চণ্ডীগড়, ১৬ সেপ্টেম্বর: মুসলিম মেয়েদের স্কুল-কলেজে হিজাব পরা নিয়ে ২০২২ সালে কর্নাটকে বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল। মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। ২০২৪ সালে কাহিনির প্রেক্ষাপট আলাদা হলেও সেই ‘হিজাব’ ইস্যু তুলে বিতর্কের জন্ম দিল একটি হিন্দু ডানপন্থী সংগঠন। কর্নাটকের পর এবার হরিয়ানার সোনিপথ। রাজ্যের বাদৌলি গ্রামের একটি স্কুলে আয়োজিত নাটকে হিজাব পরা নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত। হিন্দু ডানপন্থী একটি সংগঠন হিজাব ইস্যু তুলে বিক্ষোভ দেখায়। গত বুধবার বাদৌলি গ্রামের সরকারি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে একটি নাটকের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল। সৌহার্দ্য ও ধর্মীয় সম্প্রীতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত এই নাটকে ছাত্রীদের হিজাব পরা নিয়ে যত উত্তেজনার সূত্রপাত। ছাত্রীরা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভূমিকায় নিজেদের পেশ করেন, ফলে তারা নানা ধরনের পোশাক পরেছিল। সেখানেই বেশ কয়েকজন ছাত্রী হিজাব পরে অভিনয় করেন। বুধবার স্বাভাবিকভাবে নাটক সম্পন্ন হলেও উত্তেজনা তৈরি হয় বৃহস্পতিবার। অনুষ্ঠানের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই ডানপন্থীরা রে-রে করে ওঠেন।
মনীশ রাই নিজেকে অখন্ড হিন্দু স্বাভিমান সংগঠনের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দিয়ে একদল গ্রামবাসীকে নিয়ে স্কুলে যান। যেখানে তারা অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। তাদের দাবি হিন্দু মেয়েরা কেনো হিজাব পরবে? স্কুলের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ, হিন্দু শিক্ষার্থীদের হিজাব পরিয়ে তাদের ধর্ম থেকে দূরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পুলিশকে ডাকা হয়।
স্কুলের একজন স্টাফ সদস্য জানিয়েছেন যে, বিক্ষোভকারীরা তাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে বলে দাবি করে অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের বদলির দাবি জানিয়েছেন ওই সংগঠনের সদস্যরা।
অধ্যক্ষ প্রবীণ গুলিয়া জানিয়েছেন, যে বিদ্যালয়টি শিক্ষা বিভাগের নির্দেশ অনুসরণ করে সম্প্রীতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত হিন্দু সংগঠনের চাপের মুখে বিদ্যালয় অধ্যক্ষ ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন। এই ধরনের অনুষ্ঠান আর স্কুলে আয়োজিত করা হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর উত্তেজনা থামে।
জেলা শিক্ষা আধিকারিক (সোনিপথ) জিতেন্দ্র কুমার বলেছেন যে নাটকটি কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্যে ছিল না, তিনি আশ্বাস দিয়েছেন যে এই ধরনের অনুষ্ঠান আর আয়োজন করা হবে না। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, ঘটনার একটি প্রতিবেদন তৈরি করে তিনি সরকারের কাছে শীঘ্রই একটি রিপোর্ট পাঠাবেন।