পুবের কলম প্রতিবেদকঃ কিছুদিন আগে বিকানির গুয়াহাটি এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়ে। আদৌতে দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা তা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠছিল। অবশেষে কমিশন অফ রেলওয়ে সেফটির রিপোর্টেও স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে, ইঞ্জিনের ত্রুটিতেই গত ১৩ জানুয়ারি ময়নাগুড়ির দোমোহনিতে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বিকানের গুয়াহাটি এক্সপ্রেস।
জানা গিয়েছে, নির্দিষ্ট দূরত্বের চার গুণ পথ অতিক্রম করলেও ওই ইঞ্জিনটির কোনও পরীক্ষাই করা হয়নি। কোনও পরীক্ষা না করেই যে ওই ইঞ্জিন ছুটছিল।
প্রসঙ্গত, দোমোহনির ট্রেন দুর্ঘটনার পরই কমিশন অফ রেলওয়ে সেফটিকে দুর্ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার সেই তদন্ত রিপোর্টই জমা পড়েছে রেল বোর্ডের কাছে।
তাতে দাবি করা হয়েছে, আপ বিকানের গুয়াহাটি এক্সপ্রেসে যে ওয়্যাপ ফোর ইঞ্জিন লাগানো ছিল, প্রত্যেক সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার অতিক্রম করার পরই সেই ইঞ্জিনের ট্রিপ ইন্সপেকশন হওয়ার কথা, কিন্তু প্রায় ১৮ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেও সেই ইঞ্জিনের কোনও পরীক্ষা করা হয়নি।
কমিশন অফ রেলওয়ে সেফটির রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে, ইঞ্জিনটির শেষ পরীক্ষা হয় ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর। তার পর একমাসে ১৮ হাজার কিলোমিটার অতিক্রম করে সেই ইঞ্জিন। কিন্তু নিয়ম মেনে ইঞ্জিনের কোনও ট্রিপ ইন্সপেকশন হয়নি। শেষপর্যন্ত ১৩ জানুয়ারি দোমোহনিতে লাইনচ্যুত হয় ইঞ্জিন ও বেশ কয়েকটি বগি। মারা যান ৯ জন যাত্রী। বহু মানুষের ক্ষতি হয়।
কমিশন অফ রেলওয়ে সেফটির রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে, রেলের ভাষায় ২২৩৭৫ নম্বর ইঞ্জিনটি একটি মিস লিঙ্ক ইঞ্জিন। অর্থাৎ আদতে ইঞ্জিনটি আগ্রা ক্যান্টনমেন্ট ডিভিশনের হলেও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রেলের অন্যান্য ডিভিশনেও চলত ইঞ্জিনটি। তাই হয়ত সময়মতো ইঞ্জিনের পরীক্ষার বিষয়টি দেখভাল করা হয়নি।
আরও বলা হয়েছে, ট্রিপ ইনস্পেকশন ইঞ্জিনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষা। এই পরীক্ষার সময় ইঞ্জিনের নীচের অংশে আন্ডারগিয়ার পরীক্ষা করে সেটি চলাচলের উপযুক্ত কি না তা সুনিশ্চিত করেন রেলের প্রশিক্ষিত অফিসাররা। ট্রেন দুর্ঘটনার পরই দেখা যায়, ইঞ্জিনের নীচের ট্র্যাকশন মোটর ভাঙা অবস্থায় রয়েছে।