৩০ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে? সঙ্গীতে প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুললেন AR Rahman

আবুল খায়ের
  • আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 133

পুবের কলম প্রতিবেদকঃ তাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছিলেন সঙ্গীতশিল্পী অভিজিৎ ভট্টাচার্য। তাঁর অভিযোগ ছিল প্রযুক্তির ব্যবহার করে বহু বাদ্যশিল্পীকে বেকার করে দিয়েছেন রহমান (AR Rahman)। আর তারপরেই, অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান গায়ক অভিজিৎ ভট্টাচার্যের করা মন্তব্যের জবাবও  দিয়েছেন। তবে এবার সঙ্গীতজগতে এআইয়ের ব্যবহার নিয়ে মারাত্মক ক্ষোভ প্রকাশ করলেন এআর রহমান।

সম্প্রতি সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের মুখোমুখি হয়ে রহমান (AR Rahman) আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, “এ তো অক্সিজেনে বিষ মেশানোর মতো, তবে বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে? জনপ্রিয় শিল্পীদের কণ্ঠে বিখ্যাত কিছু গান তো এতটাই অশ্রাব্য! আমি জানি না আজকাল কীসব ঘটছে। এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার অতি অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার। নইলে ভীষণ বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে।” অস্কার, গ্র্যামি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী অবশ্য এখানেই থামেননি। তাঁর মত, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এপ্রসঙ্গে রহমানের মন্তব্য, “প্রতিটি জিনিসেরই ভালো-খারাপ উভয় দিকটাই থাকে। কোনওদিন নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নের সুযোগ পাননি, এমন মানুষদের জন্য এআই-এর ভালো দিকগুলি ব্যবহার করুন। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অতিরিক্ত অপব্যবহার, আখেরে আমাদের জন্যই খারাপ হবে। এ যেন অক্সিজেনের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার মতো।”

অভিজিতের উত্তরে রহমান (AR Rahman) বলেন, ‘সব কিছুর জন্য আমাকে দোষারোপ করা ভাল। আমি এখনও অভিজিৎকে ভালোবাসি, এবং আমি তাকে কেক পাঠাব। এছাড়াও, এটা তার মতামত।  এবং একটি মতামত থাকলে কোনো ক্ষতি নেই।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, তিনি কিভাবে প্রচুর লাইভ যন্ত্র সঙ্গীত শিল্পীদের নিয়ে কাজ করেন। রহমানের কথায়, ‘আমি সম্প্রতি দুবাইতে ৬০ জন মহিলা নিয়ে একটি অর্কেস্ট্রা গঠন করেছি। তাদের প্রতি মাসে মাইনে দেওয়া হচ্ছে। বীমা, স্বাস্থ্য সুবিধা সহ সবরকমের সুবিধা পাচ্ছেন তাঁরা। আমি যে কোনো ছবিতেই কাজ করি না কেন, সে ‘ছাভা’ হোক বা ‘পোন্নিয়িন সেলভান’, প্রায় ২০০-৩০০ যন্ত্র সঙ্গীতশিল্পী জড়িত থাকে। কিছু গানে ১০০ জনের বেশি মানুষ কাজ করে। আমি ছবি পোস্ট করি না বা তা দেখাই না, তাই মানুষ সবসময় জানে না।’

সঙ্গীত রচনায় প্রযুক্তির ব্যবহারের বিষয়ে রহমান (AR Rahman) আরও বলেন, “আপনার সঙ্গীতের দক্ষতা যত বেশি পরিশীলিত হবে,  লাইভ বাদ্যযন্ত্রের মূল্য তত বেশি বুঝতে পারবেন। কম্পিউটার হল সুরের নকশা এবং সঙ্গীত পরিশোধনের জন্য একটি সরঞ্জাম। আমরা বারবার রেকর্ডিং করে এবং নেওয়া অংশ বাতিল করার জন্য সঙ্গীতশিল্পীদের ডাকতে পারি না-সব প্রাথমিক কাজ ডিজিটালভাবে করা হয়, এবং চূড়ান্ত রেকর্ডিং সবসময় লাইভ করা হয়। আমার সঙ্গে কাজ করেছেন এমন প্রযোজকদের থেকে একটি গানে কতজন সঙ্গীতশিল্পী জড়িত ছিলেন তা কেউ যাচাই করতে পারেন।’

 

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে? সঙ্গীতে প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুললেন AR Rahman

আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম প্রতিবেদকঃ তাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছিলেন সঙ্গীতশিল্পী অভিজিৎ ভট্টাচার্য। তাঁর অভিযোগ ছিল প্রযুক্তির ব্যবহার করে বহু বাদ্যশিল্পীকে বেকার করে দিয়েছেন রহমান (AR Rahman)। আর তারপরেই, অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান গায়ক অভিজিৎ ভট্টাচার্যের করা মন্তব্যের জবাবও  দিয়েছেন। তবে এবার সঙ্গীতজগতে এআইয়ের ব্যবহার নিয়ে মারাত্মক ক্ষোভ প্রকাশ করলেন এআর রহমান।

সম্প্রতি সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের মুখোমুখি হয়ে রহমান (AR Rahman) আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, “এ তো অক্সিজেনে বিষ মেশানোর মতো, তবে বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে? জনপ্রিয় শিল্পীদের কণ্ঠে বিখ্যাত কিছু গান তো এতটাই অশ্রাব্য! আমি জানি না আজকাল কীসব ঘটছে। এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার অতি অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার। নইলে ভীষণ বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে।” অস্কার, গ্র্যামি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী অবশ্য এখানেই থামেননি। তাঁর মত, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এপ্রসঙ্গে রহমানের মন্তব্য, “প্রতিটি জিনিসেরই ভালো-খারাপ উভয় দিকটাই থাকে। কোনওদিন নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নের সুযোগ পাননি, এমন মানুষদের জন্য এআই-এর ভালো দিকগুলি ব্যবহার করুন। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অতিরিক্ত অপব্যবহার, আখেরে আমাদের জন্যই খারাপ হবে। এ যেন অক্সিজেনের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার মতো।”

অভিজিতের উত্তরে রহমান (AR Rahman) বলেন, ‘সব কিছুর জন্য আমাকে দোষারোপ করা ভাল। আমি এখনও অভিজিৎকে ভালোবাসি, এবং আমি তাকে কেক পাঠাব। এছাড়াও, এটা তার মতামত।  এবং একটি মতামত থাকলে কোনো ক্ষতি নেই।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, তিনি কিভাবে প্রচুর লাইভ যন্ত্র সঙ্গীত শিল্পীদের নিয়ে কাজ করেন। রহমানের কথায়, ‘আমি সম্প্রতি দুবাইতে ৬০ জন মহিলা নিয়ে একটি অর্কেস্ট্রা গঠন করেছি। তাদের প্রতি মাসে মাইনে দেওয়া হচ্ছে। বীমা, স্বাস্থ্য সুবিধা সহ সবরকমের সুবিধা পাচ্ছেন তাঁরা। আমি যে কোনো ছবিতেই কাজ করি না কেন, সে ‘ছাভা’ হোক বা ‘পোন্নিয়িন সেলভান’, প্রায় ২০০-৩০০ যন্ত্র সঙ্গীতশিল্পী জড়িত থাকে। কিছু গানে ১০০ জনের বেশি মানুষ কাজ করে। আমি ছবি পোস্ট করি না বা তা দেখাই না, তাই মানুষ সবসময় জানে না।’

সঙ্গীত রচনায় প্রযুক্তির ব্যবহারের বিষয়ে রহমান (AR Rahman) আরও বলেন, “আপনার সঙ্গীতের দক্ষতা যত বেশি পরিশীলিত হবে,  লাইভ বাদ্যযন্ত্রের মূল্য তত বেশি বুঝতে পারবেন। কম্পিউটার হল সুরের নকশা এবং সঙ্গীত পরিশোধনের জন্য একটি সরঞ্জাম। আমরা বারবার রেকর্ডিং করে এবং নেওয়া অংশ বাতিল করার জন্য সঙ্গীতশিল্পীদের ডাকতে পারি না-সব প্রাথমিক কাজ ডিজিটালভাবে করা হয়, এবং চূড়ান্ত রেকর্ডিং সবসময় লাইভ করা হয়। আমার সঙ্গে কাজ করেছেন এমন প্রযোজকদের থেকে একটি গানে কতজন সঙ্গীতশিল্পী জড়িত ছিলেন তা কেউ যাচাই করতে পারেন।’