নিউইয়র্ক, ২৪ অক্টোবরঃ জিনজিয়াং ও তিব্বতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় রাষ্ট্রসংঘে চিনের প্রবল সমালোচনা করেছে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র সহ ১৩টি দেশ। মঙ্গলবার চিনে উইঘুর মুসলিম ও তিব্বতিদের মুক্তির দাবিও জানিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলি। পাল্টা জবাবে পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে গাজা উপত্যকায় ‘নারকীয় পরিস্থিতি’ উপেক্ষার করার অভিযোগ তুলল চিন। গাজা ইস্যুকে হাতিয়ার করে পশ্চিমা বিশ্বের সমালোচনা করে বেজিং বলেছে, গাজার জীবন্ত নরককে খাটো করে দেখাছে অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। পশ্চিমা বিশ্ব ও তাদের মিত্রদের দ্বৈত নীতিরও নিন্দা জানিয়েছে জিংপিং সরকার।
জিনজিয়াং ও তিব্বত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৩টি মিত্র দেশের পক্ষ থেকে অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রসংঘে বেইজিংয়ের রাষ্ট্রদূত ফু কং কমিটির বৈঠকে বলেন, “চিনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শান্তিপূর্ণ ও শান্ত প্রদেশে হামলা ও কলঙ্ক সৃষ্টির একটি প্রচেষ্টা।”
Read More: ফের ইসরাইলি টার্গেটে আলজাজিরা, ৬ সাংবাদিককে ‘সন্ত্রাসী’ তকমা!
গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রসঙ্গে পশ্চিমাদের তীব্র আক্রমণ করে চিনা রাষ্ট্রদূত বলেন, “অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রসহ আরও কয়েকটি দেশ এই জীবন্ত নরককে খাটো করে দেখছে। পুরো বিশ্বের সামনে দ্বৈত নীতির জন্য তারা নিম্ন স্তরে পৌঁছেছে।” তাঁর মতে, “আমরা কয়েকটি পশ্চিমা দেশের আধিপত্যবাদী কর্মকাণ্ডের দৃঢ়ভাবে বিরোধিতা করি, যারা সংঘাত বৃদ্ধি ও হিংসা ছড়াতে আগুনে ঘি ঢালছে।” গাজায় দ্রুত যুদ্ধবিরতি এবং সংঘাতপূর্ণ এলাকায় লড়াই বন্ধে জোরালো দাবি জানিয়েছেন ফু কং।
Read More: গরীবের ত্রাতা হিসাবে দানার আগেই সুন্দরবনে হাজির কান্তি গাঙ্গুলি
মানবাধিকারকে ‘রাজনীতিকরণ’-এর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র বলে অভিযোগ করেছেন বেজিং। ফু কংয়ের কথায়, গাজায় ৪২ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। অনাহার এবং লাখ লাখ নারী ও শিশুকে বাস্তুচ্যুত করার পরও পশ্চিমা দেশের বিবেক জাগ্রত হচ্ছে না। তাই মুসলমানদের তথাকথিত মানবাধিকার রক্ষা করা সবচেয়ে বড় মিথ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়। চিনা রাষ্ট্রদূত বলেছেন, “মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সবচেয়ে বেশি মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। নিঃসন্দেহে গাজার ঘটনায় বেশি মনোযোগী হওয়া উচিত।”
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার পশ্চিমা দেশগুলোর একটি গোষ্ঠী জোর করে আটক উইঘুর মুসলিম ও তিব্বতিদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। পরিস্থিতির মূল্যায়নের জন্য নিরপেক্ষ মানবাধিকার পর্যবেক্ষকদের সে সব স্থাপন পরিদর্শনের অনুমতি প্রদানের জন্য চিনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশগুলি। মানবাধিকার সম্পর্কে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকে অস্ট্রলিয়ায় রাষ্ট্রদূত জেমস লার্সন বলেন, ‘স্বচ্ছতা ও স্পষ্টতা উদ্বেগ নিরসনের চাবিকাঠি। আমরা চীনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যে তারা যেন রাষ্ট্রসঙ্ঘসহ নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের জিনজিয়াং ও তিব্বতে বিনা বাধায় অর্থবহ প্রবেশের অনুমতি দেয়।’ চিনের জিনজিয়াং-এর, ‘পূণ:শিক্ষা শিবিরে ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমকে বন্দী করে রেখেছে বলে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো অভিযোগ করেছে। চিন তিব্বতে স্বাধীনতার বিরুদ্ধেও অভিযান চালিয়েছে।’ লার্সেন, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জার্মানি ও জাপানসহ ১৪টি রাষ্ট্র এই বিবৃতি দেন।