শ্রীনগর, ১৪ সেপ্টেম্বর: ধর্ষণে অভিযুক্ত বায়ুসেনা অফিসারকে গ্রেফতারের আগেই আগাম জামিন দিল জম্মু-কাশ্মীর হাইকোর্ট। অভিযুক্তকে ৫০ হাজার টাকার বন্ডে জামিন দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর ওই মামলায় অভিযুক্ত সেনা আধিকারিকের জামিনের আবেদন মঞ্জুরের প্রসঙ্গে আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘আবেদনকারী একজন উইং কমান্ডার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন, তাকে গ্রেফতার করা হলে তার সুনাম ক্ষুন্ন এবং চাকরি ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে।’ বিচারপতি রাজনেশ ওসওয়ালের একক বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলে।
আদালত পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে,কোর্টের অনুমতি ছাড়া এই মামলায় চার্জশিট দেওয়া যাবে না। তদন্ত চলবে। কমান্ডিং অফিসারের অনুমতি ছাড়া উপত্যকা ছেড়ে যেতে পারবেন না ওই উইং কমান্ডার। সাক্ষীদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতে পারবেন না। এই ঘটনায় জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনকে স্টেটাস রিপোর্ট দিতে বলেছে আদালত।
প্রসঙ্গত, জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগরে পোস্টিং ওই মহিলা পাইলট তাঁর সিনিয়র এক উইং কমান্ডারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। বদগাম থানায় মহিলা পাইলটের এফআইআর দায়েরের ভিত্তিতে অভ্যন্তরীণ তদন্তের নির্দেশ দেয় ভারতীয় বায়ুসেনা। এরপরই আগাম জামিন চেয়ে জম্মু ও কাশ্মীর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিযুক্ত সেনা আধিকারিক। আদালতের এই রায় ঘিরে ইতিমধ্যেই শোরগোল শুরু হয়েছে।
নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের হয় বদগাম থানায়। অভিযোগকারি ও অভিযুক্ত দুজনেই উপত্যকার বায়ুসেনার ঘাঁটিতে কর্মরত রয়েছেন। অভিযোগকারিণী জানান, ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর বর্ষবরণ পালিত হচ্ছিল অফিসারদের মেসে। তিনি কি উপহার পেয়েছেন তা জানতে চান উইং কমান্ডার। উপহার পাননি জানাতে, ওই উয়ং কমান্ডার জানান, তার ঘরে উপহার রাখা আছে। সেই মতো ঘরে যেতে বলা হয় তাঁকে। ওই ঘরে কেউ ছিল না। পরিবারের কথা জানতে চাইলে, উইং কমান্ডার জানান, তাঁরা অন্যত্র থাকেন। এর পর তাকে যৌন হেনস্থা করা হয়।
অভিযোগকারিণীর দাবি, তাকে ওরাল সেক্স করতে বাধ্য করা হয়। বাধা দিলেও ওই অফিসার তার কথা শোনেননি। তাকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে আসেন মহিলা উইং কমান্ডার। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানাতে গেলে তাকে বারণ করা হয়। কিন্তু তার পরেও তার সঙ্গে একই আচরণ করেন ওই উইং কমান্ডার। পরে অভিযোগকারিণী দুই মহিলা অফিসারকে বিষয়টি জানান। এর পর কর্নেল স্তরের এক আধিকারিক তদন্তের নির্দেশ দেন। নাম কা ওয়াস্তে তদন্ত শুরু হয়। বয়ান নথিভুক্ত করা হলেও আবেদন না জানানো পর্যন্ত তার মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়নি। কিন্তু অভিযোগ জানানোর পর থেকেই তাকে নানা রকম হেনস্থার মুখোমুখি হতে হয়। কখনও তার ছুটি বাতিল আবার কখনও তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখা সহকর্মীদের ভয় দেখানো হচ্ছে।