পুবের কলম প্রতিবেদক: সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করবে না রাজ্য সরকার এবং রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। বরং তদন্তে শাসক দল এবং সরকার কেন্দ্রীয় সংস্থার সহযোগিতা করবে। কোনরকম বিরোধিতা করবে না। আদালত রামপুরহাট কাণ্ডে যে নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল তাতে সহযোগিতা করবে কোনও বিরোধিতা করবে না।
শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করে একথা জানিয়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। একই সঙ্গে তিনি এও দাবি করেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিরোধী দলগুলির বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য বিজেপির প্রধান দুটি অস্ত্র হয়ে উঠেছে ইডি এবং সিবিআই। এক্ষেত্রে সিবিআইকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার চরিতার্থ করার জন্য ব্যবহার করা হলে আমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাব। তবে তৃণমূল কংগ্রেস চায় ন্যায় বিচার হোক, সঠিক তদন্ত করুক সিবিআই। যদি বিজেপিকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়, যদি ন্যায়বিচার না হয় যদি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রকে আড়াল করা হয় তাহলে আমরা ছেড়ে কথা বলব না। প্রতিবাদ হবে।
এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে অতীতে যেকোনও গণহত্যার ক্ষেত্রে সরকার সরকারকে নিষ্ক্রিয় থাকতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার নিষ্ক্রিয় থাকেনি। বরং প্রতিমুহূর্তে যে যে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন তা গ্রহণ করেছে।
মুখ্যমন্ত্রী নিজে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সঙ্গে কথা বলে তাদের হাতে ক্ষতিপূরণ তুলে দিয়েছেন, অভিযুক্তদের কড়া শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন। তারপরেও সিবিআই তদন্ত হয় কি করে! কুণাল ঘোষ বলেন, তদন্ত যখন সঠিক পথেই এগোচ্ছিল ইতিমধ্যেই এই ঘটনার জন্য ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তখন সিবিআই তদন্ত এর পিছনে থাকা বৃহত্তর চক্রান্তকারীদের বাঁচানোর জন্য নয় তো। তিনি বলেন, বিজেপির দুই ভাই ইডি আর সিবিআই। সিবিআই নিরপেক্ষ নয় এরা বিজেপির পক্ষ। এক দিক থেকে ভালো হয়েছে এরপরে আর কেউ মুখ্যমন্ত্রী বা সরকারের দিকে আঙ্গুল তুলতে পারবেন না। সিবিআই দেখুক কি হয়েছে? যেখানে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন এর পিছনে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র আছে, রাজনৈতিক রং না দেখে যার যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত হবে। এবার আর সেই দায় সরকারের থাকবে না।
সিবিআইয়ের ব্যর্থতা নিয়ে সরব হন কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, অতীতেও বহু কেস সিবিআইয়ের হাতে গেছে তার সুরাহা হয়নি। মানুষ ন্যায়বিচার পায়নি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল চুরি গিয়েছিল উদ্ধার হয়নি, সিঙ্গুরে তাপসী মালিক কেস এখনও ন্যায় বিচার হয়নি। নন্দীগ্রাম গণহত্যা থেকে শুরু করে এমন আরও অনেক কিছু আছে যা আজও সিবিআই সুরাহা করতে পারেনি।
এবার এখানে শুভেন্দু অধিকারীর প্রসঙ্গ টেনে আনেন কুণাল ঘোষ বলেন, বড় কথা বিজেপিতে যোগ দিলে সিবিআই তদন্ত থেকে ছাড় পাওয়া যায়-তার জলজ্যান্ত উদাহরণ শুভেন্দু অধিকারী। কুণাল ঘোষের অভিযোগ, এই সিবিআই তো নিরপেক্ষ নয়। তৃণমূল মুখপাত্র প্রশ্ন তোলেন, দিল্লির দাঙ্গায় সিবিআই হয় না কেন?
কেন লখিমপুর-হাথরাস-উন্নাও-অসম-এর ঘটনায় সিবিআই হয় না! সিবিআই হবে শুধু পশ্চিমবঙ্গে! যেখানে সরকার তৎপরতার সঙ্গে সবরকম ব্যবস্থা নিয়েছে। এখানেই তিনি প্রশ্ন তুলছেন, এই তদন্ত বৃহত্তর ষড়যন্ত্রকে আড়াল করতে করা হচ্ছে না তো! তাহলে আগামী দিনে এর বিরুদ্ধে পথে নামবে তৃণমূল।