পুবের কলম প্রতিবেদক: দেবাঞ্জন কাণ্ডে নয়া মোড়। এবার এই প্রতারকের সঙ্গে জড়িয়ে গেল রাজভবনের নামও। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, দেবাঞ্জনের রক্ষীকে রাজভবনে দেখা যায়। সেই অভিযোগ প্রকাশ্যে এনে বিষয়টি নিয়ে সরব হল রাজ্যের শাসক দল। এদিন তৃণমূল ভবনে সংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূল সাংসদ তথা দলের জাতীয় মুখপাত্র শুখেন্দু শেখর রায় অভিযোগ তোলেন, প্রতারক দেবাঞ্জন দেবের রক্ষী রাজভবনে কেন? ঘনিষ্ঠতার গুরুত্ব আপনারা বুঝতেই পারছেন। তদন্তকারীদের গোচরে বিষয়টি আনছি, আসল তথ্য এবার সামনে আসুক। রাজ্যপালের সঙ্গে প্রতারকের দেহরক্ষীর যোগ থাকলে তা দেশের পক্ষে ভয়ঙ্কর।
আসলে ভ্যাকসিন কাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর বিজেপির তরফ থেকে তৃণমূল নেতার সঙ্গে প্রতারকের ছবি প্রকাশ্যে এনে অভিযোগ করা হয় এই ঘটনার সঙ্গে শাসকদলের যোগ রয়েছে। যদিও রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস গোটা বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তাদের বক্তব্য কারও সঙ্গে ছবি থাকার অর্থ তারা এই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত এমনটা নয়। সেই যুক্তি মানতে রাজি হয়নি রাজ্যের বিরোধীদল।
এদিন একটি ছবিকে সামনে রেখে রাজ্যপালকে নিশানা করেন তৃণমূল কংগ্রেসের এই সাংসদ। তাঁর দাবি, কসবা ভুয়ো টিকাকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবের নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে। সুখেন্দু শেখর রায় অভিযোগ করেন, এই নিরাপত্তা রক্ষীর মাধ্যমে অনেকের কাছে খাম যেত। যদি দেখা যায় এই নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে ধনকরের কোনও সম্পর্ক রয়েছে তাহলে তা ভয়ানক। তিনি আরও বলেন, প্রতারকের নিরাপত্তা রক্ষী রাজ্যপালের বৃত্তে গেল কী করে, এই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তদন্ত করে সত্যটা জানা প্রয়োজন।
একইসঙ্গে, ১৯৯৬ সালের হাওলা-জৈন মামলা নিয়েও এদিন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন সুখেন্দু শেখর রায়।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই রাজ্যপালকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘উনি তো নিজেই দুর্নীতিগ্রস্ত। ১৯৯৬ সালের হাওলা-জৈন কেলেঙ্কারির চার্জশিটে নাম ছিল ওনার।’
এদিন শুখেন্দু শেখর রায় সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, ‘আমাদের সাংবাদিক বৈঠকের পর হাওলা-জৈন-এর সুরেন্দ্র জৈন মারা গিয়েছেন। তাঁর মৃত্যু কাকতলীয় কিনা জানি না। আমাদের সাংবাদিক সম্মেলনের পর আসল লোক মারা গেল। প্যানিক অ্যাটাক হল না গলায় মাছের কাঁটা ঢুকে গেল, এটা নিয়ে যিনি নীরব রয়েছেন তিনিই বলতেন পারবেন। এমন দুর্নীতিগ্রস্ত রাজ্যপালকে নিয়োগ করা আগে প্রধানমন্ত্রীর দেখা উচিত ছিল। এমন অভিযুক্ত রাজ্যপালকে বরখাস্ত করা উচিত।’
এতদিন দেবাঞ্জনের সঙ্গে তৃণমূলের একাধিক নেতা-মন্ত্রীর ছবি প্রকাশ্যে এনে রাজ্যের শাসকদলের উপর চাপ তৈরি করেছিল বিজেপি। এবার উলটো চাপ তৈরির কাজ শুরু করল তৃণমূলও।
উল্লেখ্য, বুধবারই সাংবাদিক সম্মেলন থেকে জাল টিকাকাণ্ডের পিছনে বিজেপির চক্রান্ত থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত করেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে দেবাঞ্জনের ছবি নিয়েও মুখ খুলেছিলেন তিনি। এবার পালটা রাজ্যপালের সঙ্গে প্রতারক দেবাঞ্জনের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল তৃণমূল।