পোলতোভা, ৪ সেপ্টেম্বর: ইউক্রেনের তিন শহরে প্রতিশোধমূলক হামলা চালাল রাশিয়ান সেনা। ইউক্রেনের মধ্যাঞ্চলীয় শহর পোলতাভায় রাশিয়ার জোড়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৫১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৭১জনেরও বেশি মানুষ। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বলাই বাহুল্য, রাশিয়ার এই হামলা দেখে কেঁপে উঠেছে ইউক্রেনের মিত্র দেশগুলিও। কিয়েভ কর্মকর্তারা বলছেন, আড়াই বছরের যুদ্ধে এটি ছিল অন্যতম মারাত্মক রুশ হামলা। কিয়েভ থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত ৩ লক্ষ জনসংখ্যার নগরী পোলতাভায় মঙ্গলবার সকালে এ হামলা চলে। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এক ভিডিয়ো বার্তায় বলেছেন, রুশ বাহিনী দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এর ফলে সামরিক যোগাযোগ ইনস্টিটিউটের একটি ভবন ক্ষতিগ্রসয়েছে। একইসঙ্গে পোলতাভা শহরের শিক্ষা কেন্দ্র ও নিকটবর্তী হাসপাতালেও হামলা চালানো হয়েছে বলে তাঁর দাবি। জেলেনস্কি আরও বলেন, এই হামলার জন্য রাশিয়াকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। পাশাপাশি ইউক্রেনকে রক্ষা করতে পশ্চিমাদের আরও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিতে হবে। ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পোলতাভার সামরিক ইনস্টিটিউটে হামলায় বেশ কয়েকজন সেনার মৃত্যু হয়েছে। তবে নিহতদের মধ্যে কতজন সামরিক বা অসামরিক রয়েছে তা জানানো হয়নি। ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রক বলেছে, ‘সময় এতই কম ছিল যে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে।’ পোলতাভাতের পর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও পশ্চিমামঞ্চলীয় লভিভ শহরেও ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় রাশিয়া। এতে নিহত হন অন্তত ৭জন। প্রত্যক্ষদর্শীরা কিয়েভ এবং লভিভের উপকণ্ঠে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। ইউক্রেনের সামরিক কর্মকর্তারা বলেছেন, তাদের প্রতিরক্ষা ইউনিট হামলা প্রতিহত করতে নিয়োজিত ছিল। লভিভের আঞ্চলিক গভর্নর ম্যাকসিম কোজিটস্কি জানান, ‘লভিভ শহরে আবাসিক ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যেগুলো বৃহত্তর এই অঞ্চলের প্রশাসনিক কেন্দ্র’। রুশ হামলার পর ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ড তাদের আকাশ প্রতিরক্ষাকে সজাগ রেখেছে। মস্কো বলেছে, ‘ইউক্রেনে চালানো এই হামলা সামরিক, জ্বালানি ও পরিবহন অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে। অসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে নয়।’ বিশ্লেষকরা বলছেন, রুশ ভূখণ্ডে প্রবেশ করে চালানো হামলার ফল ভোগ করতে হচ্ছে কিয়েভকে।