পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ সুরলোকে মায়া কাটিয়ে এক নাম না জানা পৃথিবীর উদ্দেশে যাত্রা করলেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। শেষযাত্রায় পা মেলালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শামিল হলেন একাধিক বিশিষ্ট মানুষ সহ অগণিত সাধারণ মানুষ।
১৯৩১ সালে যে জীবন চলা শুরু হয়েছিল, গতকাল সেই জীবনদ্বীপ নিভে গেল। গান স্যালুটে গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে জানানো হল অন্তিম বিদায়।
১৫ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার সাড়ে সাতটার সময় কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে জীবনাবসান হয় এই বরেণ্য শিল্পীর। উত্তরবঙ্গ সফর কাটছাঁট করে আজই কলকাতা ফেরেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এসেই রবীন্দ্রসদনে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে শেষশ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে পড়ন্ত বিকেলে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মরদেহ কেওড়াতলা শ্মশানের দিকে যাত্রা করে। চোখের জলে প্রিয় শিল্পীকে বিদায় জানায় সাধারণ মানুষ।
গত ২৬ জানুয়ারি রাত থেকেই হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। ২৭ জানুয়ারি অবস্থার অবনতি হয়। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরেই তড়িঘড়ি হাসপাতালে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গ্রিন করিডর করে এসএসকেএম-এ নিয়ে আসা হয়। সেই সময় তন্দ্রাচ্ছন্ন ছিলেন তিনি। হাসপাতালে তরফে জানা যায়, ফুসফুসে সংক্রমণ রয়েছে, রয়েছে হৃদযন্ত্রের সমস্যাও। এসএসকেএম ভর্তি হওয়ার পর তাঁকে তড়িঘড়ি দেখতে হাসপাতালে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। হাসপাতালে দাঁড়িয়ে তিনি জানান– করোনা আক্রান্ত হওয়ায় তাঁকে অ্যাপোলোতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসএসকেএমে উডবার্ন ইউনিটে একটি বিশেষজ্ঞ টিমও তৈরি করা হয়। চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়কেও আনা হয় সেখানে। সবার সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসা এগোচ্ছিল। চিকিৎসকরা জানান, হার্টে একটা সমস্যা হয়েছে। পরে জানা যায় সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় কোভিড পজিটিভ হয়েছেন। ওঁনাকে অ্যাপোলোতে স্থানান্তরিত করতে হয়।
অ্যাপোলো হাসপাতালে কিছুটা শারীরিক সমস্যার উন্নতি হয়। শিল্পীর পর্যবেক্ষণে ছিলেন পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ টিম। কার্ডিওথোরাসিক সার্জারি বিভাগীয় প্রধান ডাক্তার সুশান মুখোপাধ্যায়, কার্ডিওলজির প্রধান ডাক্তার প্রকাশচন্দ্র মণ্ডল, এবং ডাক্তার দেবরাজ যশ (পালমনোলজি), ডাক্তার সুরেশ রামাসুব্বন (ক্রিটিক্যাল কেয়ার) ও বিডি চট্টোপাধ্যায় (অর্থোপেডিক্স)-এর বিশেষজ্ঞ দল। চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে চলছিল গীতশ্রী চিকিৎসা। কিন্তু হঠাৎ-ই স্তব্ধ হয়ে যায় হৃদস্পন্দন। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় সুরলোকের মায়া কাটিয়ে দিকশূন্যপুরের দিকে যাত্রা করলেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।