Tue, July 9, 2024

ই-পেপার দেখুন

সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারি কর্মীদের মত প্রকাশ নিষিদ্ধ যোগী রাজ্যে

ইমামা খাতুন

Published: 24 June, 2024, 06:41 PM
সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারি কর্মীদের মত প্রকাশ নিষিদ্ধ যোগী রাজ্যে


নয়াদিল্লি, ২৪ জুন: সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারি কর্মীদের মত প্রকাশ নিষিদ্ধ করল যোগী সরকার। সরকারি  নির্দেশে বলা হয়েছে, প্রিন্ট মিডিয়ায় সরকারি কর্মচারীদের নিবন্ধ লেখা এবং রেডিও সম্প্রচারে উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার আইন রয়েছে। সেই আইনের আওতায় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, ডিজিটাল নিউজ আউটলেট এবং নিউজ চ্যানেলগুলিকেও যুক্ত করা হয়েছে। এইসব প্ল্যাটফর্মগুলির ক্ষেত্রেও এবার থেকে প্রযোজ্য হবে।
সরকারি কর্মীদের বড় অংশ যোগী সরকারের এই আদেশের পর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ক্ষুব্ধ এক আধিকারিক যোগী সরকারকে পালটা নিশানা করে বলেছেন, এই যোগী সরকারই সরকারি কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের টিভি শো এবং অন্যান্য মিডিয়ার অনুষ্ঠানে সরকারি পরিকল্পনা প্রচার করতে বাধ্য করত। নিউজ চ্যানেলগুলোতে ইউনিফর্মধারী পুলিশ কর্মী বা কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করে সরকারের প্রশংসা করতে বাধ্য করা হত। রাজ্যে বিজেপির ফল খারাপ হওয়ায় ভয় পেয়েছে নেতৃত্ব। সরকারি কর্মীদের কার্যত ‘ভয়’ দেখানো হচ্ছে, যাঁরা বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প ও কাজের সমালোচনা করছেন। 
বুধবার (১৯ জুন) রাজ্যের সমস্ত অতিরিক্ত মুখ্য সচিব, প্রধান সচিব এবং সচিবদের জারি করা একটি সরকারী আদেশে, তাদের অধীনে কর্মরত কর্মচারীদের বিদ্যমান নিয়মের নতুন ব্যাখ্যা সম্পর্কে জানাতে বলা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে সরকারি কর্মচারীদের আচরণ বিধি-১৯৫৬ প্রিন্ট মিডিয়া এবং রেডিয়ো সম্পর্কিত। তবে এই আদেশে মিডিয়ার বিভিন্ন ফর্ম্যাটগুলিকে প্রসারিত করা হয়েছে। নয়া নির্দেশে  বলা হয়েছে,  নিউজ চ্যানেল, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি (ফেসবুক, এক্স, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রাম) এবং ডিজিটাল নিউজ পোর্টালগুলিও বর্তমানে মিডিয়ার অংশ, এই সমস্ত মাধ্যমগুলোর জন্যও প্রযোজ্য।
১৯৫৬ সালের ৬ নং বিধি অনুসারে, সরকারি কর্মচারীরা সরকারের অনুমতি ব্যতীত সংবাদপত্র বা সাময়িক প্রকাশনার মালিকানা, পরিচালনা, সম্পাদনা বা পরিচালনা করতে পারবেন না। অথবা তারা রেডিয়ো সম্প্রচার করতে পারবে না, সংবাদপত্র বা ম্যাগাজিনে নিবন্ধ লিখতে পারবেন না, অথবা বেনামে প্রকাশনার জন্য লিখতে পারবে না বা অনুমতি ছাড়া ছদ্মনামেও লিখতে পারবে না। তবে কোনও সাংস্কৃতিক, শৈল্পিক বা বৈজ্ঞানিক বিষয়গুলির সঙ্গে সম্পর্কিত হলে অনুমতির প্রয়োজন হয় না। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঊর্ধ্বতন আধিকারিক বলেন, ‘সরকারি কোনও সিদ্ধান্ত বা কাজের সমালোচনা রুখতেই এই আদেশ জারি হয়েছে।’ অন্য এক আধিকারিক বলেছেন, ‘আমলারা তাদের মতামত প্রকাশ্যে আনতে পারে না এবং আমলারা প্রকাশ্যে তাদের মতামত প্রকাশ করলে অরাজকতা হতে পারে এবং সরকারকে এর খেসারত দিতে হতে পারে।’  

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সচিব পদে  থাকা এক আমলা বলেন, আমলাদের তাদের সহকর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে করা পোস্টের জন্য সরকারের কাছ থেকে বিরূপ পদক্ষেপের সম্মুখীন হওয়ার বেশ কয়েকটি উদাহরণ রয়েছে। সম্প্রতি একজন সরকারি কর্মচারী এক সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ফল খারাপ হবে। তা নিয়ে যথেষ্ঠ তোলপাড় হয়েছিল। বিজেপির শীর্ষনেতারাও ভারতে পারেননি ফলাফল এতটা খারাপ হবে। সমালোচনায় ভয় পাচ্ছে যোগী সরকার? এই ধরনের ঘটনাগুলো রুখতেই কি যোগী সরকারের এমন কঠোর সিদ্ধান্ত? 
 

Leave a comment