Mon, July 1, 2024

ই-পেপার দেখুন

নিট-ইউজিসি নেট বিতর্কের মাঝেই কড়া আইন কেন্দ্রের, ১০ বছরের জেল সহ ১ কোটি জরিমানা

Bipasha Chakraborty

Published: 22 June, 2024, 06:09 PM
নিট-ইউজিসি নেট বিতর্কের মাঝেই কড়া আইন কেন্দ্রের, ১০ বছরের জেল সহ ১ কোটি জরিমানা


নয়াদিল্লি, ২২ জুন: ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট ও গবেষণার প্রবেশদ্বার নেট-এ অনিয়মের অভিযোগে উত্তাল দেশ। প্রশ্নফাঁস ও পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। বিতর্কের আবহে প্রশ্নফাঁস রুখতে বিশেষ আইন নিয়ে এল কেন্দ্রীয় সরকার। নিট ও ইউজিসি নেট পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডে কারুর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড, এবং ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
এদিকে বিতর্কের আবহে বাতিল হয়েছে ইউজিসি নেট। কিন্তু নিট কেন বাতিল হয়নি তা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান জানান, বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। সুপ্রিম কোর্ট যা সিদ্ধান্ত নেবে, তাই-ই চূড়ান্ত হবে। ইউজিসি-নেট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসকে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির 'প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা' বলেই উল্লেখ করেন ধর্মেন্দ্র প্রধান। দেশজুড়ে পরীক্ষা বাতিলের এই চাপানউতোরের মধ্যেই শুক্রবার 'অনিবার্য কারণে' সিএসআইআর নেট-ও স্থগিত করা হয়। পাশাপাশি সিবিআই বৃহস্পতিবার ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ) দ্বারা পরিচালিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের তদন্তের জন্য একটি মামলা নথিভুক্ত করেছে।
প্রসঙ্গত, ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট এবং ইউজিসি-নেট পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষা বাতিলের পাশাপাশি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে সিএসআইআর-ইউজিসি-নেট পরীক্ষাও। পরীক্ষায় দুর্নীতি রুখতে এবার প্রবেশিকা এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস রুখতে পাবলিক এগজামিনেশন (প্রিভেনশন অফ আনফেয়ার মিনস) অ্যাক্ট, ২০২৪ কার্যকর করার কথা ঘোষণা করা হল। জানা যাচ্ছে, গত ফেব্রুয়ারিতেই এই আইন সংসদে পাশ হয়েছিল। বিতর্কের জেরেই দ্রুত এই আইন কার্যকর করা হল। জালিয়াতি সম্পর্কে জেনেও যদি পরীক্ষা আয়োজক সংস্থা কোনও রিপোর্ট না করেন, সেক্ষেত্রে তাদের ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। কোনও আধিকারিকের বিরুদ্ধে প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১০ বছরের জেল এবং ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। পরীক্ষা আয়োজক সংস্থার তরফে কেউ জালিয়াতিতে যুক্ত থাকলে, তার বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ন্যূনতম ৩ বছর এবং সর্বোচ্চ ১০ বছরের সাজা হতে পারে। জরিমানা ১ কোটি টাকা। অর্থাৎ, দোষী সকল ব্যক্তির ক্ষেত্রেই পাঁচ থেকে ১০ বছর জেল ও এক কোটি টাকা জরিমানা ধার্য করা হতে পারে। সেই সঙ্গে এই আইনে প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার কথাও বলা হয়েছে। তবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা এই কঠোর শাস্তি থেকে সুরক্ষিত। তাদের জন্য আনফেয়ার মিনস অনুসারে বর্তমান যে আইন রয়েছে সেটি বলবৎ থাকবে। আনফেয়ার মিনস হল প্রশ্ন ফাঁস, অননুমোদিত যোগাযোগের মাধ্যমে পরীক্ষা চলাকালীন প্রার্থীদের সাহায্য করা, কম্পিউটার সিস্টেমে কারচুপি করা, অন্য পরীক্ষার্থীর হয়ে পরীক্ষা দেওয়া, ভুয়ো পরীক্ষা কিংবা ভুয়ো নথি জমা দেওয়া। এই অপরাধগুলি জামিন অযোগ্য এবং এর তদন্ত করতে পারেন ডিএসপি বা সহকারি কমিশনার পদের পুলিশ আধিকারিকরা। এখানে কেন্দ্রের হাতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রাখা হয়েছে। কেন্দ্রের এই আইন ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন, স্টাফ সিলেকশন কমিশন, রেলওয়ে, ব্যাঙ্কিং নিয়োগ পরীক্ষা এবং ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি যেসব পরীক্ষা পরিচালনা করে, সেইসব পরীক্ষাকে এই আইনের অধীনে আনা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বলেন, 'এই আইনের লক্ষ্য হল আর্থিক লাভের জন্য যারা অসাধু উপায় অবলম্বন করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।'

Leave a comment