পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ দুদিনের সফরে কলকাতায় আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। দশ বছর পর আবার কলকাতায় বৈঠক হচ্ছে আরএসএস-এর। সোমবার সন্ধ্যাতেই তাঁর শহরে আসার কথা। ফিরবেন বুধবার সন্ধ্যায়। আরএসএস সূত্রে খবর, মঙ্গল ও বুধবার কলকাতায় সংঘের সদর দফতর অভেদানন্দ রোডের কেশব ভবনে একটি সর্বভারতীয় বৈঠক হবে। সেখানে সংঘ প্রধান মোহন ভাগবত ছাড়াও থাকবেন সরকার্যবাহ দত্তাত্রেয় হোসবালে এবং ৫ সহ-সরকার্যবাহ কৃষ্ণ গোপাল, মনমোহন বৈদ্য, মুকুন্দ সি আর, অরুণ কুমার এবং রামদত্ত চক্রধর।
বর্তমান সময়ে কলকাতায় বিজেপির দলীয় নেতাদের অন্দরে কোন্দল মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ক্রমশ আভ্যন্তরীণ বিরোধ বেড়ে চলেছে। দলের মধ্যে এই বিরোধ আর সীমাবন্ধ নেই। ইতিমধ্যেই দল থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের পর সাংবাদিক বৈঠক করে দল ও বিজেপি নেতাদের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা গেছে। দলের মধ্যে বিদ্রোহের সূত্রপাত হতে দেখা দিয়েছিল বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুর হাত ধরে। সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বাদ পড়ার পরেই দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভের পারদ চড়তে থাকে সায়ন্তনের মধ্যে। আর সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশও ঘটে। বিজেপির হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যান সায়ন্তন। এর পর বহু বিজেপি নেতাই বিজেপি হোয়াটস অ্যাপ ছেড়ে বেরিয়ে যান। সাংগঠনিক জেলা সভাপতি এবং ইনচার্জদের নাম ঘোষণা পরে উত্তর ২৪ পরগনা এবং নদিয়ার কয়েকজন বিধায়ক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছেন। দলের রাজ্য ও জেলার বিভিন্ন গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন বাঁকুড়ার ৫ বিধায়কও।
এর পরেই জল আরও ঘোরালো হতে শুরু করে শান্তনু ঠাকুরকে নিয়ে। মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের নতুন রাজ্য ও জেলা কমিটিতে জায়গা না দেওয়া ক্রমশ ক্ষোভ বাড়তে থাকে। বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতাদের নিয়ে পিকনিক করতেও দেখা যায় শান্তনু ঠাকুরকে। সেখানে দেখা যায় বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারকে।
দল থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত হতে বিজেপির বিরুদ্ধে ম্যারাথন সাংবাদিক বৈঠক করে ক্ষোভ উগরে দেন বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারী। বরখাস্ত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গ বিজেপির সংগঠন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্য বিজেপিতে সংগঠন বলে কিছু নেই। বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তারা।
এদিকে এই ধরনের বক্তব্য শোনার পরেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সাংবাদিক বৈঠক করে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। তাও পরিস্থিতি বেশ জটিল হয়েই রয়েছে।
এই পরিস্থিতির মধ্যে কলকাতা সফরে মোহন ভাগবত। আপাতত বিজেপি নেতাদের উদ্দেশে সংঘ প্রধান কি বার্তা দেন সেদিকেই তাকিয়ে আছে গেরুয়া শিবির।