পুবের কলম প্রতিবেদক : ‘অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো’ — রবীন্দ্রনাথের এই গানটি বেশিরভাগ অনুষ্ঠানে উদ্ধৃত করে থাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই গানের কথা এবার সেই কথা আক্ষরিক অর্থে সত্যি হচ্ছে। বাংলার বীরভূম জেলায় অবস্থিত এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম দেওচা পাঁচামির কয়লা খনির অন্ধকার থেকেই রাজ্যের ভবিষ্যতের রোশনাই ফুটে উঠবে।
এই খনি থেকে যে পরিমাণ কয়লা ও ব্যাসল্ট উত্তোলন করা হবে তাতে আগামী একশো বছর রাজ্যে বিদ্যুতের কোনও অভাব হবে না। বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে। দুদিনের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন শেষ হওয়ার পরে এই সম্মেলনের সাফল্য নিয়ে একটি পোস্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই তিনি লিখেছেন, রাজ্যে শিল্প সম্ভাবনার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের রসদ এই দেওচা পাঁচামি প্রকল্প। বৃহস্পতিবার থেকেই এই খনি থেকে উত্তোলনের কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও অশোকনগরে কেন্দ্রের খনিজ তৈল উত্তোলন প্রকল্পে রাজ্যের ভূমিকা ও সহযোগিতা দেশের পেট্রোলিয়াম মানচিত্রে বাংলার নাম চিত্রিত করবে।
মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ২০১১ সালে আমরা যখন ক্ষমতায় আসি তখনই বাংলার উন্নয়নের নিজেকে সম্পূর্ণভাবে উৎসর্গ করেছিলাম। আমার স্থির লক্ষ্য ছিল রাজ্যকে এমন জায়গায় তুলে ধরা যাতে প্রতিটি রাজ্যবাসী গর্বের সঙ্গে বলতে পারে, ‘বাংলা আজ যা ভাবে, গোটা দেশ তা আগামীকাল তা ভাবে।
বৃহস্পতিবার বাণিজ্য সম্মেলনের সমাপ্তি দিনের মঞ্চে যখন বিশ্বের শিল্পপতি, নীতি নির্ধারক, আন্তর্জাতিক নেতা, উদ্যোগপতিদের মধ্যে আমি দাঁড়িয়েছিলাম, আমি চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলাম আমার স্বপ্ন সফল হতে চলেছে। বাংলা আজ উন্নয়নের পথে উন্নতির সাথে এগিয়ে চলেছে। সাফল্যের শক্তির উৎস হয়ে উঠেছে। বাংলার ১.৭২ কোটি মানুষকে দারিদ্রসীমার ওপরে তুলে আনা হয়েছে। তাদের হাতে অর্থের যোগান দেওয়া হয়েছে। তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, আমি গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করছি ২০২৫ সালের বাণিজ্য সম্মেলন থেকে ৪ কোটি ৪০ লক্ষ ৫৯৫ কোটি লগ্নির প্রস্তাব এসেছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিল্প স্থাপনের ২১২ টি মৌ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আগ্রহপত্র জমা পড়েছে।
বাংলা এখন বিশ্বের দরবারে একটি প্রতিষ্ঠিত নাম। ‘বিশ্ববাংলা’র যে স্বপ্ন আমরা দেখেছিলাম, তা এখন বাংলার প্রতীক, বাংলার পরিচয়। যে স্বপ্ন বাংলার মাটিতে বোনা হয়েছিল তার ফসল ফলতে চলেছে। বাংলা যে একদিন ভবিষ্যতের কান্ডারি হয়ে গোটা বিশ্বকে পথ দেখাবে, আলো দেখাবে, দিশা দেখাবে তা আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। সেদিন আর বেশি দূরে নয়।