ভোপাল, ৭ সেপ্টেম্বর: ‘অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা তারে তৃণ সম দহে’ সেই প্রবাদ বাক্যের মতো ঘটনা ঘটেছে বিজেপিশাসিত মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীতে। একজন অপরাধী প্রকাশ্য রাস্তায় ধর্ষণ করল, সেই সময় মেয়েটিকে বাঁচানো তো দূরের কথা বেশ কিছু পথচারি নির্যাতন উপভোগ করতে করতে সেটি মোবাইল ফোনে ক্যামেরাবন্দি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিল। ঘটনায় বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজনদের শনাক্ত করেছে পুলিশ। তিন থেকে চারজনকে পুলিশ তার নজরে রেখেছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে একটি তদন্তকারি দল গঠন করা হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ ধর্ষককে আগেই গ্রেফতার করেছে।
উজ্জয়িনীর এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় ধিক্কার জানিয়েছে নেটিজেন থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। তাদের প্রশ্ন, বিজেপিকে বলতে দেখা যায় তাদের রাজ্যে নারীরা সুরক্ষিত, এর নাম ‘সুরক্ষা’?
কোতয়ালি অঞ্চলের শহর পুলিশ সুপার(সিএসপি) ওম প্রকাশ মিশ্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যারা এই ধর্ষণের ঘটনা মোবাইলে ভিডিয়ো করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে, সেই রকম তিন থেকে চারজন আমাদের সন্দেহের তালিকায় রয়েছে। সন্দেহভাজনরা প্রত্যেকেই আলাদা আলাদা এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। তাদের ধরতে পুলিশের একটি দল গঠন করা হয়েছে। মিশ্র জানিয়েছেন, নির্যাতিতার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, সে তার বাড়িতে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, নির্যাতিতা কাগজ কুড়ানির কাজ করতেন। তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল অভিযুক্ত লোকেশ। পরে তাকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে মদ্যপান করায় লোকেশ। এর পর দিনের বেলা রাস্তায় পথ চলতি মানুষের সামনে তাকে ধর্ষণ করে। সেই পাশবিক অত্যাচারের ভিডিয়ো করে একদল ‘মানুষ’, সেটি সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় তারা। কেউ মেয়েটিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। ঘটনা ঘটিয়ে লোকেশ পালিয়ে যায়। পরে নির্যাতিতা সমস্ত ঘটনা জানিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানালে পুলিশ লোকেশকে গ্রেফতার করে।
বুধবার উজ্জয়িনীর এই ঘটনায় রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী থেকে, সোশ্যাল মিডিয়ার নেটিজেনরা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তাদের দাবি অভিযুক্তদের কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তির।
কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র শামা মুহাম্মদ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জানিয়েছেন, উজ্জয়িনীতে একজন মহিলাকে এইভাবে প্রকাশ্য রাস্তায় দিনে দুপুরে ধর্ষণ আর পাশ দিয়ে যাওয়া পথচারীরা নির্যাতন না রুখে সেটির ভিডিয়ো তুলল। কোথায় বাস করছি আমরা? শামা মুহাম্মদ আরও বলেন, যেহেতু বিজেপি শাসিত রাজ্যে এই ঘটনা ঘটেছে, তাই মেন স্ট্রিম মিডিয়াগুলি এই নিয়ে তেমনভাবে কোনও খবর প্রকাশ করছে না। আর কলকাতায় আরজি কর কাণ্ডে বিজেপি যেভাবে তারা ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন, এখানে তাদের সেইভাবে প্রতিবাদী মুখ হতে দেখা তাদের দেখা যাচ্ছে না।