সেতু বিপর্যয়ে নাজেহাল নীতীশ, ১৬ জন ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করল বিহার সরকার
ব্রিটেনের নয়া প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারকে শুভেচ্ছা জানালেন মোদি
সতর্ক করেও পদক্ষেপ হয়নি, কেরলে ভূমিধস নিয়ে বিজয়ন সরকারকে বিঁধলেন শাহ
পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ ছবির মতন সাজানো গ্রাম প্রকৃতির রুদ্ররোষে এখন তছনছ। ওয়েনাড় জুড়ে এখন শুধুই প্রিয়জন হারানোর হৃদয় বিদারক কান্না আর হাহাকার। ট্র্যাজিক এই ঘটনায় ইতিমধ্যে নিহতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে বলে খবর। মেপ্পাড়ি ফ্যামিলি হেলথ সেন্টার এবং নীলাম্বুর সরকারি হাসপাতালের সামনে মৃতদেহ শনাক্ত করতে এসে সারিবদ্ধ কাফিনের মাঝ থেকে চোখের জল ফেলতে ফেলতে প্রিয়জনের নিথর দেহ খুঁজছে আত্মীয় পরিজন।
ওয়েনাড় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক ছবিতে দেখা যাচ্ছে একইসঙ্গে কাঠ ও গ্যাসের ইলেক্ট্রিক চুল্লিতে দেহ করা হচ্ছে দেহ। অন্যদিকে মেপ্পাড়ি জুমা মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে সংবাদ মাধ্যমকে জানানো হয়েছে, মরহুমের দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কমিটির এক সদস্য জানিয়েছেন, "দেহ শনাক্ত করার পর এখানে আনা হলে দাফনের সমস্ত ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই উদ্যোগে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে অনেকেই।"
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ২২০ জনের বেশি মানুষ এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ। মুন্ডাক্কাই এবং চুড়ালমাল এলাকার বেশিরভাগ বাড়িই সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপের নীচে এখনও কয়েকশো মানুষ আটকে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে বলে মনে করছে প্রশাসন। মৃতের সংখ্যা নিশ্চিতভাবে বলা এখনও প্রায় অসম্ভব।
প্রবল বৃষ্টির জেরে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধারকার্য। সমগ্র কেরল জুড়েই কয়েকদিন ধরে হচ্ছে প্রবল বৃষ্টি। ওয়েনাড়ের পাদিনজারাথারায় মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় ২৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। রাজ্য সরকার সূত্রে খবর এত পরিমাণ বৃষ্টির ফলেই ওয়েনাড়ের পাহাড়ি এলাকায় এই বিপর্যয়। মঙ্গলবার রাত ২টা নাগাদ গোটা গ্রাম যখন ঘুমে আচ্ছন তখনই মেপ্পাড়ি এলাকায় নামে প্রথম ধ্বস। নিমেষে ধবংসস্তূপে পরিণত হয় একটা সম্পূর্ণ পাহাড়ি গ্রাম। ভেসে যায় একাধিক বাড়ি। কাদা পাথরে চাপা পড়েন বহু মানুষ। আড়াই ঘন্টা পর হয় দ্বিতীয় ভূমিধ্বস। মুন্ডাকাই, চুড়ালমালা, আট্টামালা ও নুলপুঝা গ্রাম থেকেও পরপর ধবসের খবর আসতে থাকে। কিন্তু প্রবল বৃষ্টির জেরে উদ্ধারকাজ শুরু হতে দেরি হয়ে যায়। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকে লাফিয়ে লাফিয়ে। মৃতদের মধ্যে মহিলা ও শিশুর সংখ্যা রয়েছে। কাদা এবং নদীর স্রোতে ভেসে আসছে অনেক দেহাংশও।
ওয়েনাড়ের পাশাপাশি বিপর্যস্ত কেরলের কোঝিকোড় জেলাও। ভিলাঙ্গাড়ু, মালায়নগাড়ুর মতো পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধসে বেশ কিছু বাড়ি, রাস্তা ও সেতু নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মত দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে আবহাওয়া দফতের পূর্বাভাস। বুধবার পর্যন্ত ওয়েনাড়, কোঝিকোড়-সহ কেরলের আট জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। জারি করা হয়েছে 'রেড অ্যালার্ট'।