জানুন কেন ভোটে এমন ফল হল বিজেপির

- আপডেট : ২ নভেম্বর ২০২১, মঙ্গলবার
- / 13
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : বাংলাদেশের হিংসাকে ভোট ব্যাঙ্ক হিসাবে কাজে লাগাতে চেয়েছিল বিজেপি। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী নিজেই বলেছিলেন বাংলাদেশের ঘটনা উপনির্বাচনে তাদের ভোট বাড়াবে। কিন্তু তা হল না। ভাল ফল তো দূরের কথা, ৪ আসনের মধ্যে ৩ আসনে জমানত জব্দ হয়েছে বিজেপির। বাংলার মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছে তারা বিদ্দেস রাজনীতি দেখে ক্লান্ত।
কোনও একটি বিশেয কারণে যে বিজেপি এমন ধরাশায়ী হয়েছে তা নয়। একাধিক কারণে বিজেপির এই বেহাল দশা।প্রতিদিন বাড়ছে পেট্রোল-ডিজেলের দাম।গ্যাসের দাম বাড়ছে নিয়মিত বিরতিতে । ‘আচ্ছে দিনের’ গুঁতোয় সাধারণ মানুষ হাঁসফাঁস করছে। বাংলায় বিজেপিকে পথ দেখানোর মানুষ নেই।ঘাসফুল থেকে পদ্মে যাওয়া নেতারাও অনেকে ফের তৃণমূলে ফিরেছেন। কেউ বলেছেন দলে মর্যাদা পাচ্ছেন না। কেউ অভিযোগ করেছেন, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বাঙালিদের পছন্দ করে না। মোদ্দা কথা হল, দিলীপ-শুভেন্দুদের কাছে এখন সংগঠন ধরে রাখাই বিজেপির কাছে বিরাট বড় চ্যালেঞ্জ।
দলীয় কোন্দলে জেরবার বঙ্গ বিজেপি। বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা তথাগত রায় নিয়ম করে কৈলাশ বিজয়বর্গীকে গাল পারছেন। পূর্ণ বিজেপির বলছে তৃণমূলীদের ঢুকিয়েই এই সর্বনাশ হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হল জেনেবুঝে আরএসএস বিজেপিকে এমন সর্বনাশ হতে দিল কেন ? কেনই বা তারা বিজেপির প্রার্থী ঠিক করে দিল না? কেন্দ্রীয় বিজেপির অন্যতম সমস্যা হল বাংলার সংস্কৃতিকে না বোঝা। যে চোখে তারা গোবলয়কে দেখে সেই চোকেহি তারা বাংলাকে দেখতে চেয়েছে। দিলীপ ঘোষের মত আরএসএসের ‘পেয়ারের’ নেতাদের কাছেও বঙ্গ সংস্কৃতি খুব একটা পছন্দের নয়। তাই বঙ্গ সংস্কৃতি নিয়ে কূ-মন্তব্য করে আরএসএসের কাছে নিজের নম্বর বাড়াতে চেষ্টা কসুর করেননি দিলীপ।সব দেখেশুনে বাংলায় আসা একপ্রকার ছেড়েই দিয়েছেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। এর আগে ঠিক এমন দশায় হয়েছিল বিজেপি নেতা সিদ্ধার্থ নাথ সিংয়ের।
তিনিও ভাগ মুকুল ভাগ স্লোগান দিয়ে নিজেই ভেগেছিলেন।সব থেকে বড় কথা হল মমতা যখন একের পর এক জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের স্লোগান দিয়েছেন, বঙ্গ বিজেপি তখন সমানে ব্যক্তি কুৎসার আশ্রয় নিয়ে দিল্লির নেতাদের খুশি করতে চেয়েছে। বিধানসভা ভোট তারা কেবল মমতা ও অভিষেকের বিরুদ্ধে কুৎসা করাকে নিজেদের ‘পবিত্র কর্তব্য ‘ বলে মনে করেছিল।
বিধানসভা ভোটে পরাজয়ের পর থেকেই বাংলায় ছন্দে ছিল না বিজেপি। নতুন করে কে দল ছাড়বে, তা নিয়ে প্রতিদিন আতঙ্কে দিন কাটছে দিলীপ-শুভেন্দুদের। ফলে উপনির্বাচনে তাদের অবস্থা ডানাভাঙা পাখির মতই ছিল । তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজে জয়ের কোনও লক্ষণ ছিল না। তাছাড়া সব উপনির্বাচনে তাদের চেনা স্লোগান ছিল ‘সন্ত্রাস করছে তৃণমূল।’ অথচ ভোট করাচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তাই এই অভযোগও মানুষের গা সোয়া হয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে উপনির্বাচনে যে ফল হয়েছে তা নিয়ে কেউই বিস্মিত নন। অনেকে বলছেন, এটাই হওয়ার ছিল।