনটাই তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে। এদিন কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই সোশ্যাল সাইটে পোস্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বিষয়ে অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি। চিঠিটির ছবিও প্রকাশ করেন। তবে মোদির মন্ত্রীসভার সদস্য নীতিন গডকড়ি এই বিষয়ে সরব হয়েছিলেন।
READ MORE:পড়াশোনার পাশাপাশি সমাজসেবাতেও নজির হাশিমিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকাডেমির
শনিবারের জিএসটি সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট বৈঠকে বাংলা থেকে উপস্থিত ছিলেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
সেখানেই সকলের সম্মতিতে জীবনবিমা থেকে ও স্বাস্থ্য বিমা থেকে জিএসটি উঠে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত গ্রহণ হয়েছে যে বয়স্ক নাগরিকদের স্বাস্থ্যবিমায় জিএসটি না থাকাই বাঞ্ছনীয়। সাধারণ মানুষজদের জন্য ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিমায় জিএসটি থাকা উচিত নয়। আর টার্ম জীবন বিমার ক্ষেত্রে জিএসটি থাকা উচিত নয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, জীবন বিমার উপর জিএসটিতে ছাড় দেওয়ার কারণে রাষ্ট্র কোষাগারে চাপ পড়তে পারে।
সেই ঘাটতি পূরণ করতে বেশ কয়েকটি জিনিসে কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারি সূত্রে খবর, এই সিদ্ধান্তগুলি কার্যকর হলে বছরে বাড়তি ২২ হাজার কোটি টাকা কর আদায় সম্ভব হবে।