খিদিরপুর-এসপ্লানেড ৩৬ নম্বর রুটে ফের ট্রাম চালুর দাবি, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে পরিবহণ দফতর

- আপডেট : ১ নভেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার
- / 18
পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: এক সময় কলকাতা প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় ট্রাম চলত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের রুচি বদলেছে, রাস্তায় বেড়েছে গাড়ি-ঘোড়া। স্বাভাবিকভাবেই ব্রাত্য হতে থেকেছে ট্রাম। এখনও বেশ কতকগুলি ট্রাম-লাইন রুটে রয়েছে। তবে চলছে না ট্রাম। চালু বলতে বালিগঞ্জ থেকে টালিগঞ্জ ও গড়িয়াগাট থেকে এসপ্লানেড রুট। অন্য রুটের কোথাও মেট্রো রেলের কাজের দোহাই, কোথাওবা ব্রিজের স্বাস্থ্যের অজুহাতে বন্ধ রয়েছে ট্রাম-চলাচল। কিন্তু খিদিরপুর থেকে এসপ্লানেড যাওয়ার ৩৬ নম্বর রুটে কোনও সমস্যা নেই। তারপরও কেন ট্রাম চলাচল বন্ধ রয়েছে? প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভ দেখিয়েছে কলকাতা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশন।
সম্প্রতি পরিবহণ দফতরের ‘অবহেলা’র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে আগাছায় ঢেকে যাওয়া ট্রাম লাইনের ঘাস পরিষ্কার করেন অ্যাসোসিয়েশন-এর সদস্যরা। তাদের দাবি, অবিলম্বে চালু করতে হবে ৩৬ নম্বর রুট। জানা গিয়েছে, আমাফানের পর থেকে দীর্ঘদিন বন্ধ হয়ে থাকা ওই রুট চালুর জন্য তৎপর হচ্ছে পরিবহণ দফতর।
সূত্রের খবর, এ নিয়ে পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছেন সফতরের মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। ২০২৩ সালে দেড়শো বছরে পা দিতে চলেছে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ট্রাম। সেই সার্ধশতবর্ষ পূর্তি নিয়ে বিশেষ কর্মসূচির কথাও ভাবছে পরিবহণ দফতর। জানা গিয়েছে, ট্রাম চালু ও সার্ধশতবর্ষ পূর্তি নিয়ে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের তৎপর হতে বলেছেন পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী।
সূত্রের খবর, ৩৬ নম্বর রুটের একাংশে ময়দান ঘিরে একটি বিশেষ ‘লুপ’ তৈরির কথাও চিন্তা-ভাবনা করছে দফতর। ময়দান ও ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালকে ঘিরে পর্যটকদের আকর্ষণ করতে এই ভাবনা বলে খবর। বেশ কিছু রুটে অন্যান্য কাজ চলছে সেগুলি মিটে গেলে ট্রাম চালানোর মতো পরিস্থতি থাকলে তা ভেবে দেখা হবে বলে খবর।
প্রসঙ্গত, আগের পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন ট্রাম হচ্ছে কলকাতার ঐতিহ্য তা ধরে রাখতে চেষ্টা করবে দফতর। তিনি ইলেকট্রিক ট্রলি বাস চালানোর কথাও বলেছিলেন। ট্রাম লাইনের তারের বৈদ্যুতিন ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে ট্রলি বাস চালানো কথা হচ্ছিল।
উল্লেখ্য, বর্তমানে মাত্র ২টি রুটে ট্রাম চলাচল করছে। ধর্মতলা থেকে শ্যামবাজার রুট বন্ধ হয়েছে কিছুদিন আগে। ওয়েলিংটন এলাকায় মেট্রোর কাজের জন্যেই ট্রাম চলছে না। অন্যদিকে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য বিবাদী বাগ থেকে চিৎপুর, বউবাজার এবং কলেজ স্ট্রিট দিয়ে চলা ট্রাম রুট দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ।
শিয়ালদহের বিদ্যাপতি সেতুর স্বাস্থ্যের অজুহাতে ওই উড়ালপুলের দিকে যাওয়া লেনিন সরণি এবং কলেজ স্ট্রিট হয়ে রাজাবাজার, উলটোডাঙা, মানিকতলা যাওয়ার ট্রাম বন্ধ। টালা সেতু বন্ধ ছিল, বিকল্প পথ হিসাবে বেলগাছিয়া সেতু ব্যবহার করা হত, তাই সেই সেতুর উপরে চাপ কমাতে সেখানকার ট্রাম বন্ধ রয়েছে।
বেলগাছিয়া ডিপো বর্তমানে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রয়েছে।
এ দিকে পার্ক সার্কাস ডিপো থেকে আর কোনও ট্রাম চলাচল করে না। নোনাপুকুর ট্রাম ডিপো সচল রয়েছে। পার্ক সার্কাস ট্রাম ডিপোয় শুধু বাস চলাচল ছাড়া কিছুই হচ্ছে না। এখানে পাঁচতলা নতুন বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়েছে। তা বেসরকারি সংস্থাকে ভাড়া দিতে চাইছে পরিবহণ নিগম।