এনজামেনা: ফ্রান্সের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তির ইতি টেনেছে মধ্য আফ্রিকার দেশ চাদ। বৃহস্পতিবার চাদ সরকারের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। এই পদক্ষেপের ফলে চাদ থেকে ফরাসি সেনাদের চলে যেতে হতে পারে। অঞ্চলটিতে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পশ্চিমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র চাদ। দেশটির বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাধীনতার ছয় দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। চাদ এখন পূর্ণরূপে দেশের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে চায়।
২০১৯ সালের সংশোধিত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি সমাপ্তির সিদ্ধান্ত চাদের কৌশলগত অংশীদারত্বকে নতুন করে সংজ্ঞায়নের সুযোগ তৈরি করে দেবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। চাদ অতীতে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক বাহিনীকে নিবিড়ভাবে সহযোগিতা করে এসেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটি রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ হয়েছে। চাদ সরকারের সিদ্ধান্তকে পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকায় ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক ভূমিকার কফিনে আর একটি পেরেক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এর আগে মালি, নাইজার ও বুরকিনা ফাসোয় সামরিক অভ্যুত্থানের পর আফ্রিকার এই দেশগুলো থেকে সেনা প্রত্যাহারে বাধ্য হয় ফ্রান্স। এখন ফরাসি সেনাদের চাদও ত্যাগ করতে হতে পারে। বর্তমানে চাদে প্রায় এক হাজার ফরাসি সেনা আছেন। এ ছাড়া দেশটিতে ফরাসি যুদ্ধবিমানও মোতায়েন আছে।
মধ্য আফ্রিকার ভূমিবেষ্টিত অর্ধ মরুর দেশ চাদ। চাদ অথবা শাদ, দু’টি নামেই পরিচিত দেশটি স্বর্ণ ও ইউরেনিয়ামে সমৃদ্ধ। তেল রফতানিকারক দেশ হিসেবেও মর্যাদা লাভ করেছে চাদ। আয়তনের দিক থেকে আফ্রিকার পঞ্চম বৃহত্তম দেশ চাদ। স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই দেশটিতে সহিংস ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। দেশটির উত্তর অংশে বসবাসকারী আরব মুসলিম ও দক্ষিণ অংশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরোধের কারণে এই সংকট দেখা দেয়। এছাড়া উত্তরে বিদ্রোহীদের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং সাহেল অঞ্চল ও চাদ অববাহিকাজুড়ে অভ্যুত্থান হয়। এ সব কারণে অবকাঠামোগত দুর্বলতার পাশাপাশি দারিদ্রে জর্জরিত অবস্থা দেশটির। দেশটির সামাজিক সংকট ও স্বাস্থ্য খাতের অবস্থাও করুণ। ২০২১ সালের এপ্রিলে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে সাবেক প্রেসিডেন্ট ইদ্রিস মারা যাওয়ার পর তার ছেলে জেনারেল মুহাম্মদ ইদ্রিস অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আসেন। ১৯৬০ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে চাদ।