পুবের কলম প্রতিবেদক: টানা দুই সপ্তাহ ধরে বৃষ্টি যেন থামছেই না। প্রথমে নিম্নচাপ ও পরে ঘূর্ণাবর্ত। এই দুইয়ের রেশ কাটতে না কাটতেই রাজ্যে ফের ঘনিয়ে আসছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। জোড়া ঘূর্ণাবর্ত ও তার সঙ্গে নিম্নচাপের কারণে আগামী ২৬ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত আবারও রাজ্যে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সর্তকতা দিল আবহাওয়া দফতর।
বুধবার আলিপুর আবহাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে– দক্ষিণ-পূর্ব ঝাড়খন্ড এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় একটি অক্ষরেখা রয়েছে। সেইসঙ্গে রয়েছে একটি ঘূর্ণাবর্ত। যা প্রায় ৫.৮ কিলোমিটার উঁচু পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এই নিম্নচাপ অক্ষরেখা এবং ঘূর্ণাবর্তটি ক্রমে পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগরে এগোবে। সেইসঙ্গে মায়ানমার পর্যন্ত আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। যা উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের দিকে এগোবে। এর ফলে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর বঙ্গোপসাগরের ওপরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ওইদিন নিম্নচাপটি তৈরি হওয়ার পর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তা ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে পৌঁছাবে। যার ফলে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সেইসঙ্গে ঝড় হওয়ার কারণে সমুদ্র উত্তাল হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে– আগামী 25 সেপ্টেম্বর উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা– পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং হাওড়া জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এর পরের দিন অর্থাৎ ২৬ সেপ্টেম্বর বৃষ্টি আরও বাড়বে। ওই সমস্ত জেলাগুলির পাশাপাশি ওইদিন কলকাতা– হুগলি– বাঁকুড়া– পুরুলিয়া– ঝাড়গ্রাম প্রভৃতি জেলায় বৃষ্টি হবে। বেশ কিছু জায়গায় ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে হলুদ সর্তকতা জারি করা হয়েছে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়।
উল্লেখ্য– গত সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টিতে একাধিক নদীতে জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে একাধিক রেল ব্রিজে জল ছুঁই ছুঁই অবস্থা। এই কারণে ইতিমধ্যে একাধিক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। ওই সমস্ত ট্রেনগুলিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে অন্য রুট হয়ে। সেইসঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। আরও ভারী বৃষ্টি হলে সে ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাশাপাশি সমুদ্র উত্তাল থাকার কারণে মৎস্যজীবীদেরও আগাম সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে দুর্যোগের এই পূর্বাভাস পেয়েই বুধবার নবান্নে ইতিমধ্যেই জরুরি বৈঠক ডাকেন মুখ্যসচিব। দক্ষিণবঙ্গে লাল সতর্কতা জারি করেছে নবান্ন। লাগাতার বৃষ্টি– বন্যা পরিস্থিতি– উদ্ধারকার্য এই সমস্ত বিষয়ে দক্ষিণবঙ্গের সব জেলার জেলাশাসকদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুরসভার কমিশনারও। ভবানীপুরে কোনওভাবে যাতে জল না জমে সেজন্য বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনোদ কুমারকে।