৩০ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফের প্রাক্তনীদের চিঠি লিখল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, শনিবার
  • / 11

পুবের কলম প্রতিবেদক: বরাদ্দ না মেলায় সমস্যা দেখা দিয়েছে এ রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে। তবে রাজ্য সরকারের তরফে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে কিছু বরাদ্দ দেওয়ার প্রয়াস শুরু করেছে। কেন্দ্র সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দের  প্রতিশ্রুতি সত্বেও মিলছে না টাকা। এই অভিযোগ বারবার তোলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে।

বরাদ্দে ঘাটতি থাকার কারণে প্রাক্তনীদের কাছ থেকে সাহায্য চেয়ে ফের চিঠি দিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আহ্বান-পত্রে উপাচার্য  সুরঞ্জন দাস লিখেছেন, ‘আমি প্রাক্তন ছাত্রদেরকে একটি তহবিলে আর্থিক অনুদান দেওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে অনুরোধ করছি। প্রাপ্তঅর্থ বিভাগের শিক্ষাদান ও গবেষণা কার্যক্রমকে শক্তিশালী করার জন্য ব্যয় করা হবে। যাতে বিভাগটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে সক্ষম হয়।’

এর আগেও সঙ্কট মেটাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীদের থেকে অর্থ সাহায্য চেয়ে চিঠিও লিখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। যাদবপুরের গ্লোবাল অ্যালামনি ফাউন্ডেশনের কাছে সেই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয় এই মুহূর্তে বছরে প্রায় ৪৫-৫০ কোটি টাকা লাগে দৈনন্দিন খরচে (ল্যাবরেটরি চালানো, ক্লাস চালানো এবং বিভিন্ন বিদ্যুতের খরচ)।  সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় পাচ্ছে ২০ কোটি। অর্থাৎ প্রায় ৩০ কোটি টাকার ঘাটতি। এরকম চলতে থাকলে পড়াশোনা করানোর কাজই দূরূহ হয়ে উঠবে।

এ  প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, করোনা পরিস্থিতির পর থেকে এই সমস্যা আরও বেড়েছে।  কারণ, কোভিডকালে আমরা পড়ুয়াদের থেকে কোনও টাকা নিইনি। বিভিন্ন কোর্স ফি-তে ছাড় দেওয়া হয়েছিল। সূত্রের খবর, একই অবস্থা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের।

গত বছরের মতো এবারও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস  চলতি অর্থ সংকটের মোকাবিলায় বিশ্বের নানা প্রান্তে থাকা প্রাক্তনীদের কাছে তাঁর আর্জি পৌঁছে দিয়েছেন উপাচার্য। এবার মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সংস্কার এবং গবেষণার জন্য অর্থ সাহায্য চেয়েছেন তিনি।

ইতিমধ্যে সাড়াও দিয়েছেন প্রাক্তনীরা। গ্লোবাল যাদবপুর ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই ফাউন্ডেশনের ইউএস প্ল্যাটফর্মের পক্ষে দীপেন ঘোষ জানিয়েছেন, তাঁরা ১৫ লাখ টাকা তুলে দেবেন। ১৯৬৫ সালের স্নাতক এই প্রাক্তনীরা বলেছেন, ‘আমরা বিভাগের ল্যাবরেটরিগুলি সংস্কার করে দিতে চাই।’ ফাউন্ডেশন গত মাসে প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের জন্য ১৫টি কম্পিউটার কেনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রায় সাত লাখ টাকা দিয়েছে।

আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের মতো বিজ্ঞানীর প্রচেষ্টায় ১৯২১ সালে যাত্রা শুরু করেছিল কেমিক্যাল ইংঞ্জিনিয়ারিং বিভাগটি। অনেক দিন ধরেই কথা চলছে বিভাগটির পরিকাঠামো সময়োপযোগী করে তোলা দরকার।  দুবছর আগে বিভাগের শতবর্ষের সময় তা সম্ভব হয়নি, করোনা পরিস্থিতির কারণে। পরবর্তী সময়েও ভাবনা বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়নি চলতি আর্থিক সংকটের ফলে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তার কথায়, কেন্দ্রীয় সরকার গবেষণা এবং পরিকাঠানো খাতে যে অনুদান দিত, বিগত কয়েক বছর যাবত তা আসা বন্ধ হয়ে গেছে। অর্থ সংকটের কারণে রাজ্য সরকারও অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দে অপারগ। এই পরিস্থিতিতে প্রাক্তনীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন উপাচার্য।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ফের প্রাক্তনীদের চিঠি লিখল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ

আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, শনিবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: বরাদ্দ না মেলায় সমস্যা দেখা দিয়েছে এ রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে। তবে রাজ্য সরকারের তরফে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে কিছু বরাদ্দ দেওয়ার প্রয়াস শুরু করেছে। কেন্দ্র সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দের  প্রতিশ্রুতি সত্বেও মিলছে না টাকা। এই অভিযোগ বারবার তোলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে।

বরাদ্দে ঘাটতি থাকার কারণে প্রাক্তনীদের কাছ থেকে সাহায্য চেয়ে ফের চিঠি দিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আহ্বান-পত্রে উপাচার্য  সুরঞ্জন দাস লিখেছেন, ‘আমি প্রাক্তন ছাত্রদেরকে একটি তহবিলে আর্থিক অনুদান দেওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে অনুরোধ করছি। প্রাপ্তঅর্থ বিভাগের শিক্ষাদান ও গবেষণা কার্যক্রমকে শক্তিশালী করার জন্য ব্যয় করা হবে। যাতে বিভাগটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে সক্ষম হয়।’

এর আগেও সঙ্কট মেটাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীদের থেকে অর্থ সাহায্য চেয়ে চিঠিও লিখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। যাদবপুরের গ্লোবাল অ্যালামনি ফাউন্ডেশনের কাছে সেই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয় এই মুহূর্তে বছরে প্রায় ৪৫-৫০ কোটি টাকা লাগে দৈনন্দিন খরচে (ল্যাবরেটরি চালানো, ক্লাস চালানো এবং বিভিন্ন বিদ্যুতের খরচ)।  সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় পাচ্ছে ২০ কোটি। অর্থাৎ প্রায় ৩০ কোটি টাকার ঘাটতি। এরকম চলতে থাকলে পড়াশোনা করানোর কাজই দূরূহ হয়ে উঠবে।

এ  প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, করোনা পরিস্থিতির পর থেকে এই সমস্যা আরও বেড়েছে।  কারণ, কোভিডকালে আমরা পড়ুয়াদের থেকে কোনও টাকা নিইনি। বিভিন্ন কোর্স ফি-তে ছাড় দেওয়া হয়েছিল। সূত্রের খবর, একই অবস্থা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের।

গত বছরের মতো এবারও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস  চলতি অর্থ সংকটের মোকাবিলায় বিশ্বের নানা প্রান্তে থাকা প্রাক্তনীদের কাছে তাঁর আর্জি পৌঁছে দিয়েছেন উপাচার্য। এবার মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সংস্কার এবং গবেষণার জন্য অর্থ সাহায্য চেয়েছেন তিনি।

ইতিমধ্যে সাড়াও দিয়েছেন প্রাক্তনীরা। গ্লোবাল যাদবপুর ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই ফাউন্ডেশনের ইউএস প্ল্যাটফর্মের পক্ষে দীপেন ঘোষ জানিয়েছেন, তাঁরা ১৫ লাখ টাকা তুলে দেবেন। ১৯৬৫ সালের স্নাতক এই প্রাক্তনীরা বলেছেন, ‘আমরা বিভাগের ল্যাবরেটরিগুলি সংস্কার করে দিতে চাই।’ ফাউন্ডেশন গত মাসে প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের জন্য ১৫টি কম্পিউটার কেনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রায় সাত লাখ টাকা দিয়েছে।

আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের মতো বিজ্ঞানীর প্রচেষ্টায় ১৯২১ সালে যাত্রা শুরু করেছিল কেমিক্যাল ইংঞ্জিনিয়ারিং বিভাগটি। অনেক দিন ধরেই কথা চলছে বিভাগটির পরিকাঠামো সময়োপযোগী করে তোলা দরকার।  দুবছর আগে বিভাগের শতবর্ষের সময় তা সম্ভব হয়নি, করোনা পরিস্থিতির কারণে। পরবর্তী সময়েও ভাবনা বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়নি চলতি আর্থিক সংকটের ফলে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তার কথায়, কেন্দ্রীয় সরকার গবেষণা এবং পরিকাঠানো খাতে যে অনুদান দিত, বিগত কয়েক বছর যাবত তা আসা বন্ধ হয়ে গেছে। অর্থ সংকটের কারণে রাজ্য সরকারও অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দে অপারগ। এই পরিস্থিতিতে প্রাক্তনীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন উপাচার্য।