পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: আরজি কর কাণ্ডে বৈঠক সদর্থক হয়েছে, এমনটাই জানালেন আন্দোলনকারি জুনিয়র চিকিৎসকেরা। আজ, সোমবার সকালেই রাজ্য সরকারের তরফে মুখ্য সচিব বৈঠকে বসার আহবান জানিয়ে প্রতিবাদী ছাত্রদের ই মেল করে কালীঘাটের বাসভবনে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে বিকেল ৫ টায় বৈঠকের কথা থাকলে ডাক্তাররা দীর্ঘক্ষণ নিজেদের মধ্যে আলোচনার কারণে বৈঠকের সময় পার হয়ে গেলেও সন্ধ্যা ৬. ৪০ নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী বাসভবনে পৌঁছে যান জুনিয়র চিকিৎসকেরা। অপেক্ষা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৈঠক শেষে বাসে ওঠার আগে চিকিৎসকের এক প্রতিনিধি জানান, বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা সদর্থক হয়েছে। তবে সমস্ত বিষয় নিয়ে এখনও পর্যন্ত সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হয়নি। পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল ও ডিসি নর্থের অপসারণের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে বৈঠক চললেও মিনিটস লেখার জন্য বেশ দীর্ঘক্ষণ সময় লেগে যায়। চিকিৎসকেরা নিজেদের তরফে দুই স্টেনোগ্রাফারকে নিয়ে গিয়েছিলেন, যারা এই মিনিটস বা কার্যবিবরণীর কাজ সমাপ্ত করেন। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর রাত পৌনে ১২টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে বের হন জুনিয়র চিকিৎসকেরা।
বিক্ষোভস্থলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ডাক্তারদের প্রতিনিধি দেবাশিস হালদার বলেন, “আন্দোলনকারীদের কাছে নতস্বীকার করল রাজ্য সরকার। ৩৮ দিন পর আমাদের জয়। এই জয় সাধারণ মানুষ, চিকিৎসক, নার্স সকলের। সবাই মিলে পাশে না থাকলে এই জয় সম্ভব ছিল না। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।” তিনি আরও বলেন, “আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত ধর্না বিক্ষোভ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেব না। সুপ্রিম কোর্টের শুনানির পর আমরা আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নেব। ”
এর আগে পর পর দুবার একবার নবান্ন ও পরবর্তীতে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে বৈঠক ঠিক হলেও সেটি চিকিৎসকদের দাবি অনুযায়ী ভিডিয়োগ্রাফি বা স্ট্রিমিংয়ের জন্য বাতিল হয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রী সেই সময় স্পষ্ট করে দেন, ভিডিয়োগ্রাফি বা স্ট্রিমিং সম্ভব নয়, কারণ এই মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন, তাই শীর্ষ আদালতের নির্দেশ না পেলে চিকিৎসকদের ওই দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
এর আজ ফের সকালে রাজ্য সরকারের তরফে বৈঠকে বসার আহ্বান জানানো হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন তাদের যে পাঁচ দফা দাবি সেখান থেকে তারা একচুলও সরবেন না। তারা স্পষ্ট করেন, সমঝোতা নয়, আলোচনা করতে যাচ্ছেন তারা। তারা ভিডিয়োগ্রাফি থেকে সরে এলেও মিনিটস বা কার্যবিবরণীর দাবি রাখেন। যা মেনে নেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো তারা নিজেদের দুই স্টেনোগ্রাফারকে মিনিটস বা কার্যবিবরণী লেখার জন্য সঙ্গে নিয়ে যান। দুপক্ষের থেকে কার্যবিবরণী লেখার পর, সেটি উভয় পক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
আগামীকাল ১৭ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি। তার আগে মুখ্যমন্ত্রীর এই অচলাবস্থা কাটানোর প্রয়াসকে রাজ্যবাসী সদর্থক দিক বলেই দেখছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগ নিয়ে খুশি নির্যাতিতার বাবা ও মা। তারা রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।