বেইরুট, ২২ সেপ্টেম্বর: গাজায় গণহত্যা ও লেবাননে ‘সন্ত্রাসী’ হামলার বদলা নিতে ইসরাইলের ‘সবচেয়ে গভীরে’ আঘাত হানল লেবানিজ সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ। এসব হামলায় ইসরাইলের হাইফা জেলার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শনিবার রাতে উত্তর ইসরাইলের হাইফা শহরের পূর্ব দিকের রামাত ডেভিড বিমান ঘাঁটি লক্ষ্য করে কয়েক ডজন রকেট মারে হিজবুল্লাহ। হামলার কথা নিশ্চিত করে ইরান সমর্থিত সংগঠনটি জানায়, ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানাতে এবং লেবাননের অসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে চালানো সাম্প্রতিক হামলার জবাবে পালটা হামলা চালিয়েছে তারা। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এদিন হামলা চালাতে ফাদিয়া-১ ও ফাদিয়া-২ রকেট ব্যবহার করা হয়েছে। এ হামলার জেরে রবিবার মধ্যরাতে উত্তর ইসরাইলজুড়ে সাইরেন বেজে ওঠে। উত্তর ইসরাইলে মানুষের চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। ইসরাইলের সেনাবাহিনী লেবানন থেকে ১০টি রকেট ছোড়ার কথা জানিয়েছে। এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ লেবাননজুড়ে হিজবুল্লাহর বিভিন্ন অবস্থানে ৪০০টি বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। হিজবুল্লাহর সম্ভাব্য হামলা ব্যর্থ করতেই এসব হামলা চলেছে। গাজা যুদ্ধ শুরুর পর ইসরাইলি বাহিনী ও হিজবুল্লাহর মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় সংঘাতের ঘটনা। এক বিবৃতিতে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, হুমকি মোকাবিলায় দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে ব্যাপক হামলা চালানো হয়েছে। হামলায় অনেকগুলো যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হয়েছে। লেবাননের সংবাদমাধ্যমও জানিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা থেকে দক্ষিণ লেবাননে বড় ধরনের বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি যুদ্ধবিমান। এর আগে শুক্রবার ১৫০টি রকেট দিয়ে ইসরাইলের সীমান্ত এলাকায় হামলা চালায় হিজবুল্লাহ। এদিকে পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ বেধে যাওয়ার আশঙ্কায় নিজ দেশের নাগরিকদের লেবানন ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। উল্লেখ্য, গত মঙ্গল ও বুধবার লেবাননে হিজবুল্লাহ সদস্যদের হাতে হাতে থাকা ৩ হাজার পেজার ও ওয়াকিটকিতে একযোগে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। লেবানন সরকার ও হিজবুল্লাহর দাবি, বৈদ্যুতিক বার্তার মাধ্যমে এ বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে ইসরাইল। ২ দিনের বিস্ফোরণে সাধারণ মানুষসহ সশস্ত্র গোষ্ঠীটির ৩৭ জন নিহত হয়। আহত প্রায় ৫ হাজার। এরপর গত শুক্রবার লেবাননের রাজধানী বেইরুটের দক্ষিণের শরতলিতে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় ইসরাইল। এতে হিজবুল্লাহর এক শীর্ষ কমান্ডারসহ অন্তত ৩৮ জন নিহত ও কয়েক ডজন আহত হন।