পুবের কলম প্রতিবেদক: বাংলা-বিহারেই সবচেয়ে বেশি আর্সেনিকের প্রকোপ, পরিবেশ আদালতে রিপোর্ট পেশ করল কেন্দ্র সরকার। জাতীয় পরিবেশ আদালতে কেন্দ্র জানিয়েছে, আর্সেনিক মিশ্রিত ভূগর্ভস্থ জলের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহারে। কেন্দ্রের বক্তব্য, কৃষিক্ষেত্রে ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহার করা হয়। সে ক্ষেত্রে এই আর্সেনিক মিশ্রিত দূষিত জলের কারণে চাষের জমিতে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা থাকে। মূলত ভূগর্ভস্থ জলের থেকেই চাষের জমিতে আর্সেনিক প্রবেশ করে এবং এই আর্সেনিক ফলনে মিশে খাদ্যশৃঙ্খলে প্রভাব ফেলার আশঙ্কা সৃষ্টি করে।
২০২২ সালের জলশক্তি মন্ত্রকের হিসাব অনুযায়ী, এ রাজ্যের কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, হুগলি, হাওড়া, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার কিছু অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিক বেশি মাত্রায় (প্রতি লিটার ০.০১ মিলিগ্রামের বেশি) রয়েছে।
জাতীয় পরিবেশ আদালতে কেন্দ্র আরও জানিয়েছে, ধানের উপরেও এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, ধানচাষের জন্য জলের প্রয়োজন বেশি হয়। এর প্রভাব অনেকটা বড় অঞ্চলে ছড়াতে পারে বলেও আশঙ্কা কেন্দ্রের। কারণ, আর্সেনিক দূষণ যে অঞ্চলে বেশি, সেখানকার শস্য অন্যত্রও সরবরাহ হয়। সে ক্ষেত্রে যেখানে মাটিতে আর্সেনিক দূষণের প্রভাব নেই, সেই অঞ্চলের খাদ্যাভ্যাসেও এর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
রিপোর্টে কেন্দ্র জানিয়েছে, সাধারণত ফসলের মধ্যে আর্সেনিক ছড়ায় প্রথমে শিকড়ে, তার পরে কাণ্ডে এবং শেষে পাতায়। সে ক্ষেত্রে যেগুলি ফসলের মূলের অংশ কিংবা পাতার অংশ খাওয়া হয়, সেগুলিতে আর্সেনিক দূষণের প্রভাব পড়ার আশঙ্কা বেশি। যেমন যে কোনও ধরনের শাক, বিট, মুলো ইত্যাদির উপর আর্সেনিক দূষণের প্রভাব বেশি পড়ার আশঙ্কা বেশি থাকে বলে মনে করছে কেন্দ্র। তুলনায় বেগুন, টম্যাটো (ফলের অংশ) বা শস্যের উপর আর্সেনিকের প্রভাব কম পড়ে।