ঢাকা: বাংলাদেশ। ভারতীয় বুদ্ধিজীবী ও মিডিয়ার আশঙ্কা হচ্ছে, বাংলাদেশ না আবার ইসলামি রাষ্ট্র হয়ে যায়। অবশ্য বাঁচোয়া, বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, এই কথাটা কে, কবে, কোথায় এবং কখন বলল? তবে বাংলাদেশ যে শুধু সেক্যুলার নয়, বরং সুইডেন, নরওয়ের মত মুক্তমনা ও অবাধ যৌনতার স্বর্গরাজ্য হওয়ার পথে চলছে, তার নানা আলামত পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকায় গুলশান বনানি প্রভৃতি অভিজাত এলাকায় যেভাবে চলে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে চলে অবাধ যৌনাচার, হেরোইন, ইয়াবা, আরও কত কি।
শুধু তরুণ-তরুণীরা নয়, মধ্য বয়স্ক এমনকী প্রভাবশালী বৃদ্ধরা এতে শামিল হন। কাজেই চিন্তা নেই এই কালচার বাংলাদেশে বাড়ছে। শেখ হাসিনা না থাকলেও সে দেশের ক্ষমতাশীল মহল সেক্যুলারিজমের ঝাণ্ডা নিয়ে বহাল থাকবে। এরই একটি সামান্য নজির পাওয়া গেল বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের দর্শন বিভাগের আয়োজিত পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে। সেই অনুষ্ঠানে রাত নামার সঙ্গে শুরু হয় অ্যাশেজ ব্যান্ড দলের কনসার্ট। তারপর উপচে পড়া ভিড়। রাতের অন্ধকারে হাজার হাজার তরুণদের মধ্যে উঠতি বয়সের তরুণীরাও শরিক হয় কনসার্ট দেখতে। কনসার্টের আলো আঁধারের আবহে এবং ব্যান্ডের বাজনার তালে তালে শত শত তরুণী নারী যৌন হেনস্তার শিকার হয়। মদের বোতল হাতে অনেকেই মাতলামি শুরু করে। নারীদের শরীরে সম্মিলিতভাবে হাত দিয়ে যৌন নিগ্রহ করার দৃশ্য আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেওয়া হয়। উদ্দেশ্য আরও ছড়িয়ে পড়ুক এই কালচার, এই যৌনাচার।
সাংবাদিক অরূপ রতন তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘অনুষ্ঠান সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া এটা মোটেও কোনও বাহাদুরি কাজ নয়। এর মধ্যে আপনারা ঘটা করে আবার ঘোষণাও দিয়েছিলেন রাত ৮টায় জনপ্রিয় অ্যাশেজ ব্যান্ড দল মঞ্চে উঠবে। এজন্য সেখানে জনস্রোত তো হবেই। তবে এই জনস্রোতে কি কি ঘটতে পারে, তা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা থাকবে কিনা তা দশবার ভাবা দরকার ছিল। যার ফলাফলে আমরা দেখলাম একটা যুবকের খুন, অনেক নারীর শ্লীলতাহানি, ছোট ছোট মারামারি, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আহত একজন আর মাদকের অবাধ সেবন।
ফৌজিয়া বীথি নামে একজন শিক্ষিকা লিখেছেন, ‘শনিবার রাতে উত্তরবঙ্গের সর্বশ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ আজিজুল হক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে কনসার্টে মেয়েদের হেনস্থা, শ্লীলতাহানি নিয়ে ভিডিয়ো ফেসবুকে ঘোরাফেরা করছে। আবদুস সালাম নামের একজন লিখেছেন, ‘বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাসে নামাজের সময় বন্ধ করা হয়নি কনসার্ট।’
ওদিকে, বগুড়ার আজিজুল হক কলেজে কনসার্ট চলাকালে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে মেহেদী হাসান (২৬) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত মেহেদী শহরের মালগ্রাম চাপড়পাড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি পেশায় একজন থাই মিস্ত্রি ছিলেন। এ ছাড়াও ছাত্রীদের যৌন হামলার ঘটনাগুলো ফেসবুকজুড়ে ট্রল হচ্ছে। বেশিরভাগ মানুষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং কলেজ প্রশাসনকে দোষ দিচ্ছেন। এমন জঘন্য ঘটনার জন্য নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি তোলা হয়েছে। একটু সমালোচনা চলছে। ঝড়ো সমালোচনা। নষ্ট তরুণদের মদ্যপান। উন্মাদ হয়ে প্রকাশ্যে সম্মিলিতভাবে নারীদের যৌন হয়রানি। যুবক খুন। সবকিছুই ঘটেছে পুলিশের উপস্থিতিতেই। কাজেই শেখ হাসিনা, ওবাইদুল কাদেররা না থাকলেও সোনার বাংলা কোনওদিনই ইসলামি রাষ্ট্র হবে না। সকলেই নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন।