পঞ্চায়েত ভোট: অভিষেকের নেতৃত্বেই রাজ্যজুড়ে ৫০ হাজার প্রার্থী বাছাই হবে কেন্দ্রিয় পদ্ধতিতেই

- আপডেট : ৯ অক্টোবর ২০২২, রবিবার
- / 14
পুবের কলম প্রতিবেদক: সামনের বছরেই গ্রাম দখলের লড়াই। সেই পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে রীতিমত প্রস্তুতি শুরু করছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই প্রার্থী বাছাই নিয়ে রণকৌশল ঠিক করে ফেলতে চাইছে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য প্রায় ৫০,০০০ প্রার্থীকে বেছে নেবে দল। আর তা হবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই।
দলীয় সূত্রে খবর, রাজ্য নেতৃত্ব জেলা নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছে যে তিনটি স্তরের প্রতিটি আসনের জন্য কমপক্ষে তিনটি নাম পাঠাতে হবে। গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ মিলিয়ে তিনটি স্তরের জন্যেই তিনজন করে নাম পাঠাতে হবে।
এ নিয়ে তৃণমূলের এক প্রবীণ নেতা জানাচ্ছেন, নামগুলি সমীক্ষার মাধ্যমে ক্রস-চেক করা হবে। সমীক্ষা করা হবে যাতে যোগ্যতম প্রার্থীদের খুঁজে বের করা যায়। এর পাশাপাশি, নির্দিষ্ট জেলার পর্যবেক্ষক-সহ সিনিয়র নেতাদেরও বর্তমান সদস্যদের কর্মক্ষমতা এবং গ্রহণযোগ্যতা স্ক্যান করতে বলা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, একাধিক ক্রস-চেক করার পরে চূড়ান্ত প্রার্থীদের নাম কেন্দ্রীয়ভাবে ঘোষণা করবে তৃণমূল কংগ্রেস। আগে এভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী বাছাই করার মতো কেন্দ্রীভূত ব্যবস্থা ছিল না। এবারই তা চালু হচ্ছে। যদিও জেলা পরিষদের আসনগুলির জন্য কিছু নাম নির্বাচনের বিষয়ে কলকাতা থেকে কিছু নজরদারি ছিল।
২০২১-এর ভোটে দলের পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোরের নেতৃত্বে প্রার্থীদের চূড়ান্ত করার সময় কেন্দ্রীভূত পদ্ধতিতে ঠিক করেছিল।
অনেকেই মনে করছেন, এই পদক্ষেপটি টানা তৃতীয়বারের মতো রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরে আসার পিছনে কারণগুলির মধ্যে অন্যতম। তবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে টিম-পিকে যে কাজটি করেছিল তা অনেক সহজ ছিল কারণ তখন নির্বাচন করার জন্য মাত্র ২৯৪ জন প্রার্থী ছিল। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে কঠিন পদ্ধতিতে ৫০,০০০ প্রার্থী বাছাই করা সত্যিই একটি কঠিন কাজ হবে বলেও অনেকের মত। তবে নেতৃত্ব, প্রধানত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য ভাল প্রার্থী নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীভূত ব্যবস্থা চান বলেই দলীয় সূত্রে খবর।
এ নিয়ে এক সিনিয়র নেতা বলেন, প্রার্থী নির্বাচন সম্পূর্ণভাবে অভিষেকের অফিস থেকে হবে। ত্রি-স্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় বর্তমানে যাঁরা সদস্য রয়েছেন, তাঁদের কর্মক্ষমতা খতিয়ে দেখতে সমীক্ষক ও সিনিয়র নেতারা ইতিমধ্যেই তাদের নিজ নিজ জেলা পরিদর্শন শুরু করেছেন।
গ্রামের মধ্যে যাদের ক্লিন ইমেজ এবং গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে তারা টিকিট পাবেন বলেই ঠিক করেছে দল। তৃণমূলের সূত্র বলছে, ২০১৮ সালে ক্ষমতাসীনরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল এমন আসনগুলিতেও তৃণমূল কঠোর নজর রাখছে। কেননা, মনে করা হচ্ছে যারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে মানুষের জন্য কাজ করতে কম আগ্রহী।
প্রসঙ্গত, বাংলায় ত্রি-স্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় ৩,৩৪৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ৩৩২টি পঞ্চায়েত সমিতি এবং ১৮টি জেলা পরিষদ রয়েছে। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে বিরোধী প্রার্থীদের বিপুল সংখ্যক আসনে মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়ার জন্য বল প্রয়োগ ও সহিংসতার অভিযোগ উঠেছিল।
ফলে বিপুল সংখ্যক প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিল। এ নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব, বিশেষ করে অভিষেক বেশ কিছুদিন ধরে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে দল ২০১৮-এর পুনরাবৃত্তি হতে দেবে না। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে।