পুবের কলম ওয়েবডেস্ক অবস্থার অত্যন্ত অবনতি কিংবদন্তী সঙ্গীত শিল্পী লতা মঙ্গেশকরের। খুব সম্প্রতি তাঁকে ভেন্টিলেশন থেকে বার করা হয়েছিল। টানা ১৫ দিন ভেন্টিলেশনে থাকার পর এই কিংবদন্তী শিল্পীকে ভেন্টিলেশন থেকে বার করা হলেও আজ শনিবার তাঁকে ফের দেওয়া হল ভেন্টিলেশনে। ২৭ দিন ধরে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন মুম্বইয়ের ব্রিচক্যান্ডি হাসপাতালে। করোনা এবং তার সঙ্গে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় সুর সম্রাজ্ঞী কে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রথম থেকেই তাঁকে আইসিইউতে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়।
তবে খুব সম্প্রতি তিনি করোনা মুক্ত হন।অবশেষে আসে সেই সুখবর, কোভিডমুক্ত হলেন কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকর। একইসঙ্গে তিনি হারিয়ে দিয়েছেন নিউমোনিয়াকেও। রবিবার বিকেলে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে এই কথা জানান মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ টোপে।
গত ৮ জানুয়ারি মুম্বইয়ের ব্রিজক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৯২ বছর বয়সী এই শিল্পীকে। বার্ধক্যজনিত একাধিক অসুস্থতা সেই সঙ্গে তিনি ছিলেন কোভিড পজিটিভ। পাশাপাশি শরীরে বাসা বেঁধেছিল নিউমোনিয়া।
গত তিনদিন ধরেই তিনি রয়েছেন ভেন্টিলেশনের বাইরে। রাজেশ টোপে আরও জানিয়েছেন ব্রিচক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করার পর
তাঁকে প্রথম থেকেই রাখা হয় আইসিইউতে,ভেন্টিলেশনেই রাখতে হয়েছিল তাঁকে। টানা ১৫ দিন ছিলেন ভেন্টিলেশনে। ১৫ দিন পর তাঁকে বার করা হয় ভেন্টিলেশন থেকে। এখন তিনি চোখ মেলে তাকাছেন। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলছেন। শুধুমাত্র অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। কিন্তু দুর্বলতা এবং সংক্রমণের প্রবণতা এখনও রয়েছে।কিন্তু চিকিৎসকরা আশাবাদী তিনি যেভাবে সাড়া দিচ্ছেন চিকিৎসায় তাতে খুব দ্রুত তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
এই কিংবদন্তী শিল্পীর শারীরিক অবস্থা নিয়ে বেশ কিছু ভুয়ো খবর এবং গুজব রটছিল। তাতে কান না দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন স্বয়ং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানীও।
১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন লতা মঙ্গেশকর। ১৯৪২ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে একজন পেশাদার কণ্ঠশিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। তারপর আর তাঁকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
সাত দশকে সহস্রাধিক চলচ্চিত্রে গান গেয়েছেন। ভারতের ৩৬টি আঞ্চলিক ভাষা ও বিদেশি ভাষায় গান গেয়েছেন তিনি। গেয়েছেন চলচ্চিত্রের বাইরে আরও অনেক গান।
১৯৭৪ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত বিশ্বে সর্বাধিক গান রেকর্ড করার জন্য গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম ওঠে তার। এই সময়ে তিনি ২০টি ভাষায় ২৫০০০ এর বেশি গানে কণ্ঠ দেন। কিন্তু ২০১১ সালে এ রেকর্ডটি ভেঙে দেন তারই ছোট বোন আশা ভোসলে।
লতা মঙ্গেশকর ভারতরত্ন, পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণসহ অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন। পেয়েছেন দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার, তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ফিল্মফেয়ার চারবার সেরা মহিলা প্লেব্যাক, ১৯৯৩ সালে আজীবন সম্মাননা এবং ১৯৯৪-২০০৪ সাল পর্যন্ত বিশেষ পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়া ১২ বার বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্টস’ অ্যাসোসিয়েশন পুরস্কার।
সারা দেশ জুড়ে সকলেই এই কিংবদন্তি শিল্পীর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছেন।