পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্ষা খেলেন
আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ
বহাল রাখল শীর্ষ আদালত। সন্দীপ ঘোষও সিবিআই হেফাজতে থাকবেন।
উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ডে দুর্নীতির মামলায় সিবিআই
তদন্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সর্বোচ্চ আদালতের
দ্বারস্থ সন্দীপ ঘোষ। দায়ের হয়েছিল জনস্বার্থ মামলা। তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই
চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ।
সন্দীপ ঘোষের আবেদন ছিল, আর্থিক দুর্নীতি মামলায় যে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া
হয়েছে এবং মূল যে ধর্ষণের মামলা, পুরো বিষয়টি একসঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে। তাতেই আপত্তি
তাঁর।
এদিন সন্দীপ ঘোষের আইনজীবী বলেন, ‘আমার
মক্কেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। কিন্তু আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের
ঘটনার সঙ্গে আমার মক্কেলের কোনও সম্পর্ক নেই। শুধু দুর্নীতির মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে
অভিযোগ রয়েছে। তা হলে জনস্বার্থ মামলায় তার নাম আসছে কেনো? আইনজীবী আরও জানান, ‘সিবিআই যে
তদন্ত করছে, আমার মক্কেল তার বিরোধী নন। কিন্তু হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, আমার
মক্কেল দুর্নীতি চক্রে জড়িত। এই কথা সত্যি নয়, ক্ষতিকারক।
সুপ্রিম কোর্ট
জানায়, ‘এটা হাইকোর্টের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ। তদন্ত চলছে। আমরা এ বিষয়ে
সিবিআইয়ের কাছেও তথ্য চেয়েছি।’ সন্দীপের আইনজীবীর বক্তব্য, ‘আমিও চাই সিবিআই নিরপেক্ষ তদন্ত করুক।
হাসপাতালের ‘বায়োমেডিক্যাল ওয়েস্ট’ বা জৈব বর্জ্য নিয়ে যে অভিযোগ আনা
হয়েছে, তার
নিরপেক্ষ তদন্ত হোক।’ প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, এটা কি একজন অভিযুক্ত বলতে পারেন?
শুক্রবার সন্দীপ ঘোষের মামলায় প্রধান
বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, সিবিআই তদন্তের উপর এখনই তারা হস্তক্ষেপ করছে না। এই ঘটনার
তদন্ত যে স্বচ্ছভাবে হচ্ছে, তা নিশ্চিত করতে হবে কলকাতা হাইকোর্টকে।
আর্থিক দুর্নীতির তদন্তের আলাদা স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার
নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সিবিআইকে। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও সলিসিটর
জেনারেল তুষার মেহতা, দু’জনেরই পর্যবেক্ষণ, একজন অভিযুক্ত কখনওই তদন্তের গতিপ্রকৃতি কীভাবে এগোবে
তা নিয়ে নির্দেশ দিতে পারেন না। তার প্রেক্ষিতেই যাবতীয় আবেদন খারিজ হয়ে যায়
সন্দীপের। সিবিআইকে স্টেটাস রিপোর্টও দিতে বলে আদালত। এর আগে আরজি করের
নির্যাতন-খুন মামলাতেও স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছিল। জমা
দিয়েছে সিবিআই।
উল্লখ্য, সন্দীপ
ঘোষের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গত ৯ আগষ্ট আরজি করে
এক তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ- খুনের পর সব অভিযোগ নতুন করে সামনে আসে। প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ
উঠেছে। সেই সময়
আরজি করের প্রাক্তন সুপার আখতার আলি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁর দাবি ছিল, ইডি যেন সন্দীপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত করে। তবে যেহেতু খুনের মামলায়
সন্দীপকে সিবিআই পরপর জেরা করে চলেছিল, এই আবহে
তদন্তের সরলীকরণের জন্যেই সিবিআই-কে দুর্নীতির মামলার তদন্ত করার নির্দেশ দেয় উচ্চ
আদালত।