পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ গোটা দেশকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন সুর সম্রাজ্ঞী ভারতরন্ত লতা মঙ্গেশকর। ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে টানা ২৮ দিন ধরে লড়াইয়ের পর জীবনের ইতি টানেন সকলের প্রিয় লতাদিদি। কিংবদন্তীর শিল্পীর প্রয়াণে মন ভারাক্রান্ত কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত।
প্রিয় বন্ধু’র চলে যাওয়ার কথা জানতে পারলেন না, গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। কারণ কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে এই মুহূর্তে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তিনি। করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রথমে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তার পর রাজ্য সরকারের উদ্যোগে সেখান থেকে তাঁকে স্থানান্তরিত করে কলকাতায় বাইপাসের ধারে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। এখন যদিও করোনা-মুক্ত হলেও শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল বর্ষীয়ান গায়িকা। তাই লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যু সংবাদ জানানো হয়নি সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে। শোনা যায়, লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে নাকি তীব্র রেষারেষির সম্পর্ক ছিল সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের। কিন্তু সেই গুজব এক ঝটকায় উড়িয়ে দিয়ে দুই কিংবদন্তী জানিয়েছিলেন, পরস্পরের খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু তাঁরা। পাঁচের দশক থেকে শুরু হওয়া সম্পর্কের সুর তাল লয় একই ছিল। সেখানে ছেদ পড়েনি। একসঙ্গে বহু গানে গলা মিলিয়েছেন দুজনে। শিল্পী হিসাবে পরস্পরের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ছিল তাঁদের। লতা মঙ্গেশকরের প্রয়াণে ধাক্কায় গীতশ্রীর বয়সের কথা চিন্তা করেই তাঁকে জানানো হল না।
গত ২৬ জানুয়ারি বাড়িতে খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। ২৭ জানুয়ারি পরিবারের তরফ থেকে খবর পেয়ে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে তাঁকে লেক গার্ডেন্সের বাড়ি থেকে নিয়ে এসে এসএসকেএম-এ ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের জামাই জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। ফুসফুসে সংক্রমণ ছিল তাঁর। ২৩ জানুয়ারি বাথরুমে পড়ে যান তিনি। সম্প্রতি কেন্দ্রের তরফ থেকে ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার দেওয়ার জন্য সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় কে ফোন করা হয়। সেই পুরস্কারের প্রস্তাব নাকচ করে দেন তিনি। সেই ঘটনা নিয়ে টেলিফোনে একাধিক জনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তার পর থেকেই আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে খবর। SSKM-এর উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় তাঁকে। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়, এই গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের জ্বর ও হালকা শ্বাসকষ্ট রয়েছে। তাঁর আরটিপিসিআর টেস্ট করানো হয়েছে। পরে টেস্টে তাঁর করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। গ্রিন করিডরে ১২ কিলোমিটারের পথ ১২ মিনিটের মধ্যে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে। গীতশ্রী চিকিৎসায় পাঁচ সদস্যের টিম গঠন করা হয়।
শিল্পীর পর্যবেক্ষণে রয়েছেন পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ টিম। কার্ডিওথোরাসিক সার্জারি বিভাগীয় প্রধান ডাক্তার সুশান মুখোপাধ্যায়, কার্ডিওলজির প্রধান ডাক্তার প্রকাশচন্দ্র মণ্ডল, এবং ডাক্তার দেবরাজ যশ (পালমনোলজি), ডাক্তার সুরেশ রামাসুব্বন (ক্রিটিক্যাল কেয়ার) ও বিডি চট্টোপাধ্যায় (অর্থোপেডিক্স)-এর বিশেষজ্ঞ দল। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, সার্বিকভাবে সংকটে রয়েছেন শিল্পী।