দেবশ্রী মজুমদার, বীরভূম, ১৬ সেপ্টেম্বর: দু’দিনের অতিবর্ষণে ভাঙলো বাঁধ কুঁয়ে নদীর। ফলে হুহু করে জল ঢুকছে বলরামপুর, কাঁদর কুলা সহ বিস্তীর্ণ এলাকায়। ত্রাণ সহ পরিদর্শনে হাজির হন স্থানীয় বিধায়ক অভিজিৎ সিনহা। রবিবার রাত আটটা নাগাদ ইলামবাজারের বাউড়ি পাড়ার মালতী মাল নামে বছর পঞ্চাশের এক মহিলা নাতিকে কোলে নিয়ে চপ মুড়ি খাচ্ছিলেন।
সেই সময় আচমকা বাড়ির দেওয়াল পড়ে তিনি গুরুতর আহত হন। তাঁকে প্রথমে ইলামবাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সিয়ান হাসপাতাল এবং পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার তিনি মারা যান। তবে তাঁর নাতি সুস্থ আছে। নানুরে মাটির বাড়ি ভেঙে জখম হয়েছেন চারজন। রবিবার রাতে নানুরের মুরুন্দি গ্রামে কাদু শেখ নামে এক ব্যক্তির বড় মাটির বাড়ি ভেঙে পরে। ঘটনায় আহত হন দুই নাবালক নাবালিকা সহ চারজন।
আহতদের মধ্যে ১৫ বছরের মেয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে কলকাতার পিজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ১৩ বছরের ছেলেকে ভর্তি করা হয়েছে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে। খবর পেয়ে সোমবার সকালে গ্রামে পৌঁছন জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ। তিনি আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। সেই সঙ্গে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করেন।
এছাড়াও দ্বারকা ও কোপাই নদীর জলস্ফীতির ফলে সিদ্ধপীঠ তারাপীঠের শশ্মান, বাজার ঘাট জলমগ্ন এবং সতীপীঠ বোলপুরের কঙ্কালিতলা মন্দিরের গর্ভগৃহে জল ঢুকেছে। দুপুরে সেখানে এক বুক জল ভেঙে মায়ের ভোগের ব্যবস্থা করা হয়। এদিন সেখানে বিডিও এবং প্রশাসনিক কর্তারা পরিদর্শনে যান।
জেলার সমস্ত নদীতে জলস্তর বাড়ছে। ব্রাহ্মণী নদীর জল বিপদসীমার উপরে বইছে। দেবগ্রাম ও বারুণিঘাটা কজওয়ে জলের তলায়। প্রশাসনের তরফে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা দুর্গতদের জন্য সমস্ত রকম সাহায্যের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সোমবার সকাল থেকে দ্বারকা নদীর দুই কূল ছাপিয়ে জল মহা শ্মশানে ঢুকে পরে। শ্মশানে এক হাঁটু জল। ফলে সকাল থেকে শবদাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বৈদ্যুতিন চুল্লিও বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে সমস্যায় পরেন মৃতের আত্মীয়রা।
অতি বৃষ্টির কারণে জলস্তর বেড়ে গিয়েছে বীরভূমের দ্বারকা, ব্রহ্মানী ও বাঁশলৈ নদীতে। নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন নদীতে থাকা ব্যারেজ থেকে দফায় দফায় জল ছাড়া হচ্ছে। সোমবার সকাল থেকে ব্রহ্মানী নদীর উপর থাকা বৈধরা জলাধার থেকে ৩,৯৪০ কিউসেক ও ব্রহ্মানী ব্যারেজ থেকে ৭০৯২ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। অন্যদিকে বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে বাঁশলৈ নদী।