বিপাশা চক্রবর্তী, কলকাতাঃ আজ পবিত্র দোল পূর্ণিমা। গানে, নাচের ছন্দের কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে স্মরণের মধ্য দিয়ে আজ চতুর্দিকেই পালিত হচ্ছে বসন্ত উৎসব। করোনা আবহে পরিস্থিতি কিছু থেমে গেলেও এবছর সকলকেই সেই পুরনো আবেগে ভেসে যেতে দেখা গেল।
বসন্ত উৎসব মানেই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন। তবে আজ এক চিলতে শান্তিনিকেতন উঠে এল কলকাতার বেহালার কালীচরণ দত্ত রোডে। সকাল থেকেই কচি কাঁচারা আজ শামিল হয়েছে বসন্ত উৎসবে। ছোটদের উৎসাহ দিতে শামিল বড়রাও।
সকালে প্রভাত ফেরির মধ্যে দিয়ে শুরু হয় উৎসব। তার পর একের পর সঙ্গীতানুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে চলে কবি বন্দনা।
নাচের অনুষ্ঠানে দেখা গেল সকলের পরনেই হলুদ শাড়ি, কপালে লাল টিপ। গলায় গাঁদার মালা। গালে ফাগুনের রং।
অনুষ্ঠানের কচি কাঁচাদের কথায়, অনেক দিন আগে থেকেই রিহার্সাল শুরু হয়েছে। করোনা আবহে বিগত দু’বছর তারা সেভাবে আনন্দ করতে পারেনি। তাই এবার প্রবল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে তাদের এই অনুষ্ঠান। বাড়ির বড়রাও পাশে আছে।
উল্লেখ্য, দোল পূর্ণিমা বাংলার বসন্ত উৎসব। প্রতি বছর বাঙালীরা এই দিনটিতে রঙ খেলায় আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠে। দোলযাত্রা যেন বসন্তের আহ্বান। এই উৎসবটি যেন জানিয়ে দেয় শীত বিদায় নিয়েছে, এসেছে বসন্তের ছোঁয়া। এই দিনটিতে বাঙালিরা একে অপরকে রঙে রাঙিয়ে দেয়। এই দিনে বাতাসে যেন একটাই সুর বয়ে চলে “রাঙিয়ে দিয়ে যাও যাও যাও গো এবার যাবার আগে”। এই বসন্ত উৎসবকে স্বাগত জানাতে প্রকৃতি যেন এক বর্ণিল সাজে সেজে ওঠে।
মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্যের জন্ম হয়েছিল এই পূর্ণিমার তিথিতে, তাই দোল পূর্ণিমাকে গৌরী পূর্ণিমা বলা হয়। দোল পূর্ণিমা অনেক পৌরাণিক ঘটনা। এই তিথিতে বৃন্দাবনে আবির ও গুলাল নিয়ে শ্রী কৃষ্ণ, রাঁধা এবং তার গোপীগনের সঙ্গে হোলি খেলেছিল আর সেই ঘটনা থেকে উৎপত্তি হয় দোল খেলা।
দোল পূর্ণিমার মূল আকর্ষণ আবির। এই দিনটি আবিরের রঙে রাঙিয়ে দেওয়ার দিন। এই দিনের পূজিত ঈশ্বর রাঁধা-কৃষ্ণ। বাঙালির দোলযাত্রাটি রাঁধা কৃষ্ণকে ঘিরেই। তাকে দোলায় বসিয়ে ওই দিনে পূজিত করা হয়।