পুবের কলম প্রতিবেদক: ‘ইউনানি’ হচ্ছে প্রাচীনতম চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে অন্যতম একটি পদ্ধতি। বহুযুগ ধরে ভারতেও ইউনানি মেডিসিনের প্রাক্সটিস চলে আসছে। তবে সেই চিকিৎসা পদ্ধতির পুনর্জাগরণ করেন হাকিম আজমাল খান। তিনি শুধু হাকিমই ছিলেন না, তিনি ছিলেন বহুগুণের মানুষ। রাজনীতি, শিক্ষাবিস্তার সহ নানান ক্ষেত্রে তাঁর অবদান রয়েছে। ১১ ফেব্রুয়ারি ছিল তাঁর ১৫৪তম জন্মদিন। সেই উপলক্ষে রবিবার কলকাতার জাতীয় গ্রন্থাগারের ভাষাভবনে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ‘কে এফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন’। সেখানেই ইউনানি চিকিৎসার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন বিশিষ্টরা।
বক্তারা আহ্বান জানান, ইউনানি চিকিৎসা পদ্ধতিকে সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিতে হবে।
এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মাদ্রাসা ও সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী মুহাম্মদ গোলাম রব্বানী।
পুবের কলম-এর সম্পাদক তথা রাজ্য ইউনানি কাউন্সিলের সদস্য রাজ্যসভার সাবেক সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান নেচারোভেদার খালিদ সাউফুল্লাহর ইন্তেখাব আলম প্রাক্তন বিধায়ক ডা. এম. এ. কাসেম, ডা. এম. নুরুজ্জামান বিশিষ্ট বলিউড অভিনেতা রাজা মুরাদ ইউনানি কাউন্সিলের নিবন্ধক ইমতিয়াজ সাহেব ডা. মুহাম্মদ নিজামুদ্দিন প্রমুখ।
এ দিন আহমদ হাসান ইমরান বলেন, হাকিম আজমাল খান ইউনানিকে ভারতে পুনরুজ্জীবিত করেছেন। ইউনানি একটি ইউনিক সিস্টেম অফ মেডিসিন। আমাদের রাজ্য বা দেশ থেকে ইউনানি লুপ্ত হতে চলেছে।
এই পদ্ধিতে যে সব মেডিসিন রয়েছে তার প্রচার হওয়া দরকার। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে- মাল্টি-ন্যাশনাল কোম্পানিগুলি তাদের প্রচার ও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মানুষের মন-মস্তিষ্ককে এমন করে দিয়েছে, যাতে মানুষ মনে করে সেই ওষুধটা না খেলে কাজ হবে না। কিন্তু তা নয়। ইউনানির মধ্যে এমন ওষুধ রয়েছে যা রোগকে শিকড় থেকে নির্মূল করে। তাই এর প্রচার ও প্রসারের দরকার আছে। আজকের এই সভা সেই কাজে সহায়তা করবে বলেই আমি মনে করি। গ্রামের দিকে সরকারি বা ভালো চিকিৎসা পরিষেবা ক’জনই বা নিতে পারেন সেখানে ইউনানি চিকিৎসা পদ্ধতিকে যদি নিয়ে যেতে পারি তবে মানুষের উপকার হবে। আমাদের স্বাস্থ্য-ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করবে ইউনানি। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, হাকিম আজমাল খান দিল্লিতে হিন্দুস্থান ক্লিনিক চালু করেছিলেন, মাত্র ১০-১৫ দিন হল সেই নামটাই পালটে দেওয়া হয়েছে। ইতিহাসকে চেঞ্জ করে দেওয়া হচ্ছে।
রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানী বলেন, হাকিম আজমল খানের নাম কিয়ামত পর্যন্ত জিন্দা থাকবে। তিনি বড় মাপের মানুষ ছিলেন। ছিলেন একজন সফল রাজনীতিবিদ। ইউনানি চিকিৎসার আরও শ্রীবৃদ্ধি হোক সেই কামনাও করেন মন্ত্রী।
অন্যদিকে বিশিষ্ট চিকিৎসক প্রাক্তন বিধায়ক ডা. এম. এ. কাসেম ও ডা. এম. নুরুজ্জামানও হাকিম আজমাল খানের জীবনের নানান দিক তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, ইউনানিকে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির কাছাকাছি আনতে হবে। ছড়িয়ে দিতে হবে সব খানে। কাসেম সাহেব বলেন, তাঁরা ইউনানি কাউন্সিলে হাকিম আজমাল খানের প্রতিকৃতি নির্মাণ করবেন।
এ দিন রাজ্যের বিশিষ্ট ইউনানি চিকিৎসকদের সংবর্ধনাও দেওয়া হয়। আগামীদিনে যাতে চিকিৎসকরা গবেষণা ও ইউনানি চিকিৎসা পদ্ধতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সচেষ্ট হন তাই এই উ্যদোগ বলে জানান উদ্যোক্তরা।