Mon, July 1, 2024

ই-পেপার দেখুন

গোটা বিশ্বে ১ কোটি ৮১ লক্ষ শিশু অপুষ্টির শিকার, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ভারত

Bipasha Chakraborty

Published: 21 June, 2024, 06:42 PM
গোটা বিশ্বে ১ কোটি ৮১ লক্ষ শিশু অপুষ্টির শিকার, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ভারত


 
বিশেষ প্রতিবেদন: অপুষ্টিতে বঞ্চিত শৈশব। সম্প্রতি ইউনিসেফ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা গেছে শৈশব থেকেই অপুষ্টির শিকার হচ্ছে শিশুরা। 'শিশু খাদ্য দারিদ্র্য: প্রাথমিক শৈশবে পুষ্টির বঞ্চনা' শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য প্রকাশ করেছে ইউনিসেফ। রিপোর্ট অনুযায়ী চারজনের মধ্যে একজন শিশু গুরুতর অপুষ্টির শিকার। 
বিশ্বব্যাপি ১ কোটি ৮১ লক্ষ শিশুর মধ্যে ৬৫ শতাংশ অপুষ্টির শিকার ভারতে, তার পরে রয়েছে গিনি, আফগানিস্তান, বুর্কিনা ফাসো, ইথিওপিয়া সহ ২০টি দেশ। শুধুমাত্র দক্ষিণ এশিয়াতেই ৬৪ লক্ষ শিশু অপুষ্টির শিকার। সাব সাহারান আফ্রিকাতে ৫৯ লক্ষ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। বিপর্যস্ত শৈশব। অপুষ্টি শিশুদের বুদ্ধি, বিকাশ, সামগ্রিক সুস্থতার পথে প্রধান অন্তরায়। নেই পর্যাপ্ত বাসস্থান, এক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বড় হচ্ছে তারা।  

ইউনিসেফ তার প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দারিদ্র এতটাই চরম সীমায় পৌঁছেছে যেখানে শিশুরা ইচ্ছে থাকলেও বৈচিত্র্যময় খাদ্য গ্রহণ করতে পারে না। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা 'হু'। সোমালিয়ায় ৬৩ শতাংশ শিশু অপুষ্টির শিকার। যুদ্ধ বিধবস্ত গাজা স্ট্রিপে প্রতি দশজনের মধ্যে ৯ জন শিশু চরম খাদ্য দারিদ্র্যতার মধ্যে বাস করছে। যা বিশ্বের কাছে এই মুহূর্তে চরম ভয়াবহ বার্তা। পাশাপাশি বেলারুশেও একই চিত্র। মারাত্মক খাদ্য দারিদ্র্যের মধ্যে অপুষ্টির সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে দিচ্ছে।  
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কোভিড-১৯ এর পরে যখন অর্থনৈতিক পুনুরুদ্ধার চলছে, সেই সময় খাদ্যের দাম জীবনযাত্রার ব্যয়কে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। অপুষ্টির শিকার শিশুদের ভাগ্যে খুব সামান্য পরিমাণে মাতৃদুগ্ধ বা অন্যান্য প্রাণীর দুধ মেলে, তার থেকেও ১০ শতাংশ কম তারা খেতে পায় ফল, শাকসবজি, তার থেকেও ৫ শতাংশ কম পায় পুষ্টিযুক্ত খাবার যেমন মাছ, মাংস, ডিম।

ইউনিসেফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই চরম অপুষ্টি শুধুমাত্র একটি শিশুর স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করছে তাই নয়, তার বিকাশ, বুদ্ধি, জ্ঞান, শিক্ষাগত ফলাফলের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তারা এই অভাবকে বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে। 

অপুষ্টির একাধিক কারণ রয়েছে। যদিও পারিবারিক আয় একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারক। অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুর ৪৬ শতাংশ দরিদ্র পরিবারে বাস করে, কিন্তু ৫৪ শতাংশ এমন পরিবারে রয়েছে যাদের আয় দারিদ্র্যসীমার উপরে।  স্বচ্ছল পরিবারেও অপুষ্টির শিকার হচ্ছে শিশুরা। এর মধ্যে রয়েছে 'জাঙ্ক ফুড’ খাওয়ার প্রবণতা ও প্যাকেটজাত খাবার। অপুষ্টিতে থাকা শিশুরা ক্ষুধামান্দ্য, ডায়রিয়া, আমাশয়, কৃমি সংক্রমণের শিকার হচ্ছে।

পাশাপাশি রয়েছে পরিবারের বিভিন্ন অবৈজ্ঞানিক ধারণা প্রসূত খাদ্যাভাস। নামীদামি ব্র্যান্ডের শিশুখাদ্য ও স্বাস্থ্য-পানীয় দারুণ ভাবে জায়গা করে নিয়েছে নিম্ন মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে এমনকি দরিদ্র পরিবারেও। পুষ্টিকর খাবারকে আরও সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ী করে তোলার জন্য জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে ইউনিসেফের তরফে। 

Leave a comment