৩০ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পঞ্চায়েত ভোটে ছয় জেলায় সিপিএমের সঙ্গে অঘোষিত জোট গড়তে ঝাঁপাচ্ছে বিজেপি

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, শুক্রবার
  • / 11

নিজস্ব প্রতিনিধি: তৃণমূল কংগ্রেসের জয়রথ রুখতে ইতিমধ্যেই শাসকদলের বিরুদ্ধে মহাজোটে সিপিএম, কংগ্রেসকে চেয়ে সওয়াল করেছেন বঙ্গ বিজেপির মুখিয়া সুকান্ত মজুমদার। আর দলের প্রধান সেনাপতির সেই বার্তার পরেই অন্তত ছয় জেলায় সিপিএমের সঙ্গে জোট গড়ার জন্য ঝাঁপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পদ্ম শিবির। ওই ছয় জেলা হল, নদিয়া, মালদা, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া পশ্চিম মেদিনীপুর ও বীরভূম। গত পঞ্চায়েত ভোটেও ওই ছয় জেলায় অলিখিত রাম-বাম জোট হয়েছিল। সিপিএমের সঙ্গে জোট গড়ার দায়িত্বে থাকা রাজ্য বিজেপির এক নেতা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, সিপিএম নেতৃত্বের সঙ্গে জোট গড়ার জন্য প্রাথমিকভাবে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। উৎসব মিটে যাওয়ার পরে জোট গড়ার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কোমর কষে ঝাঁপানো হবে।

রাজ্য বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ছয় জেলায় রাজ্যের পূর্বতন শাসকদলের সঙ্গে জোট গড়ার জন্য ঝাঁপানো হচ্ছে ওই জেলাগুলিতে সিপিএমের বেশ ভাল শক্তি রয়েছে। গত বছর ওই ছয় জেলায় অলিখিত জোট গড়ার সুফল মিলেছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের জয়রথ রুখে দেওয়া গিয়েছিল।

জেলা পরিষদ দখল সম্ভব না হলেও গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে ভাল সংখ্যক আসনে তৃণমূলকে হারানো সম্ভব হয়েছিল। এবারে শিক্ষক নিয়োগ ও শাসকদলের নেতাদের দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসার পরে সাধারণ মানুষের মনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। বহু জায়গাতে তৃণমূল কংগ্রেসের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। সাংগঠনিকভাবে রাজ্যের শাসকদল অনেকটা দুর্বল হয়ে গিয়েছে। সেই সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য কোমর কষে ঝাঁপানো হবে।

অলিখিত জোট গড়তে যাতে সমঝোতা সূত্র নিয়ে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য কিছুটা ত্যাগের রাস্তায় হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পদ্ম শিবির। সূত্রের খবর, যে সব গ্রাম পঞ্চায়েতে বর্তমানে সিপিএম বিরোধী দল হিসেবে রয়েছে কিংবা যথেষ্ট সংখ্যক সদস্য রয়েছে, সেখানে অন্তত ৪০ শতাংশ আসন ছাড়া হবে রাজ্যের পূর্বতন শাসকদলকে। আর বাকি জায়গায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ আসন ছেড়ে দেওয়া হবে।

প্রয়োজন হলে যে সব আসনে অলিখিত জোট হবে, সেখানে দুই দলের প্রার্থীরাই রাজনৈতিক পতাকা ছেড়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়বেন। জেতার পরে তাঁরা নিজের নিজের দলে ফের যোগ দেবেন।

বিজেপি নেতারা অঙ্ক কষে দেখেছেন, ছয় জেলায় যদি সিপিএমের সঙ্গে অলিখিত জোট গড়া যায় তাহলে জেলা পরিষদ দখল করা সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিরও দখল নেওয়া যাবে। রাজ্য বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘দলের বর্তমান যে হাল তাতে ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশের বেশি আসনে প্রার্থী দেওয়া সম্ভব হবে না। অর্থাৎ বিনা ভোটেই শাসকদলের পক্ষে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ আসন জেতার সম্ভাবনা থাকবে। সেই সম্ভাবনা নষ্ট করতে সিপিএমের সঙ্গে অলিখিত জোটের পথে এগনো হচ্ছে। যাতে আমরা যেখানে প্রার্থী দিতে পারব না, সেখানে সিপিএম প্রার্থী দাঁড় করিয়ে তৃণমূলের নিষ্কন্টক জয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।’

বিজেপির সঙ্গে জোটের বিষয়ে অবশ্য ছয় জেলার সিপিএম নেতৃত্ব এই মুহূর্তে কিছু জানাতে রাজি হননি।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

পঞ্চায়েত ভোটে ছয় জেলায় সিপিএমের সঙ্গে অঘোষিত জোট গড়তে ঝাঁপাচ্ছে বিজেপি

আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, শুক্রবার

নিজস্ব প্রতিনিধি: তৃণমূল কংগ্রেসের জয়রথ রুখতে ইতিমধ্যেই শাসকদলের বিরুদ্ধে মহাজোটে সিপিএম, কংগ্রেসকে চেয়ে সওয়াল করেছেন বঙ্গ বিজেপির মুখিয়া সুকান্ত মজুমদার। আর দলের প্রধান সেনাপতির সেই বার্তার পরেই অন্তত ছয় জেলায় সিপিএমের সঙ্গে জোট গড়ার জন্য ঝাঁপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পদ্ম শিবির। ওই ছয় জেলা হল, নদিয়া, মালদা, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া পশ্চিম মেদিনীপুর ও বীরভূম। গত পঞ্চায়েত ভোটেও ওই ছয় জেলায় অলিখিত রাম-বাম জোট হয়েছিল। সিপিএমের সঙ্গে জোট গড়ার দায়িত্বে থাকা রাজ্য বিজেপির এক নেতা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, সিপিএম নেতৃত্বের সঙ্গে জোট গড়ার জন্য প্রাথমিকভাবে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। উৎসব মিটে যাওয়ার পরে জোট গড়ার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কোমর কষে ঝাঁপানো হবে।

রাজ্য বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ছয় জেলায় রাজ্যের পূর্বতন শাসকদলের সঙ্গে জোট গড়ার জন্য ঝাঁপানো হচ্ছে ওই জেলাগুলিতে সিপিএমের বেশ ভাল শক্তি রয়েছে। গত বছর ওই ছয় জেলায় অলিখিত জোট গড়ার সুফল মিলেছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের জয়রথ রুখে দেওয়া গিয়েছিল।

জেলা পরিষদ দখল সম্ভব না হলেও গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে ভাল সংখ্যক আসনে তৃণমূলকে হারানো সম্ভব হয়েছিল। এবারে শিক্ষক নিয়োগ ও শাসকদলের নেতাদের দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসার পরে সাধারণ মানুষের মনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। বহু জায়গাতে তৃণমূল কংগ্রেসের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। সাংগঠনিকভাবে রাজ্যের শাসকদল অনেকটা দুর্বল হয়ে গিয়েছে। সেই সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য কোমর কষে ঝাঁপানো হবে।

অলিখিত জোট গড়তে যাতে সমঝোতা সূত্র নিয়ে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য কিছুটা ত্যাগের রাস্তায় হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পদ্ম শিবির। সূত্রের খবর, যে সব গ্রাম পঞ্চায়েতে বর্তমানে সিপিএম বিরোধী দল হিসেবে রয়েছে কিংবা যথেষ্ট সংখ্যক সদস্য রয়েছে, সেখানে অন্তত ৪০ শতাংশ আসন ছাড়া হবে রাজ্যের পূর্বতন শাসকদলকে। আর বাকি জায়গায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ আসন ছেড়ে দেওয়া হবে।

প্রয়োজন হলে যে সব আসনে অলিখিত জোট হবে, সেখানে দুই দলের প্রার্থীরাই রাজনৈতিক পতাকা ছেড়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়বেন। জেতার পরে তাঁরা নিজের নিজের দলে ফের যোগ দেবেন।

বিজেপি নেতারা অঙ্ক কষে দেখেছেন, ছয় জেলায় যদি সিপিএমের সঙ্গে অলিখিত জোট গড়া যায় তাহলে জেলা পরিষদ দখল করা সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিরও দখল নেওয়া যাবে। রাজ্য বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘দলের বর্তমান যে হাল তাতে ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশের বেশি আসনে প্রার্থী দেওয়া সম্ভব হবে না। অর্থাৎ বিনা ভোটেই শাসকদলের পক্ষে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ আসন জেতার সম্ভাবনা থাকবে। সেই সম্ভাবনা নষ্ট করতে সিপিএমের সঙ্গে অলিখিত জোটের পথে এগনো হচ্ছে। যাতে আমরা যেখানে প্রার্থী দিতে পারব না, সেখানে সিপিএম প্রার্থী দাঁড় করিয়ে তৃণমূলের নিষ্কন্টক জয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।’

বিজেপির সঙ্গে জোটের বিষয়ে অবশ্য ছয় জেলার সিপিএম নেতৃত্ব এই মুহূর্তে কিছু জানাতে রাজি হননি।