পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: একজন শিল্পী জীবন কি এইভাবেই শেষ হওয়ার ছিল! সেই প্রশ্নই উঠছে বার বার। কেকে-নেই, কেকে প্রয়াত এই কথাটাই যেন বড় বেমানান। কে কে এক আবেগের নাম, উন্মাদনার। গান গাইতে জীবনের অন্তিম গান গাইলেন তিনি।
কলকাতায় নজরুল মঞ্চে কলেজ ফেস্টের অনুষ্ঠান। আর দুদিনের লাইভ প্রোগ্রাম ছিল তার। তার আগেই এক ফেসবুক লাইভ করে তিনি তার অনুষ্ঠানের কথা জানিয়েছিলেন। আর সেই কলকাতায় নজরুল মঞ্চে গান গাইতে গাইতে চলে গেল কৃষ্ণকুমার কুন্নথ। বলিউডে তিনি কেকে নামেই পরিচিত ছিলেন। স্টেজে গান গাইতে গাইতেই বার বার ঘাম মুছতে দেখা যায়। স্পট লাইট নিভিয়ে দিতেও বলেন তিনি। চিকিৎসকদের প্রাথমিক ধারণা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে এই সংগীতশিল্পীর।
মঙ্গলবারের লাইভ অনুষ্ঠানের একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, ভিড়ে ঠাসা নজরুল মঞ্চ। প্রেক্ষাগৃহে নানা রকমের আলোর ঝলকানি। আর গানের মাঝে বার বার রুমালে মুখ-কপালের ঘাম মুছছেন। জল খাচ্ছেন। পাশ থেকে মঞ্চে থাকা একজন হিন্দিতে বলে উঠলেন, ভীষণ গরম। শিল্পী তার কথায় সম্মতি দেন। এর পর হাতের ইশারায় স্পট লাইট নিভিয়ে দিতে ইশারা করেন তিনি। প্রশ্ন উঠেছে, কেকে কি আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন? নাকি গান গাইতে হঠাৎ অসুস্থ বোধ করেন তিনি।
অভিযোগ উঠেছ, প্রেক্ষাগৃহে প্রচণ্ড গরম ছিল। এসি ঠিকমতো কাজ করছিল না। আসনের তুলনায় দর্শকভর্তি ছিল প্রেক্ষাগৃহ। শেষ গান গেয়ে কেকে যখন মঞ্চ ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন, তখনও দেখা গেছে, কপাল বেয়ে ঘাম গড়াচ্ছে শিল্পীর। শরীরও ঘামে ভেজা। এর পর সেখান থেকে মধ্য কলকাতার হোটেলে ফেরেন তিনি। গতকাল অনুষ্ঠান শেষে ফিরে যাওয়ার সময় গাড়িতে শীত করছিল কে কে-র। এসি বন্ধ করে দিতে হয়। হাতে-পায়ে ক্র্যাম্প ধরতে শুরু করে। হোটেলে ফিরে অনুরাগীদের ডাকে সাড়া দিয়ে ছবিও তোলেন কে কে।
নজরুল মঞ্চে কলেজের গানের অনুষ্ঠান থেকে হোটেলে ফিরে বমি করেন কে কে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা। দেহের কপাল ও ঠোঁটে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। কে কে-র মৃত্যুতে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে নিউ মার্কেট থানায়।
তবে শিল্পীর মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। এদিন গ্র্যান্ড হোটেলে যান কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট সিপি ক্রাইম মুরলীধর শর্মা ও ডিসি সেন্ট্রাল রূপেশ কুমার। গ্র্যান্ড হোটেলের শিফট ম্যানেজার, হোটেল কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশ আধিকারিকরা। হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।