পুবের কলম প্রতিবেদক ১৮৩৫ সালের ৩১ আগস্ট কলকাতার ‘টাউন হল’-এ এক সভায় শহরে সাধারণ গ্রন্থাগার স্থাপনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। তারপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ক্যালকাটা পাবলিক লাইব্রেরি। ইতিহাসে এটাই ছিল প্রথম সাধারণ গ্রন্থাগার। সেই দিনকে স্মরণ করতে রাজ্য সরকার ২০১৩ সাল থেকে প্রতি বছর ৩১ আগস্ট পালন করে ‘সাধারণ গ্রন্থাগার দিবস’। এ বছরও দিনটি কেন্দ্রীয়ভাবে পালিত হল কলকাতায় অবস্থিত ‘রাজ্য কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার’-এ। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু– সংখ্যালঘু ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের মন্ত্রী মুহাম্মদ গোলাম রব্বানি– কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়– পাবলিশার্স গিল্ডের শুধাংশু শেখর দে ও ত্রিদিব চক্রবর্তী। সভাপতিত্ব করেন গ্রন্থাগার ও জনশিক্ষা প্রসার দফতরের মন্ত্রী জনাব সিদ্দিকুল্লাহ্ চৌধুরি প্রমুখ।
এদিন উপস্থিত সকলেই সমাজ জীবনে গ্রন্থাগার ও বই পড়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। গ্রন্থাগার পরিষেবাকে আরও উন্নত ও জনমুখী করার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কীভাবে গ্রন্থাগার পরিষেবাকে সাধারণ মানুষের কাছে সজহলভ্য করে তুলছে তা নিয়েও আলোচনা হয়।
এদিন সিদ্দিকুল্লাহ্ চৌধুরি বলেন– বাম আমলের থেকে বর্তমান আমলে ছয় গুন বাজেট বেড়েছে। আমরা গ্রন্থাগারকে নতুনত্ব দিতে চেষ্টা করেছি। মানুষকে গ্রন্থাগার ও বইমুখী করে তুলতে নানান উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বই ছাড়া সমাজ বাঁচতে পারে না। তিনি উল্লেখ করেন– গ্রন্থাগার বিভাগ ৩৫ হাজার বইকে ডিজিটাইজড্ করেছে– আরও করা হবে। তিনি বলেন– ‘বই ধরো– বই পড়ো’ প্রকল্পের মাধ্যমে ১ কোটি পাঠককে টার্গেট করা হচ্ছে। মানুষকে গ্রন্থাগারমুখী করতে তুলে সরকার নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এদিন এক প্রশ্নের জবাবে সিদ্দিকুল্লাহ্ চৌধুরি বলেন– আমফান ও ইয়াসের জন্য প্রায় ১০ লাখ বই নষ্ট হয়েছে– সেগুলিকে পুনরুদ্ধার করা যায় কিনা তা দেখা হচ্ছে। আগে সপ্তাহে দুই দিন গ্রন্থাগার খোলা হত– এবার থেকে সোম– বুধ ও শুক্রবার করে সমস্ত গ্রন্থাগার খোলা থাকবে। তবে করোনার জন্য ১৮ বছরের কম বয়সী কাউকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। ই-লাইব্রেরি নিয়েও আলোচনা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ্ চৌধুরি।
প্রসঙ্গত– করোনা সংক্রান্ত বিধি মেনে কলকাতা ও দুই ২৪ পরগনা জেলাকে নিয়ে এদিন কেন্দ্রীয়ভাবে গ্রন্থাগার দিবস পালন করা হয়। রাজ্যস্তরের পাঁচটি গ্রন্থাগার থেকে মোট ১০ জনকে নিয়মিত পাঠক ও বরিষ্ঠ পাঠককে ‘সেরা নিয়মিত পাঠক সম্মান’ পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়। একই অনুষ্ঠান থেকে রাজ্যের জনশিক্ষা প্রসার ও গ্রন্থাগার পরিষেবা বিভাগের অন্তর্গত বিশেষ বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ-মাধ্যামিক পরীক্ষায় কৃতী ২০ জনকে সংবর্ধনা জানানো হয়। তাদের হাতে মেডেল ও উপহার সামগ্রী তুলে দেন বিশিষ্ট অতিথিরা।