পুবের কলম প্রতিবেদক: রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে চলেছেন অমিত মিত্র। অর্থমন্ত্রী হিসেবে ৬ মাসের মেয়াদ শেষ হলে মন্ত্রিত্ব থেকে তিনি অব্যাহতি নেবেন বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। নির্বাচনে অমিত মিত্র যে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান না সেকথা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা এবং বয়সের কারণেই অমিত মিত্র নির্বাচনে না লড়াইয়ের ইচ্ছাপোষণ করে অনুরোধ জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেই অনুরোধের মান্যতা দিয়েই খড়দা থেকে ২১’এর নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন কাজল সিনহা। ফল প্রকাশের আগেই করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন তিনি। তাই এই আসনটি শূন্য পড়ে রয়েছে। যদিও তৃণমূল সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল খড়দা থেকে এবারের নির্বাচনে লড়বেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। যিনি ভবানীপুর থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তখন থেকেই অবশ্য জল্পনা শুরু হয়েছিল তাহলে বর্ষীয়ান নেতা অমিত মিত্রকে কোন কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করবে দল?
ভবানীপুর থেকে উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৬ মাসের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেই বিরতি নেবেন অমিত মিত্র। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গেছে তিনি বিদেশে তাঁর মেয়ের কাছে চলে যাবেন। সেক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রকের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি দফতরের গুরুদায়িত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাকে দেন সেদিকেও নজর রয়েছে সকলের।
২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের অর্থমন্ত্রী হয়েছিলেন অমিত মিত্র। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। রাজ্যের বিপুল দেনা সামলে অর্থ দফতরকে সঠিক পথে পরিচালনা করে আর্থিক ঘাটতি মেটাতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
২০২১ সালে তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে আবারও অর্থমন্ত্রকের মত গুরুদায়িত্ব দেন। যদিও জানা যাচ্ছে প্রথমে রাজি না হলেও ৬ মাসের জন্য তিনি মন্ত্রক সামলে দেওয়ার অনুরোধে রাজি হন।
সপ্তদশ বিধানসভার অধিবেশনে শারীরিক অসুস্থতার কারণে উপস্থিত হতে পারেননি তিনি। তাই এবারের বাজেট পেশ করেন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সব মিলিয়ে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে অর্থ দফতর নিয়ে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে বিধান পরিষদ গঠনের ক্ষেত্রে শাসক শিবিরকে তুমুল বিরোধিতার মধ্যে পড়তে হতে পারে। ৬ মাসের মধ্যে বিধানপরিষদ গঠন কার্যত অসম্ভব। অন্যদিকে উপনির্বাচনে জিতে না আসতে পারলেও মন্ত্রিত্ব নিয়ে সংশয় তৈরি হবে।
এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে অমিত মিত্রের অব্যাহতির অনুরোধ মেনে নেওয়া ছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আর কোনও পথ নেই। সেক্ষেত্রে এই গুরুদায়িত্ব আপাতত তিনি নিজের হেফাজতেই রাখতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।