নয়াদিল্লি, ৭ জানুয়ারি: নিগমবোধ ঘাটে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্যের জায়গা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এর আগে কোনও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শেষকৃত্য এই ঘাটে হয়নি। তাহলে ড. মনমোহনের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কেন? প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস নেতৃত্ব।
এর মাঝেই ২০২০-তে প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সমাধি নির্মাণের জন্য দিল্লির রাজঘাটে জমি বরাদ্দ করল কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক। ঠিক এখানেই প্রশ্ন উঠছে রাজঘাটে ইন্দিরা গান্ধি, রাজীব গান্ধি, অটলবিহারী বাজপেয়ীদের স্মৃতিসৌধ রয়েছে। তাহলে কেন রাজঘাটে ড. মনমোহনের স্মৃতি সৌধ তৈরি হবে না। রাজঘাটেই ড. মনমোহনের স্মৃতিসৌধের দাবি জানিয়ে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে।
প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সমাধি নির্মাণের জন্য রাজধানী দিল্লির রাজঘাটে জমি চিহ্নিত করেছে কেন্দ্র সরকার। প্রণব মুখার্জির মেয়ে শর্মিষ্ঠা মুখার্জি ট্যুইট করে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর এই অপ্রত্যাশিত উদারতা ও কৃতজ্ঞতায় আমি খুবই অভিভূত।’
কিন্তু নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তাঁর সঙ্গে প্রণবের সখ্যতা ছিল চোখে পড়ার মতো। মোদি-প্রণবের এই বোঝাপড়া কংগ্রেসের দুঁদে রাজনীতিকদের নাপসন্দ ছিল। এছাড়াও নাগপুরে আরএসএসের সদর দফতরে গিয়ে বত্তৃতা দেন প্রণব মুখার্জি। এই ঘটনাতে কংগ্রেসের সঙ্গে প্রণবের তিক্ততা আরও বাড়িয়ে দেয়। প্রণবকন্যা শর্মিষ্ঠাও সেসময় তাৎপর্যপূর্ণভাবে বাবার এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছিলেন।
শর্মিষ্ঠা প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে তাঁর বৈঠক এবং কেন্দ্রীয় নগর ও আবাসন মন্ত্রকের চিঠি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। তিনি বলেন, বাবা আর এই পৃথিবীতে নেই এবং তিনি প্রশংসা বা সমালোচনার ঊর্ধ্বে, কিন্তু তাঁর মেয়ে হিসেবে আমি আমার আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না।
শর্মিষ্ঠা মুখার্জির সঙ্গে কংগ্রেসের দূরত্ব যে বেড়েছে তা সবারই জানা। তিনি যেকোনও দিন গেরুয়া শিবিরে যোগ দিতে পারেন বলে রাজনৈতিক মহলে জোর গুঞ্জন। ২৬ ডিসেম্বর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুর পর কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি বৈঠক করে তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে এবং তাঁর স্মৃতিসৌধ নির্মাণের প্রস্তাব পাস করেছিল। তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন প্রণবকন্যা শর্মিষ্ঠা মুখার্জি। কংগ্রেস-সহ আমজনতার মত, ড. মনমোহন সিংয়ের মতো শিক্ষিত এবং যোগ্য প্রধানমন্ত্রীকে যথাযোগ্য সম্মান দিয়ে রাজঘাটে তাঁর স্মৃতিসৌধ নির্মাণের অনুমতি দিক মোদি সরকার।