পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ সম্প্রতি তারাতলা থেকে বজবজে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার মৃত্যু হয় এক শিশু সহ তিন জনের। দুটি বাইকের রেষারেষিতে মৃত্যু হয় তিনজনের। এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তদন্তে নামে মহেশতলা থানার পুলিশ। এরপরেই নড়েচড়ে বসে রাজ্য সরকার। এবার সম্প্রীতি উড়ালপুলে পণ্যবাহী গাড়ি ও লরি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল। বৃহস্পতিবার, কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভলপমেন্ট অথরিটির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, কোনওভাবেই সম্প্রীতি উড়ালপুলে ভারী পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করতে পারবে না।
কেএমডিএ-র তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৯ ডিসেম্বরের প্রশাসনিক বৈঠকে সম্প্রীতি উড়ালপুলের সেতু-স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পরেই সরকারের পক্ষ থেকে উড়ালপুলে ভারী পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে উড়ালপুলের ওপর ট্রাফিক কনট্রোল করা হবে।
মূল কলকাতার সঙ্গে বাটানগর ও বজবজ সংযুক্তকারী এই উড়ালপুল বরাবরই দুর্ঘটনাপ্রবণ বলেই পরিচিত। তাই, ভারী পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে ঝুঁকিও বেশি। সবদিক থেকে চিন্তা করেই কেএমডিএ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ শহরতলীতে রয়েছে বাটানগর উড়ালপুল। দুই লেনের উড়ালপুলের মোট দৈর্ঘ্য ৭.৫ কিলোমিটার ও চওড়া ১৫ ফুট যা রাজ্যের দীর্ঘতম উড়ালপুল। উড়ালপুলটি জিনঞ্জিরা বাজারের সঙ্গে বাটানগরকে যুক্ত করেছে। মূল কলকাতার সঙ্গে বাটানগর ও বজবজকে যুক্তকারী বজবজ ট্রাঙ্ক রোড প্রয়োজনের তুলনায় সংকীর্ণ ফলে এই সড়কটিতে সব সময় যানজট লেগে থাকত। এই সমস্যা সমাধানের জন্য বাটানগর উড়ালপুল নির্মাণের কথা ভাবা হয়। নির্মাণের কথা ঘোষণা হয় ২০১৪ সালে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে তৎকালীন জওহরলাল নেহেরু জাতীয় নগর নবায়ন মিশন-এ(বর্তমান অটল নবায়ন ও নগর রূপান্তরণ মিশন) এই উড়ালপুল তৈরির অনুমোদন দেয় কেন্দ্র এবং ২০১৫-য় নির্মাণের কাজ শুরু হয়।
উড়ালপুলটি নির্মাণের দরপত্র গ্রহণ করার পরে, এল অ্যান্ড টি কোম্পানি উড়ালপুলটির নির্মাণের কাজে নিযুক্ত হয়। এর নির্মাণ খরচ ধরা হয় ২৫৫ কোটি টাকা। যার মধ্য ৮৬.৮ কোটি টাকা দেবে কেন্দ্র সরকার ও বাকি টাকা দেবে নির্মাণ সংস্থা। অক্টোবর ২০১৮ সালে উড়ালপুলের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। তবে উড়ালপুলের নির্মাণে মোট খরচ হয় ৩৩০ কোটি টাকা। ১১ জানুয়ারি ২০১৯ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উড়ালপুলের উদ্বোধন করেন।