পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: নবী সা.-র বিরুদ্ধে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে কিছু মানুষ অপ্রচার চালিয়ে আসছে। অথচ গুগলে ‘ওয়ার্ল্ড গ্রেটেস্ট ম্যান’ টাইপ করলেই উঠে আসে নবী সা.-র নাম। গত দেড় হাজার বছর ধরে, বর্ণ, ধর্ম নির্বিশেষে অজস্র সাহিত্যিক, গবেষক, রাষ্ট্রনায়ক তাঁকে নিয়ে হাজার হাজার বই লিখেছেন। ব্যতিক্রম নন অসমের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী ভারতরত্ন গোপীনাথ বরদোলোই।
অসমীয়া ভাষায় নবী সা.-র জীবনী রচনা করেন তিনি।
১৯৪২ সালের ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রাক্কালে জেলে বসে একাধিক সাহিত্য রচনা করেছিলেন গোপীনাথ বরদোলোই। তাঁর মধ্যে অন্যতম ছিল নবী সা.-এর জীবনী। লেখার শুরুতেই তিনি জানান, আমি যীশু, বুদ্ধ, শ্রী রামচন্দ্রের জীবনী লিখেছি। তবে মুহাম্মদ-এর জীবনী লিখে আমি যা শান্তি অনুভব করেছি তা আমার কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
গোপীনাথ বরদোলোই য়ের রচিত নবী সা.-র জীবনীতেতাঁর জন্ম থেকে ওফাত (মৃত্যু) প্রতিটি জিনিস লিপিবদ্ধ রয়েছে।
বরদোলোই লিখেছেন, কীভাবে নবী ইসলামের প্রচার শুরু করেন। রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়দের হাতে কীভাবে তাঁকে ক্ষত-বিক্ষত হতে হয়। কেন নিজ বাসভূমি ছেড়ে তাঁকে মদিনায় হিজরত করতে হয়। নিজের রক্তের সম্পর্ককে দুশমন দেখেও অসাধারণ ধৈর্য ধারণ করেছিলেন তিনি। বরদোলোই তাঁর বইতে আরও লেখেন, নবী মুহাম্মদ কখনোই তাঁর শত্রুদের বিরুদ্ধে ব্যঙ্গাত্মক এবং কঠোর শধ ব্যবহার করেননি। যুদ্ধবন্দিদের উপর কখনও জুলুম করেননি। তাঁর শাসনামলে জবরদস্তির কোনও স্থান ছিল না।
also read:শহিদ ইয়াহিয়া সিনওয়ার: প্রজ্ঞাসম্পন্ন নির্ভীক সিপাহসালার
আলোচনা, চুক্তি এবং ন্যায়বিচার ছিল তাঁর শাসনের মূল।
বন্ধু-শত্রু সকলের জন্য নিরাপত্তা প্রদানে বিশ্বাসী ছিলেন তিনি। তাঁর কাছে শত্রু আশ্রয় চাইলে তিনি তাঁকেও নিরাপত্তা দান করতেন। তরবারি নয় বিশ্ব ময়দানে ইসলামের বিজয় এনেছিল, নবীর অত্যন্ত সরল জীবন, তাঁর নিঃস্বার্থপরায়নতা, প্রতিশ্রুতি রক্ষা এবং নির্ভীকতা। বন্ধু এবং অনুসারীদের প্রতি ভালোবাসা এবং আল্লাহর প্রতি তাঁর আস্থা। জীবনীটির শেষের দিকে বরদোলোই ইসলামের নামে অন্যদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নিপীড়ন সম্পর্কে কথা বলেছেন। তিনি লেখেন, বর্তমান সময়ের ইসলাম আর নবী সা.-র শেখানো ইসলামে ব্যবধান হয়ে গিয়েছে।
নবী সা. সকল ধর্মকে সম্মান করতেন।
ভিন ধর্মীদের বিরুদ্ধে কখনও কুমন্তব্য পোষণ করতেন না। তাঁর শাসনামলে সকলে নিরাপদে ছিলেন। নবী সা.-কে নিয়ে জীবনী লেখার পর বরদোলোই বলেছিলেন, মক্কার কুরাইশ পরিবারে তাঁর জন্ম। আল-আমিন উপাধি, সিরিয়ায় বাণিজ্য, হেরা পর্বতের ধ্যানমগ্নতা, মক্কার দাওয়াত, তায়েফের ক্ষত, মদিনায় হিজরত, বদরের যুদ্ধ, বায়তুল মুকাদ্দাস থেকে ঊর্ধ্বগমন, আবার মক্কায় ফেরা, বিদায় হজ। বহুমুখে বহুজনে বহুশতাধী ধরে বাতাসে বাতাসে গুণগুণ করে এ সব কথা। সবাই সব জানে। অথচ লিখতে গেলে মনে হয় যেন কিছুই লেখা হল না। মনে হয় বহু কথা বলা হল না।