ওয়াশিংটন: বুধবার প্রকাশিত হয়েছে মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসকে ইলেকটোরাল কলেজ ভোটে বড় ব্যবধানে পরাজিত করেছেন তিনি। ফলে দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসের মসনদে বসছেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মসনদে বসেই জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়ার বিষয়টি পাকাপাকিভাবে বন্ধ করতে চলেছেন ট্রাম্প। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির আসনে বসে প্রথম দিনেই এই বিষয়ে একটি নির্দেশিকায় স্বাক্ষর করবেন তিনি। ট্রাম্প-ভ্যানস ক্যাম্পেইনের অফিসিয়াল সাইটে এনিয়ে একটি পোস্টও করা হয়েছে। খসড়া নির্দেশিকা অনুযায়ী, ফেডারেল এজেন্সিগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হবে, আমেরিকায় জন্মালেই কোনো শিশুকে আর নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। মার্কিন নাগরিকত্ব পেতে গেলে কমপক্ষে সন্তানের একজন পিতা-মাতাকে মার্কিন নাগরিক অথবা আইনত স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।ক্ষ্ম এই নির্দেশ কার্যকর হলে অবৈধ অভিবাসীদের গর্ভে জন্ম নেওয়া শিশুদের জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব বন্ধ হয়ে যাবে না।
এই নির্দেশিকা কার্যকর হলে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খাবে প্রবাসী ভারতীয়রা। পিউ রিসার্চের করা মার্কিন জনশুমারির (২০২২) তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮৪ লাখ ভারতীয় বাস করেন। যার মধ্যে ৩৪ শতাংশ অর্থাৎ ১৬ লাখ ভারতীয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছেন। এই নয়া নির্দেশিকা লাগু হলে, গ্রিন কার্ডের অপেক্ষায় থাকা অভিবাসী ভারতীয়দের সন্তানরা আগামী দিনে আর জন্মসূত্রে আমেরিকার নাগরিক হতে পারবে না। ট্রাম্পের নয়া নীতি অনুযায়ী, প্রবাসী ভারতীয় সন্তানরা আর মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য হবে না।
Read More: মার্কিন চাপে হামাস নেতাদের দোহা ছাড়ার নির্দেশ কাতারের
এদিকে খসড়া নির্দেশিকা নিয়ে মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীকে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করার দাবি উঠেছে। ইতিমধ্যে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন অভিবাসী সমর্থকরা। তাদের যুক্তি, এই নির্দেশ কার্যকর হলে আদালতে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে ট্রাম্প সরকারকে। অভিবাসন বিষয়ক অ্যাটর্নি রাজীব এস খান্না ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে শিশুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। এটি নিশ্চিতভাবেই মার্কিন সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনীর লঙ্ঘন। ট্রাম্পের ভুল ব্যাখ্যার জবাবের জন্য সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ও রয়েছে।আরেক ইমিগ্রেশন অ্যাটর্নি গ্রেগ সিসকিন্ড টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘এনিয়ে অবশ্যই মামলা করা হবে। কারণ এটি চতুর্দশ সংশোধনীর লঙ্ঘন। আমাদের দেখতে হবে যে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে আসা বাসিন্দাদের সন্তানকে বাদ দেওয়ার জন্য কি পদক্ষেপ নিচ্ছে।’