পুবের কলম প্রতিবেদকঃ দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবি ছিল, বর্ধিত বকেয়া বেতন প্রদান করতে হবে। সেই দাবিকে মান্যতা দিয়ে এবার বকেয়া বেতন দেওয়া শুরু করল ডায়রেক্টরেট অব মাদ্রাসা এডুকেশন। বৃহস্পতিবার ডায়রেক্টর অফ মাদ্রাসা এডুকেশন আবিদ হোসেন জানান, ২০০৮ সালের পর থেকে শিক্ষা আইন অনুসারে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিএড ট্রেনিং বাধ্যতামূলক হয়। যে সব শিক্ষক-শিক্ষিকার প্রশিক্ষণ ছিল না, তাঁদের অনেকেই ‘ওপেন এন্ড ডিস্টেন্স লার্নিং (ওডিএল মোড)’- এ বিএড ট্রেনিং নেওয়া শুরু করেন। ট্রেনিং চলাকালীন তাঁদের বেতনের বর্ধিত অর্থ দেওয়া বন্ধ ছিল।
এদিকে রাজ্যের বিভিন্ন মাদ্রাসায় শিক্ষকদের অধিকাংশের প্রশিক্ষণ নেওয়া শেষ হয়েছে। তাঁরা মাদ্রাসায় পুনরায় নিযুক্ত হয়েছেন। কিন্তু এখন বর্ধিত বকেয়া চালু হয়নি। তাই ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে অনেকেই জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে লিখিতভাবে সমস্যার কথা জানান। সেই অভিযোগ ডিএমই’র দফতরে জমা দেয় ডিআইরা। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ওই শিক্ষকদের বর্ধিত বকেয়া বেতন দেওয়া শুরু করে ডিএমই। ইতিমধ্যে রাজ্যের নদিয়া, আলিপুরদুয়ার, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর, শিলিগুড়ি, কোচবিহার, পূর্ব বর্ধমান এবং কলকাতা মিলে মোট আটটি জেলায় ১ কোটি ৬১ লক্ষ ৯২ হাজার ৮১ টাকা বকেয়া পাঠিয়েছে ডিএমই। অন্যান্য জেলা থেকে তথ্য জমা পড়লে, তা খতিয়ে দেখে বকেয়া প্রদান করা হবে বলেও জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতর।
নিয়মানুসারে, পাঁচ বছরের মধ্যে বিএড বা অন্য ট্রেনিং না থাকলে শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যাবে। প্রতি বছর জুলাই মাসে তিন শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধি হয়। কিন্তু ট্রেনিং না থাকলে ওই শিক্ষকদের বর্ধিত বেতন মিলত না। যে সমস্ত শিক্ষককের ট্রেনিং ছিল না, রাজ্য সরকার তাঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে। এই নিয়ম স্কুল শিক্ষা দফতরের তত্বাবধানে থাকা শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও লাগু হয়। ওডিএল-এ বিএড এর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা শিক্ষা দফতরও করে। শিক্ষকদের মধ্যে এখন যাঁরা বিএড সম্পন্ন করেছেন, তাঁদের ‘ইনক্রিমেন্ট’ পুনরায় চালু করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বকেয়া ইনক্রিমেন্টও পাবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার।
কোন কোন শিক্ষকদের বর্ধিত বেতন বন্ধ রয়েছে, তাঁদের বেতন কত ছিল, কত শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন, তার বিস্তারিত তথ্য জেলা শাসকদের কাছ থেকে জানতে চায় ডিএমই। ইতিমধ্যে কয়েকটি জেলার তরফে ডিএমই দফতরে তথ্য জমা দেওয়া হয়। সেই তথ্যের ভিত্তিতে শিক্ষকদের বকেয়া প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএমই। অন্যান্য জেলার ডিআইরাও এই শিক্ষকদের তালিকা দ্রুত ডিএমই দফতরে পাঠাবে বলে আশ্বাস মিলেছে।
ডিআই দফতরের নিয়ম, বেতন সংক্রান্ত বিষয়ে ‘ক্লেম’ করলে ‘জেডিএ ভেটিং’-পদ্ধতিতে তথ্য যাচাই করে আলোচনা হয়। তারপর ওই তথ্য ডিএমই’র কাছে পাঠানো হয়। এরপর ডিএমই পুনরায় খতিয়ে দেখতে বর্ধিত বকেয়া বেতনের ফান্ডের ব্যবস্থা করে। এদিকে শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবিকে মান্যতা দেওয়ায় ডিএমই’র এই উদ্যোগে খুশি মাদ্রাসা শিক্ষক সংগঠন।
– প্রদান করছে