Fri, September 20, 2024

ই-পেপার দেখুন

'দুঃখিত, আমি কথা বলতে পারছি না', সংবাদমাধ্যমকে এড়ালেন IAS পূজা খেদকর

Kibria Ansary

Published: 11 July, 2024, 06:05 PM
'দুঃখিত, আমি কথা বলতে পারছি না', সংবাদমাধ্যমকে এড়ালেন IAS পূজা খেদকর

মু্ম্বাই, ১১ জুলাই: ভুয়ো প্রতিবন্ধী এবং ওবিসি শংসাপত্র জমা দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছেন আইএএস অফিসার পূজা খেদকর। ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রভাব খাটিয়ে একাধিক অনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে মহিলার আইএএস-এর বিরুদ্ধে। ঘটনাকে ঘিরে তীব্র বির্তকের সৃষ্টি হয়।

সেই এবার প্রথম মুখ খুললেন আইএএস অফিসার পূজা খেদকর। জাতীয় স্তরের এক সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কিছুই বলতে চাননি তিনি। পূজা বলেছেন, এই বিষয়ে কথা বলার 'অনুমতি পাননি' তিনি। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্রের ওয়াশিমে নতুন দায়িত্ব পেয়ে তিনি খুশি।

২০২৩ ব্যাচের মহিলা আইএএস অফিসার হিসাবে তাঁর পদের অপব্যবহার করে খবরের শিরোনামে উঠে আসেন পূজা। অভিযোগ, নিজের ব্যক্তিগত অডি গাড়িতে সাইরেন, ভিআইপি নম্বর প্লেট এবং 'মহারাষ্ট্র সরকার' এর স্টিকার ব্যবহার করছিলেন তিনি। এমনকি ভালো পদের আশায় তিনি ভুয়ো প্রতিবন্ধী এবং ওবিসি শংসাপত্রও জমা দিয়েছেন। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই বির্তক শুরু হয় দেশজুড়ে। চাপে পড়ে একনাথ শিন্ডের সরকার।

তড়িঘড়ি বদলি করানো হয় পূজা খেদকরকে। এতদিন তিনি পুনেতে দায়িত্ব পালণ করছিলেন। এবার তাঁকে বদলি করে ওয়াশিমে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে খেদকর বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে কথা বলার অধিকার তাঁর নেই। তাঁর কথায়, "আমি ওয়াশিম জেলায় যোগদান করতে পেরে খুব খুশি এবং এখানে কাজ করার জন্য উদগ্রীব।" তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মহিলা আইএএস বলেন, "সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আমি এই বিষয়ে কিছু বলতে পারি না। তাই দুঃখিত, আমি কথা বলতে পারছি না।"

উল্লেখ্য, গতকালই আইএএস অফিসার ডঃ পূজা খেদকরের বিরুদ্ধে জাল শংসাপত্র জমা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তিনি মহারাষ্ট্র ক্যাডারের ২০২২ ব্যাচের আইএএস অফিসার। অভিযোগ, আইএএস পদে নিজের অবস্থান সুরক্ষিত রাখতে জাল প্রতিবন্ধী এবং ওবিসি শংসাপত্র জমা দেয়। যাকে ঘিরে তীব্র বির্তক তৈরি হয়।

সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে (CAT) জমা দেওয়া নথি অনুসারে, ডঃ খেদকর ওবিসি এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিভাগের অধীনে ইউপিএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তিনি তার আইএএস পোস্টিং পাওয়ার জন্য ইউপিএসসিতে একটি মানসিক অসুস্থতার শংসাপত্রও জমা দিয়েছিলেন। অভিযোগ, তার নির্বাচিত হওয়ার পরে, ডাঃ খেদকরকে তার প্রতিবন্ধী শংসাপত্র যাচাইয়ের জন্য দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সে (AIIMS) ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তবে ২০২২ সালের এপ্রিলে কোভিড-১৯ সংক্রমণের কারণ দেখিয়ে তিনি এইমসে মেডিকেল পরীক্ষার অংশ নেননি।

পর পর পাঁচবার মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ডাকা সত্ত্বেও তিনি বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে তা এড়িয়ে গিয়েছেন। পরে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ভুয়ো প্রতিবন্ধী যাচাইকরণ রিপোর্ট জমা দিয়ে পুণেতে প্রবেশনারি অফিসার হিসেবে যোগ দেন তিনি। ক্যাটে জমা দেওয়া শংসাপত্র নিয়ে চ্যালেঞ্জ জানায় ইউপিএসসি। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি পদে যোগ দিয়েছেন বলে অভিযোগ। প্রবেশনারি অফিসার হিসেবে যোগ দেওয়ার পর ডঃ খেদকর একাধিক দাবি করেন। এক ঠিকাদারের দোওয়া একটি অডি গাড়ি ব্যবহার করেন তিনি। সার্ভিস রুলস অনুযায়ী, সরকারি কাজে ব্যক্তিগত ঠিকাদারের গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন না অফিসাররা। এছাড়াও তিনি আইএএস অফিসার হিসাবে তার প্রভাব খাটিয়ে ব্যক্তিগত অডিতে একটি লাল বাতিও লাগিয়েছেন।

সূত্রের দাবি, ডঃ খেদকর পুনের কালেক্টরের ব্যক্তিগত চেম্বারও দখল করে নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। তিনি দাবি করেছিলেন, এটি আইএএস অফিসার হিসাবে তার চেয়ার ছিল। ওই আমলার আইনবিরুদ্ধ আচরণের জেরেই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। এরপরে সরকার তাকে পুনে থেকে বিদর্ভের ওয়াসিমে স্থানান্তরিত করে। নিয়ম অনুযায়ী, প্রথমেই তাঁর নিজের জেলা পুনেতে পোস্টিং হওয়া নিয়মে ছিল না। তবুও তিনি তাঁর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিজের জেলায় পোস্টিং নিয়েছিলেন।

Leave a comment