ক্যালিফোর্নিয়া, ২ সেপ্টেম্বর: আট দিনের মিশন আট
মাসের হয়ে গিয়েছে। মহাকাশে আটকে সুনীতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর। দুই নভশ্চরকে ছাড়াই
পৃথিবীতে ফিরছে স্টারলাইনার মহাকাশযান। নাসার সিদ্ধান্তে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি
পর্যন্ত আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনই থাকতে হবে সুনীতাদের। স্বভাবতই ফিরে আসছে কল্পনা চাওলার
স্মৃতি। ২০০৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পৃথিবীতে ফেরার পথে বিস্ফোরণে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল ‘কলম্বিয়া‘ নামক মহাকাশযান। তাতে ছিলেন সুনীতারই
মতো ভারতীয় বংশোদ্ভূত নভশ্চর কল্পনা চাওলা। মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল কল্পনা
ও তাঁর ৬ সঙ্গীর। নাসা জানিয়েছিল, পৃথিবীতে ফেরার সময় বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে সংঘর্ষ
হয় মহাকাশযান ‘কলম্বিয়ার‘। তাতেই ভস্মীভূত হয় যানটি। এই দুর্ঘটনার পর টানা দু’বছর মহাকাশ অভিযান
বন্ধ রেখেছিল নাসা। এবার সুনীতাদের পৃথিবীতে ফেরানোর ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা
চলছে বিজ্ঞানী মহলে। আশঙ্কাবাণী শুনিয়েছেন আমেরিকার মিলিটারি স্পেস সিস্টেমস–এর প্রাক্তন কম্যান্ডার
রুডি রিডল্ফি। তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ধাক্কা খেয়ে জ্বলে যেতে পারে বোয়িং স্টারলাইনার মহাকাশযানটি। খাড়া অবস্থায় মহাকাশযানটি
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে গেলে, তার বর্মটি নষ্ট হয়ে গিয়ে বিপর্যয় নেমে আসতে
পারে। কার্যত বাষ্পীভূত হয়ে উবে যেতে পারেন সুনীতারা।’ তবে এবার আগের চেয়ে অনেক বেশি সতর্কতা
অবলম্বন করা হচ্ছে বলে জানান নাসার প্রধান বিল
নেলসন। তাই সুনীতাদের ফেরাতে বোয়িং–এর পরিবর্তে সাহায্য নেওয়া হবে স্পেস এক্স মহাকাশযানের। সবকিছু পরীক্ষা করার পরই ফেরানো হবে সুনীতা ও তাঁর সঙ্গীকে।
তবে এতটা সময়ে মহাকাশে কাটানোর ফলে সুনীতাদের দেহে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন লক্ষ্য করা গিয়েছে। কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের
মতে, তিন মাসের বেশি যদি মহাকাশের বুকে কেউ ঘুরে বেড়ান তবে তাঁর লিভার সবথেকে বেশি সমস্যা
পড়ে। এর ফলে তাঁর রোজকার খাবার পরিবর্তিত হয়। মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফেরার পর
দেখা দেয় হজমের সমস্যা। দেহে এমন নতুন জীবাণু তৈরি হয় যা পৃথিবীর অন্য জীবাণু থেকে
একটু আলাদা হয়। এ থেকে নভশ্চরদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। পরবর্তীতে এর ফলে জিনগত সমস্যাও হতে পারে।