হাভানা, ২০ সেপ্টেম্বর: ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে ক্যরিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ কিউবা। আমেরিকার বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞার কারণে নিত্যপণ্য আমদানিতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটি। আগের যেকোনও সময়ের চেয়ে কিউবায় খাদ্যসংকট তীব্র হয়েছে। সম্প্রতি, সরকারি এক সিদ্ধান্তে রেশনের রুটির আকার ছোট করা হয়েছে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের হাতের তালুর চেয়েও ছোট একেকটি রুটি। চাল তো দুষ্প্রাপ্য। আর তেল ও কফি পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও। ৫৭ বছর বয়সী রোসালিয়া টেরেরো রাজধানী হাভানার একটি দোকানে কাজ করেন। সেখানে ভর্তুকির খাবার বিক্রি করা হয়। তিনি বলেন, ‘অনেক মানুষ পানিতে চিনি মিশিয়ে খেয়ে ঘুমাতে যাচ্ছেন।’ রোসালিয়ার পরিবারেরই সাত সদস্য প্রতিদিন এক টুকরা করে ভর্তুকির রুটি খেয়ে বেঁচে থাকছেন। কিউবা সরকার রেশনের রুটির ওজন ৮০ গ্রাম থেকে কমিয়ে ৬০ গ্রাম নির্ধারণ করেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পেট ভরার জন্য ওইটুকু রুটি যথেষ্ট নয়।’ কমিউনিস্ট–শাসিত কিউবায় মাত্র তিন বছর আগে বেসরকারি দোকান চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে দোকানগুলি থেকে বেশিরভাগ মানুষ খাবার কেনার সামর্থ্য রাখেন না। আবার কিছু সরকারি দোকান আছে, যেখানে ভর্তুকির খাবার পাওয়া যায় না। এসব দোকানে শুধু বৈদেশিক মুদ্রা গ্রহণ করা হয়। সরকারি তথ্যানুযায়ী, দ্বীপরাষ্ট্রটিতে প্রতি মাসে রুটি উৎপাদনের জন্য ৩ হাজার ৩০০ টন গমের প্রয়োজন। কিন্তু গত জুলাই ও আগস্টে দেশটি এ চাহিদার মাত্র এক-তৃতীয়াংশ জোগাড় করতে পেরেছে। চলতি মাসের জন্য জোগাড় হয়েছে মাত্র ৬০০ টন। গত ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের সঙ্গে লড়ছে কিউবা। দেশটিতে বর্তমানে মূল্যস্ফীতির হার আকাশচুম্বী। একজন মানুষের গড় মাসিক আয় মাত্র ৪২ ডলার। কিউবার লিনোরকা মন্টেনিগ্রো (৫৫) একজন গৃহিণী। তিনি হাভানার একটি রেশনের দোকানে দাঁড়িয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলছিলেন। চার সন্তানের মা লিনোরকা বলেন, ‘আমার ফ্রিজ একেবারেই খালি, সেখানে কিছুই নেই।’ লিনোরকা জানান, ভর্তুকি মূল্যে পাঁচ পাউন্ড চাল ও দুই পাউন্ড চিনি সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছেন।