১৬ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এখনও ট্যাবের টাকা মেলেনি সব স্কুল ও মাদ্রাসা পড়ুয়ার  

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার
  • / 60

পুবের কলম প্রতিবেদক: ট্যাবের টাকা নিয়ে দুর্ণীতির অভিযোগ  উঠছে। বহু পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকেনি।  এই নিয়ে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিচ্ছে শিক্ষা দফতর। স্কুলের পাশাপাশি  মাদ্রাসাগুলিতেও ট্যাবের টাকা মেটাতে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে।  তবে কোনও মাদ্রাসায় ট্যাবের টাকা বিতরণের ক্ষেত্রে কোনও  অভিযোগ আসেনি। এদিকে  বহু স্কুল ও মাদ্রাসায় এখনও    ট্যাবের টাকা প্রদান বাকী রয়েছে। সেই টাকা দেওয়ার কাজ শুরু করেছে স্কুল ও  মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর। স্কুল ও মাদ্রাসা বহু ছাত্রছাত্রী এ’নও ট্যাবের টাকা পায়নি। আর  এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মাদ্রাসার  শিক্ষক ও অভিাবকরা।

স্কুল শিক্ষককের অভিযোগ, সব  সময় স্কুলে ছাত্রছাত্রী  ও   শিক্ষকরা আগে সুযোগ সুবিধাগুলি পান। তার বহুদিন পর মাদ্রাসার শিক্ষকদের দেওয়া হয়। মাদ্রাসা ও স্কুলের মধ্যে   কেন  এই বৈষম্য রাস্তা হয়,  এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারের দৃষ্টি  আকর্ষণ করেছেন শিক্ষকরা। ট্যাবের টাকা প্রদান প্রসঙ্গে মাদ্রাসা  শিক্ষা অধিকর্তা আবিদ হোসেন বলেন, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির  ৬৯ হাজার পড়ুয়াকে ট্যাবের টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকী ৬ হাজার ছাত্রছাত্রীকে দ্রুত ট্যাবের টাকা প্রদান করা হবে। ব্যাঙ্ক  অ্যাকাউন্ট, কেওয়াইসি সহ একাধিক নথিতে ভুলের কারণে বাকী পড়ুয়াদের  টাকা প্রদানে বিলম্ব হয়েছে।  খুব দ্রুত পড়ুয়াদের টাকা প্রদান করা হবে।

এ বছর একাদশ-দ্বাদশে প্রায় ১৬ লক্ষ স্কুল পড়ুয়াকে রাজ্য সরকার ট্যাব দেবে। এর জন্য খরচ পড়বে ১৬০০ কোটি টাকা।  এর মধ্যে বহু পড়ুয়া এ’নও ট্যাব পায়নি।  অভিযোগ, কলকাতার ৫০০ স্কুল পড়ুয়া এখনও ট্যাবের টাকা পায়নি।  এর কারণ প্রসঙ্গে  শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, উপযুক্ত ডকুমেন্ট সাবমিট করা এবং পড়ুয়াদের কিছু ভুল ভ্রান্তির কারণেই এই সমস্যা হয়েছে। তবে সেই সমস্যাগুলি দ্রুত মিটিয়ে ট্যাবের টাকা প্রদান করা হবে।

স্কুল শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ট্যাবের টাকা প্রদানের  কাজ চলছিল। তবে কিছু সমস্যার কারণে বিলম্ব হয়েছে কিছুটা। পড়ুয়ারা দ্রুত এই টাকা পেয়ে যাবে। এই বিষয়ে শিক্ষক নেতাদের বক্তব্য,  স্কুলে বরাদ্দ নেই। চক ডাস্টার কেনার টাকা নেই।  সেখানে পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা  দেওয়া হচ্ছে। আর এই টাকায় মোবাইল বা ট্যাব কিনে তা ব্যবহারের ক্ষেত্রে অধিকাংশ পড়ুয়ার মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছে শিক্ষকদের একাংশ।

একাদশ-দ্বাদশ এবং ফাজিল মিলে মাদ্রাসায় ৭৫ হাজার ছাত্রছাত্রী  রয়েছে। ৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে শুধুমাত্র মাদ্রাসার জন্য। রাজ্য সরকারের ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের প্রায় ১৬ লক্ষ ছাত্রছাত্রীকে ট্যাব কিনতে টাকা দেওয়ার উদ্যোগ নেয় রাজ্য সরকার।

২০২১ সালে রাজ্য সরকার এই প্রকল্প চালু করে। প্রত্যেক বছর শিক্ষক দিবসের দিনে অর্থাৎ, ৫ সেপ্টেম্বর দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এ বছর শুধু দ্বাদশ নয়, একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদেরও টাকা দেওয়া হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের কথা বিধানসভায় বাজেট পেশের সময়েই জানানো হয়েছিল। এ জন্য অতিরিক্ত ৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দও করে অর্থ দফতর।

আরজি কর-কাণ্ডের জেরে বিক্ষোভের আবহে চলতি বছরে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান বাতিল করে রাজ্য সরকার। সেই সঙ্গে বাতিল হয় ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের অর্থ বিলি। শেষ মুহূর্তে বিলি বন্ধের সিদ্ধান্ত হলেও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল শিক্ষা দফতর। রাজ্যের সব জেলার ট্রেজারির ৮৭টি অ্যাকাউন্টে মোট ১,৩৩৩ কোটি ৫৭ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা খরচের নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

এখনও ট্যাবের টাকা মেলেনি সব স্কুল ও মাদ্রাসা পড়ুয়ার  

আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: ট্যাবের টাকা নিয়ে দুর্ণীতির অভিযোগ  উঠছে। বহু পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকেনি।  এই নিয়ে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিচ্ছে শিক্ষা দফতর। স্কুলের পাশাপাশি  মাদ্রাসাগুলিতেও ট্যাবের টাকা মেটাতে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে।  তবে কোনও মাদ্রাসায় ট্যাবের টাকা বিতরণের ক্ষেত্রে কোনও  অভিযোগ আসেনি। এদিকে  বহু স্কুল ও মাদ্রাসায় এখনও    ট্যাবের টাকা প্রদান বাকী রয়েছে। সেই টাকা দেওয়ার কাজ শুরু করেছে স্কুল ও  মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর। স্কুল ও মাদ্রাসা বহু ছাত্রছাত্রী এ’নও ট্যাবের টাকা পায়নি। আর  এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মাদ্রাসার  শিক্ষক ও অভিাবকরা।

স্কুল শিক্ষককের অভিযোগ, সব  সময় স্কুলে ছাত্রছাত্রী  ও   শিক্ষকরা আগে সুযোগ সুবিধাগুলি পান। তার বহুদিন পর মাদ্রাসার শিক্ষকদের দেওয়া হয়। মাদ্রাসা ও স্কুলের মধ্যে   কেন  এই বৈষম্য রাস্তা হয়,  এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারের দৃষ্টি  আকর্ষণ করেছেন শিক্ষকরা। ট্যাবের টাকা প্রদান প্রসঙ্গে মাদ্রাসা  শিক্ষা অধিকর্তা আবিদ হোসেন বলেন, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির  ৬৯ হাজার পড়ুয়াকে ট্যাবের টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকী ৬ হাজার ছাত্রছাত্রীকে দ্রুত ট্যাবের টাকা প্রদান করা হবে। ব্যাঙ্ক  অ্যাকাউন্ট, কেওয়াইসি সহ একাধিক নথিতে ভুলের কারণে বাকী পড়ুয়াদের  টাকা প্রদানে বিলম্ব হয়েছে।  খুব দ্রুত পড়ুয়াদের টাকা প্রদান করা হবে।

এ বছর একাদশ-দ্বাদশে প্রায় ১৬ লক্ষ স্কুল পড়ুয়াকে রাজ্য সরকার ট্যাব দেবে। এর জন্য খরচ পড়বে ১৬০০ কোটি টাকা।  এর মধ্যে বহু পড়ুয়া এ’নও ট্যাব পায়নি।  অভিযোগ, কলকাতার ৫০০ স্কুল পড়ুয়া এখনও ট্যাবের টাকা পায়নি।  এর কারণ প্রসঙ্গে  শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, উপযুক্ত ডকুমেন্ট সাবমিট করা এবং পড়ুয়াদের কিছু ভুল ভ্রান্তির কারণেই এই সমস্যা হয়েছে। তবে সেই সমস্যাগুলি দ্রুত মিটিয়ে ট্যাবের টাকা প্রদান করা হবে।

স্কুল শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ট্যাবের টাকা প্রদানের  কাজ চলছিল। তবে কিছু সমস্যার কারণে বিলম্ব হয়েছে কিছুটা। পড়ুয়ারা দ্রুত এই টাকা পেয়ে যাবে। এই বিষয়ে শিক্ষক নেতাদের বক্তব্য,  স্কুলে বরাদ্দ নেই। চক ডাস্টার কেনার টাকা নেই।  সেখানে পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা  দেওয়া হচ্ছে। আর এই টাকায় মোবাইল বা ট্যাব কিনে তা ব্যবহারের ক্ষেত্রে অধিকাংশ পড়ুয়ার মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছে শিক্ষকদের একাংশ।

একাদশ-দ্বাদশ এবং ফাজিল মিলে মাদ্রাসায় ৭৫ হাজার ছাত্রছাত্রী  রয়েছে। ৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে শুধুমাত্র মাদ্রাসার জন্য। রাজ্য সরকারের ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের প্রায় ১৬ লক্ষ ছাত্রছাত্রীকে ট্যাব কিনতে টাকা দেওয়ার উদ্যোগ নেয় রাজ্য সরকার।

২০২১ সালে রাজ্য সরকার এই প্রকল্প চালু করে। প্রত্যেক বছর শিক্ষক দিবসের দিনে অর্থাৎ, ৫ সেপ্টেম্বর দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এ বছর শুধু দ্বাদশ নয়, একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদেরও টাকা দেওয়া হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের কথা বিধানসভায় বাজেট পেশের সময়েই জানানো হয়েছিল। এ জন্য অতিরিক্ত ৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দও করে অর্থ দফতর।

আরজি কর-কাণ্ডের জেরে বিক্ষোভের আবহে চলতি বছরে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান বাতিল করে রাজ্য সরকার। সেই সঙ্গে বাতিল হয় ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের অর্থ বিলি। শেষ মুহূর্তে বিলি বন্ধের সিদ্ধান্ত হলেও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল শিক্ষা দফতর। রাজ্যের সব জেলার ট্রেজারির ৮৭টি অ্যাকাউন্টে মোট ১,৩৩৩ কোটি ৫৭ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা খরচের নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়।