Thu, September 19, 2024

ই-পেপার দেখুন

পাগড়ি ও চশমা পরা ছবি পোস্ট করায় দলিত যুবককে মারধর গুজরাতে

ইমামা খাতুন

Published: 22 July, 2024, 05:47 PM
পাগড়ি ও চশমা পরা ছবি পোস্ট করায় দলিত যুবককে মারধর গুজরাতে


নয়াদিল্লি: দলিত নিগ্রহের ঘটনা এবার খোদ প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যে। পাগড়ি ও সানগ্লাস পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি আপলোড করেছিলেন এক দলিত যুবক। আর তাতেই উচ্চবর্ণের রোষের মুখে পড়তে হল বছর চব্বিশের দলিত যুবক অজয় পারমারকে।    

অভিযোগ, রাজ্যের সবরকাঁথা জেলায় এক দলিত যুবককে তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে ঐতিহ্যবাহী পাগড়ি (সাফা) এবং সানগ্লাস পরা ছবি আপলোড করায় বেধড়ক মারধর করল উচ্চবর্ণের মানুষরা। 
গুজরাতে সানগ্লাস পরার জন্য দলিতকে মারধরের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। ২০২৩ সালের জুন মাসের শুরুতে, ২১ বছর বয়সী এক দলিত যুবক এবং তার পরিবারকে উচ্চবর্ণের রাজপুত সম্প্রদায়ের লোকেরা সানগ্লাস এবং সুন্দর পোশাক পরার জন্য আক্রমণ করেছিল। ঘটনাটি ঘটেছিল পালামপুরের মোতা গ্রামে।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, ১৭ জুলাই সাবরকাঁথা জেলার হিম্মতনগর তালুকের একটি গ্রামে ২৪ বছর বয়সী এক দলিত যুবক উচ্চবর্ণের মানুষরা ব্যাপক মারধর করে। নির্যাতিত দলিত যুবক অজয় পারমার পেশায় গাড়িচালক। ১৮ জুলাই তিনি এফআইআর দায়ের করে অভিযোগ করেন, তাঁকে দরবার (রাজপুত) সম্প্রদায়ের চারজন মারধর করেছে। 
সংবাদ সূত্রে জানা গিয়েছে, অজয় পারমার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে সানগ্লাস এবং পাগড়ি পরা তার একটি ডিপি (ডিসপ্লে ফটো) পোস্ট করেছিল। অজয় পারমার অভিযোগ করেন, অভিযুক্তরা নওয়ানগর বাসস্ট্যান্ডের কাছে আমাকে ঘিরে ধরে জানতে চায়, কেন আমি ডিপি-তে সানগ্লাস ও পাগড়ি পরা ছবি আপলোড করেছি।

তারপরই আমাকে মারধর শুরু করে। অজয় আরও বলেন, ‘ওরা আমাকে বলে, শুধুমাত্র দরবার সম্প্রদায়ের লোকেরাই পাগড়ি এবং সানগ্লাস পরতে পারে। আমাকে মারধরের পর ডিপি থেকে আমার পাগড়ি সানগ্লাস পরা ছবিটি সরাতে বলে।  এরপর তাঁর গ্রামের লোকজনরাও তাঁকে মারধর করেছে। কারণ দরবার সম্প্রদায়ের ওই গ্রামে অজয়ই একমাত্র দলিত। 
অভিযুক্ত অজয় পারমার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, তাঁর বাবা হামলাকারীদের হাত থেকে তাঁকে বাঁচাতে স্থানীয় পুলিশকে ফোন করলেও পুলিশ এক ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। হিম্মতনগর গ্রামীণ থানার অফিসার সঞ্জয় গোস্বামী জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা পলাতক। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। 
গুজরাতে দলিত নির্যাতনের ঘটনা আগেও ঘটেছে। দেশের পশ্চিমাঞ্চলে রাজ্যগুলি থেকে জাতিভিত্তিক নৃশংস ঘটনা প্রায়ই ঘটে। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে, একজন ২১ বছর বয়সী দলিত যুবক গুজরাতে তার নিয়োগকর্তার কাছ থেকে বেতন দাবি করায় তাঁকে ব্যাপক মারধর করা হয়েছিল। যুবক তাঁর অভিযোগে বলেছিলেন, তাঁর মহিলা নিয়োগকর্তার জুতো মুখে নিয়ে তাঁকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়েছিল।
এই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে, গান্ধীনগর জেলায় এক দলিত বর তার বিয়ের মিছিলে ঘোড়ার পিঠে চড়ে এসেছিলেন বলে একদল উচ্চবর্ণের মানুষ তার উপর চড়াও হয়ে মারধর করে। গত বছরের জুন মাসে, একটি উচ্চবর্ণের হোটেল ম্যানেজার খাবারের অর্ডার দেওয়া নিয়ে বিতর্কের পরে এক দলিত যুবককে মারধর করেছিলেন। পরে ওই আহত যুবকের মৃত্যু হয়। 
 

Leave a comment