টানা ৪৫ দিন বন্ধ থাকতে পারে গ্রিন লাইনে মেট্রো পরিষেবা
পুবের কলম প্রতিবেদক: কলকাতা মেট্রোরেলের ইস্ট-ওয়েস্ট করিডোরের গ্রিন লাইনে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে হাওড়া ময়দান পর্যত জুড়ে দিয়ে একটানা যাত্রী পরিষেবা প্রদানের জন্য এবার শুরু হবে স্বয়ংক্রিয় সিগনালিং ব্যবস্থার পরীক্ষা-নিরীক্ষা। আর এই কারণে ৪৫ দিন বন্ধ থাকতে পারে এই অংশের মেট্রো রেলের পরিষেবা। গতবছরের শেষ দিকে বউ বাজারের বিপত্তিস্থলে ট্রলি পরিদর্শন করা হয়। এ ব্যাপারে কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে ওই অংশের কাজ শেষ করার যে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যেই কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা চলছে জোর কদমে। ওই রুটে একটানা মেট্রো পরিষেবা চালুর জন্যই গুরুত্বপূর্ণ সিগনালিং ব্যবস্থার পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ মিটিয়ে ফেলতে উদ্যোগী মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। এই মুহূর্তে গ্রিন লাইনের দু’টি অংশে পৃথক ভাবে মেট্রো পরিষেবা চলছে। বর্তমানে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো রেল প্রকল্পের গ্রিন লাইন (ফেজ-১)-এ সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত এবং গ্রিন লাইন (ফেজ-২) অংশে এসপ্ল্যানেড থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত মেট্রো রেলের যাত্রী পরিষেবা চালু রয়েছে।
জানা গিয়েছে নির্মানকারী সংস্থা কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড সিগনাল ব্যবস্থা পরিবর্তনের জন্য আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত কলকাতা মেট্রোর গ্রিন লাইনে সম্পূর্ণভাবে পরিষেবার বন্ধ রাখতে চায়। মূলত সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদহ এবং এসপ্ল্যানেড হয়ে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত একটানা মেট্রো পরিষেবা চালুর জন্যই দুটি অংশের সঙ্গে মাঝের অংশের সিগনালিং সমন্বয় করার জন্যই নির্মাণকারী সংস্থা কেএমআরসিএল মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে। এ ব্যাপারে কলকাতা মেট্রোরেল সূত্রে খবর, যেহেতু সময়টা যথেষ্ট দীর্ঘ, তাই এতদিন ধরে যাত্রীদের সমস্যা হতে পারে। তাই একাধিক বিকল্প উপায় নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানিয়েছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, দুই অংশে বর্তমানে ফরাসি সংস্থার তৈরি সফটওয়্যারের মাধ্যমেই সিগনাল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ওই সফটওয়্যার আপগ্রেড করার জন্য গোটা অংশের ট্রায়াল রান করা হবে।
এর ফলে, কলকাতা মেট্রো রেলের গ্রিন লাইনেই প্রথম অত্যাধুনিক যোগাযোগ-ভিত্তিক ট্রেন নিয়ন্ত্রণ (সিবিটিসি) সিগনালিং সিস্টেম বাস্তবায়ন করা হবে যা নিরাপদ এবং স্বয়ংক্রিয় ট্রেন পরিচালনার জন্য মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করবে। ওই প্রকল্পের কর্মকর্তারা আরও জানান, ইতিমধ্যেই অ্যালুমিনিয়াম তৃতীয় রেল সম্পর্কিত বৈদ্যুতিক কাজও শেষের পর্যায়ে। এ ছাড়াও সিগন্যালিং কাজ শুরু হয়েছে এবং কলকাতা মেট্রো প্রকল্পের নিরবচ্ছিন্ন কাজ সহজতর করার আগামী ১৯ জানুয়ারি রবিবার সম্পূর্ণ ট্র্যাফিক ব্লকের অনুমতি পাওয়া গিয়েছে বলেও এক কর্মকর্তা জানান।
এই প্রকল্পটি সম্পন্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাওড়া ময়দান থেকে সল্টলেক সেক্টরে যাতায়াতও উল্লেখযোগ্যভাবে সহজ হয়ে উঠবে। এর ফলে যেমন যাত্রাপথে সময় সাশ্রয় হবে, বিপুল সংখ্যক যাত্রী দমদম, সল্টলেক-সহ বিভিন্ন স্টেশন থেকে সহজেই গঙ্গার তলদেশ দিয়ে হাওড়া স্টেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন। কলকাতার মেট্রো রেলওয়ের গ্রিন লাইনেই প্রথম যোগাযোগ-ভিত্তিক ট্রেন নিয়ন্ত্রণ সিগনালিং সিস্টেম বাস্তবায়ন করা হবে এবং স্বয়ংক্রিয় ট্রেন পরিচালনার জন্য মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করবে। ওই সিগনালিং পদ্ধতি চালু হলে সংঘর্ষ এড়ানো, গতি প্রতিরোধ এবং লাল সংকেত পাসিং সতর্কতার মতো স্বয়ংক্রিয় ট্রেন সুরক্ষা (এটিপি) চালু হবে বলেও মেট্রো রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।